“আমার একটাই দাবি, আমার স্বামীকে যতটুকু কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ততটুকু কষ্ট দিয়ে ওর বিচার করা হোক।”
Published : 10 Jun 2024, 07:45 PM
রাজধানীর বারিধারার ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হকের দাফন তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার আটপাড়ার বিষ্ণুপুরে সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে গ্রামের ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মনিরুলের দাফন সম্পন্ন হয়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে মনিরুলের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সকালে বিষ্ণুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ২৭ বছর বয়সী মনিরুলের স্ত্রী তানিয়া আক্তার তন্বী দুই বছরের শিশুসন্তান তাকিকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছেন।
মনিরুলের মা দেলোয়ারা হক ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কাঁদছেন মনিরুলের বড় ভাই আমিনুল হক মিঠু। মনিরুলের দুই বছর বয়সী ছেলে তাকি কিছুই বুঝতে পারছে না।
শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন প্রতিবেশী ও স্বজনরা। কারো মুখে কোনো ভাষা নেই। অনেকের চোখে জল।
বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শামসুল হকের ছেলে মনিরুল। তারা তিন ভাই ও তিন বোন। সবার ছোট মনিরুল।
মনিরুলের স্ত্রী তন্বী কান্না ভরা কণ্ঠে বলেন, “আমার স্বামীকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আমি তার সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি। তার বিচার হলে আমার আত্মা শান্তি পাবে। আমি আর কোনোকিছু চাই না। আমার একটাই দাবি, আমার স্বামীকে যতটুকু কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ততটুকু কষ্ট দিয়ে ওর বিচার করা হক। আমি আর কিছু চাই না।”
এদিকে প্রতিবেশী আজহারুল ইসলাম তুহিন বলেন, “মনিরুল সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন। তিনি খুবই মিশুক ধরনের ছিলেন। পরিচিত ও বন্ধু-বান্ধবসহ সবার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। সবার প্রিয় এই মানুষটির এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।”
আব্দুর রহমান বলেন, “আমরা মনিরুলের ঘাতকের দ্রুত বিচার আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।”
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারার ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত হন পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হক।
মনিরুলের বড় ভাই মাহবুব আলম টিটুও পুলিশের একজন সদস্য। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত।
আমিনুল হক মিঠু বলেন, ২০১৪ সালে নেত্রকোণার আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ থেকে এসএসসি পাশ করেন মনিরুল। পরে ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে চতুর্থ সেমিস্টার পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
“এর মধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন মনিরুল। চাকরিতে থাকা অবস্থায় তিন বছর আগে জেলার পূর্বধলা উপজেলায় বিয়ে করেন তিনি।”
আটপাড়া থানার ওসি তাওহীদুর রহমান বলেন, পুলিশ মনিরুলের পরিবারের পাশে থাকবে। ঘাতকের বিচার নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করবে।