পুলিশ পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার বলেন, “পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ঘটনাটি পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।”
Published : 26 Oct 2024, 12:48 PM
নাটোরের গুরুদাসপুরে এক হোটেল ব্যবসায়ীর কাছে চাল বিক্রির পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত দশজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার মধ্যমপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানান গুরুদাসপুর থানার পরিদর্শক মো. গোলাম সারোয়ার হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মধ্যমপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বুধবার বিকালে মারপিটের শিকার হন স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী রিজভী আহমেদ রাকিব এবং তার সঙ্গে থাকা শাকিল আহমেদ ও ইমদাদ আলী।
এদের মধ্যে আলমগীর মধ্যমপাড়ার আওয়ামী সমর্থক সাবেক কমিশনার মোখলেস রহমানের ভাগিনা ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে শাকিল আহমেদ পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক এবং রিজভী আহমেদ রাকিব বিএনপির কর্মী।
বুধবারের ঘটনার জের ধরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মধ্যমপাড়া ব্রিজ এলাকায় আলমগীর ও তার সঙ্গে থাকা জাহিদুলের উপর লাঠি-সোঠা নিয়ে আক্রমণ চালায় শাকিল, ইমদাদসহ ১০ থেকে ১৫ জন।
তখন আলমগীর ও জাহিদুল দৌড়ে বাড়ি চলে যায়। এরপর তারা সংগঠিত হয়ে ফিরে এলে আলমগীরদের বাড়ির সামনে (মধ্যমপাড়া ব্রিজ থেকে আধা কিলোমিটার দূরে) দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের সবার বাড়িই মধ্যমপাড়া এলাকায়।
এর মধ্যে বিএনপির আহতরা হলেন- আব্দুল হামিদের ছেলে শাকিল আহমেদ (২২), মৃত গফুর প্রামাণিকের ছেলে মিলন প্রামানিক (৪০), সাইফুল ইসলামের ছেলে সাব্বির (১৯), জাহিদের ছেলে জনি (২২), ইমরানের ছেলে শামীম (৩৮) ও সাইফুল (৪২)।
আওয়ামী লীগের পক্ষের আহত হয়েছেন জাহাঙ্গীর, জাহিদুল, অমি, মেহেদীসহ তিন গৃহবধূ।
আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত শাকিলসহ পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাব্বির ও শামীমকে।
অন্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে সংঘর্ষের পর বিএনপির বিক্ষুদ্ধ সমর্থকেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা ফিরে আসেন।
গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শেখ বলেন, “মোখলেস কমিশনার, জাকির সোনার, আলমগীর, জাহাঙ্গীরসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে পৌর ছাত্রদলের নেতা শাকিলসহ বিএনপি সমর্থকদের গুরুতর আহত করেছে।
“আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই ও উপযুক্ত বিচার চাই। আমরা দলের নেতাকর্মীদের শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি এবং এটা অব্যহত রেখেছি। এরমাঝে এমন নৃশংস হামলা চালানো হলো, এ হামলার উপযুক্ত বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও মোখলেস রহমান ও আলমগীরের বক্তব্য জানা যায়নি।
ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করা পুলিশ পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ঘটনাটি পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আহতরা রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।”
এখনও কোনো মামলা হয়নি, কোনো গ্রেপ্তারও নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান, পুলিশের ওই কর্মকর্তা।