“মেধাভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছি।”
Published : 14 Jul 2024, 03:42 PM
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয় মিছিলটি। পরে সেখানে সংহতি সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক সংহতি জানান।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে আমি সংহতি জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নির্বাহী বিভাগের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি, শিক্ষার্থীদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে৷ রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে পরিশ্রম করে শিক্ষার্থীরা যা করছে, তা রাষ্ট্রের মঙ্গলের জন্যই করছে৷
“একটি দক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখতে গেলে মেধাবীদের দরকার; কর্মক্ষেত্রে যদি মেধাবীরা বঞ্চিত হয় তাহলে তা দক্ষ জনশক্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ আমরা প্রত্যশা করি নির্বাহী বিভাগ আমাদের কথা শুনবে, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাবে৷”
এসময় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখে মনে হচ্ছে তারা ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও ৬৯’র গণভ্যত্থানের উত্তরসূরী। কোটার উদ্দেশ্য বৈষম্য সৃষ্টি করা নয় বরং বৈষম্য নির্মূল করা৷
“কিন্তু এখন কোটার মাধ্যমে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে৷ তার চেয়ে বড় কথা কোটার মধ্য দিয়ে পুরো দেশকে মেধাশূন্য করা হচ্ছে৷
সুতরাং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুধুমাত্র চাকরির আন্দোলন নয়, দেশ রক্ষার আন্দোলন৷”
সংহতি জানিয়ে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে যে বৈষম্য তৈরি করার পায়তারা করছেন তা বন্ধ করুন। মেধাভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছি।”
সমাপনী বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ বলেন, “আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, মামলা দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
“পাশাপাশি যারা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”