অধ্যক্ষ জানান, ১৫ বছর ধরে পৌষ সংকান্তি শেষে লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে।
Published : 18 Jan 2025, 05:22 PM
প্রকৃতিতে শীত এলে পিঠা-পুলির স্বাদ আস্বাদনে মেতে ওঠা আবহমান বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্যর সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে লক্ষ্মীপুরে আয়োজন করা হয়েছে পিঠা উৎসবের।
শনিবার সকালে লক্ষ্মীপুর শহরের বাগবাড়িতে জমকালো এ উৎসবে নানা স্বাদের দুই শতাধিক পিঠার সমাহার ঘটিয়েছেন ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার।
তিনি বলেন, “যে দেশের মানুষ তার ইতিহাস ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ভুলে যায় তারা কখনো বড় হতে পারে না। তারা কখনো উন্নত জাতি হতে পারে না, তারা কখনো উন্নত দেশ গঠন করতে পারে না।
“নতুন প্রজন্মকে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শেকড়কে মনে করিয়ে দিতে পিঠা উৎসব ভূমিকা রাখবে। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে।”
উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সম্রাট খীসা ও লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল।
অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জানান, ১৫ বছর ধরে পৌষ সংকান্তি শেষে মাঘের শুরুতে লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। এবারও শহরের বাগবাড়ি এলাকায় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে শতাধিক স্টলে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
এসব স্টলে থাকা পিঠার মধ্যে রয়েছে, পুলি, দুধপুলি, রসচিতই, জামাই, ভাপা, চিতই, দুধচিতই, ছিট, দুধফুলি, ক্ষীরকুলি, তিলকুলি, পাটিসাপটা, মালাই পাটিসাপটা, সিরিঞ্জ, ফুলঝুড়ি, ধুপি নকশি, মালাই, মালপোয়া, পাকন, ডালপাকন, রসগোল্লা, ঝাল, পাকুরি, পানতুয়া, নারিকেলসহ বাহারি নাম-নকশার নানা স্বাদের পিঠা।
এছাড়া স্টলগুলোর নামও আকর্ষণীয়। এরমধ্যে সুকন্যাদের পিঠার দোকান, পিঠা পুলির সমাহার, পৌষালী সমাহার, পিঠার রসায়ন, চিতই কুটুম, গ্রামীণ পিঠার রসনা, আইয়ুন পিঠা খাইয়ুন, নিকুঞ্জ পিঠাঘর, রাঙা প্রভাত পিঠাঘর, হিমানী তলা পিঠাঘর, পৌষ পার্বণ মেলা ও সপ্তরঙিন পিঠা পুলির আসরসহ নানান নামের দোকানে আকর্ষিত হচ্ছে পিঠাপ্রেমীরা।
একটি স্টলে থাকা অভিভাবক তামান্না আক্তার বলেন, “শীত আসলে আমরা আগে দাদি-নানিদের দেশীয় বিভিন্ন পিঠা বানাতে দেখেছি। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নতুন প্রজন্ম এটি এখন ভুলতে বসেছি।
“ভেজালমুক্ত ধানের চাল গুড়া, খেজুরের মিঠাই, নারিকেল, দুধ, ময়দা, সুজিসহ বিভিন্ন দিয়ে পিঠা তৈরি করা হয়। এতে স্বাদ-ঘ্রাণ অতুলনীয় হয়ে উঠে। মিষ্টি পিঠাগুলোর স্বাদ যেন মুখে লেপ্টে থাকত।”
নাঈমা আক্তার নামে এক তরুণী জানান, পিঠা উৎসবের আয়োজনটি দারুণ ছিল। এমন আয়োজন শিক্ষার্থীদেরকে বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সামনে এনে দেয়। এসব দেখে শিক্ষার্থীরা পিঠা তৈরি ও খাওয়ার জন্য উৎসাহী হয়।
প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজ বলেন, “উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই পিঠাপ্রেমীরা আমাদের স্টলগুলোর সামনে ভিড় জমান। এমন আয়োজনে পিঠাপ্রেমীদের সাড়া আমাদেরকে আরও বেশি উদ্ভুদ্ধ করে।”