জাবিতে নেতাকে মারধরের জেরে অস্ত্রসহ ছাত্রলীগের দৌড়ঝাঁপ

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিক হামলার শিকার হন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2023, 07:24 PM
Updated : 22 March 2023, 07:24 PM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের জেরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে টহল দিয়েছেন দুটি হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

বুধবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

অন্যদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনের সড়কে দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান নেন ওই হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

এ সময় তাদের হাতে রড, রামদা, লাঠি বহন করতে দেখা যায়।

মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের বাধা দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বটতলা এলাকায় মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের দিকে রড নিয়ে তেড়ে যান নেতা-কর্মীরা। সেখানে দুজন সাংবাদিক হামলার শিকার হন।

তারা হলেন, ডিবিসি অনলাইনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও একুশে টিভি অনলাইনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ।

মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় বটতলা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একদল শিক্ষার্থী মারধর করেন। এর জের ধরেই তারা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাচ্ছিলেন।

বটতলা এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তবে মীর মশাররফ হোসেন হলের উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন উপস্থিত হন।

আকতারুজ্জামান সোহেল সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তাই ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের ‘মহড়া’ দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব।”

প্রক্টরের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, “আজকের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। আমরা এই ধরনের ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেই। এক্ষেত্রেও সেটি করা হবে। এর বাইরে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।”

এর আগে সাভারের সুলতান ডাইনস রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে গত রোববার (১৯ মার্চ) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে মারধর করা হয়। 

এ ঘটনায় বাংলার শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব, প্রাণিবিদ্যার তানভীর ইসলাম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাব্বির হাসান সাগর ও খালিদ হাসানসহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাহফুজুর। এ ঘটনায় পক্ষের ও বিপক্ষের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।