“ভবিষ্যতের যে নির্বাচনগুলো আসছে- দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ধাপ, তা আগের চেয়ে কিন্তু বেশি ভালো করতে হবে।”
Published : 16 May 2024, 09:16 PM
উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের অন্য কারো উপর ভর না দিয়ে ‘জনগণের ভালোবাসার’ উপর ভর করতে বলেছেন নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান।
প্রার্থীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “মানুষ হিসাবে যে আমরা শ্রেষ্ঠ সে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হবে। জনগণের সেবক হতে হবে। কারোর উপর ভর না দিয়ে জনগণের ভালোবাসার উপর ভর করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা নিয়ে যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব।
যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্মকর্তাদের এ মতবিনিময়ে প্রধান অতিথি ছিলেন মো. আহসান হাবিব খান।
সভা শেষে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রথম দফার নির্বাচনে গড়ে ৩৬ শতাংশ ভোটার এসেছেন। এটা আমি এই সময়ে কম বলবো না। এটা গ্রহণযোগ্য। এক শতাংশ আসলেও এটা গ্রহণযোগ্য, কিন্তু এটা আমরা মোটামুটি দাগে গ্রহণ করতে পারিনি।”
ভোটার কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “তিনটা কারণে এবার ভোটার সংখ্যা কম ছিল। এক নম্বর হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দল বা কয়েকটা দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি। আর একটা কারণ হচ্ছে এই টাইমে ছিল ধান কাটা মৌসুম, আর একটা হচ্ছে সেই দিনই ছিল বর্ষা।
“আর এটাও হতে পারে আমার মনের প্রার্থী আসে নাই- আমি যাকে চাই সে দাঁড়ায় নাই সে জন্যে আমি যাই নাই। অনেক কিছু হতে পারে।”
আহসান হাবিব খান আরও বলেন, প্রার্থীদেরও দায়িত্ব ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনা। আবার যারা প্রতিহত করছে (ভোটারদের কেন্দ্রে আসা), আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব ওই রাস্তা ক্লিয়ার রাখা, যেন প্রতিহত না করতে পারে।”
মতবিনিময় সভার আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের (প্রার্থীদের) কিছু অনুযোগ-অভিযোগ ছিল, পরবর্তীতে আমাদের নির্বাচন কর্মকর্তারা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা, প্রশাসন এবং সকলেই তাদেরকে শতভাগ আশ্বস্ত করতে পেরেছেন এবং তারা খুশি মনে ফিরে গেছেন।”
নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সভায় বলেছি আমাদের ভবিষ্যতের যে নির্বাচনগুলো আসছে- দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ধাপ, তা আগের চেয়ে কিন্তু বেশি ভালো করতে হবে। ফিরে তাকানোর কোনো সুযোগ নাই। সুতরাং কারোর মাথার মধ্যে যদি কিছু থাকে আমি তা দূর করে দিতে বলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি-আইনের হাত-ক্ষমতা অনেক বেশি। সেই ক্ষমতা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। কোনো ছাড় নাই।”
পরে বিকালে যশোরের শার্শা উপজেলা কমপ্লেক্স অডিটরিয়ামে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান শার্শা উপজেলায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদেরকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “সামনের নির্বাচনগুলো আগের থেকে আরো স্বচ্ছ ও ভালো হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আইন প্রয়োগে কঠোর হবে। কোনো ছাড় হবে না।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক যশোর ও রিটার্নিং অফিসার এস এম শাহীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার যশোর প্রলয় কুমার জোয়ারদার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা খুলনা মো. হুমায়ুন কবির, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আনিছুর রহমান, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশীসহ ১১২ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।