‘আমাকে বাঁচান,’ শেকলে বাঁধা তরুণের আর্তি

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাকে ছেড়ে দিতে বলেছেন। আর উপজেলা প্রশাসন তার খোঁজ নেবে বলে জানিয়েছে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 06:38 AM
Updated : 10 August 2022, 06:38 AM

বরগুনায় এক ব্যক্তিকে শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। জমি আত্মসাতের জন্য ভাই তাকে পাগল আখ্যা দিয়েছেন বলে অভিযোগ।

জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বেতমোর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রিংকল হাওলাদার (৩২) নামে এই ব্যক্তিকে একটি টিনশেডে শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। যেখানে খাওয়াদাওয়া সেখানেই মলমূত্র ত্যাগ করতে হয় তাকে। নেই গোসলের ব্যবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, ক্রিংকলের জমিজমা দখলে রাখতে এক বছর ধরে তার বড় ভাই সঞ্জয় তাকে পাগল আখ্যা দিয়ে শেকলে বেঁধে নির্যাতন করে আসছেন। তাকে খাবারের উচ্ছিষ্ট দেওয়া হয়।

ক্রিংকল সাংবাদিকদের দেখে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, “আমি পাগল নই। মিথ্যা কথা বলে এভাবে আমার ভাই আমাকে বেঁধে রেখেছে। বড় ভাই সঞ্জয় আমার সম্পত্তি ভোগদখল করার জন্য আমাকে মেরে ফেলতে চায়। আমাকে বাঁচান।”

রায়হানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মঈনুল ইসলাম বিষয়টির খোঁজখবর নিয়েছেন। ক্রিংকলকে তার অসুস্থ মনে হয়নি বলে তিনি জানান।

চেয়ারম্যান বলেন, “যতটুকু জানতে পেরেছি ক্রিংকল স্বাভাবিক ও সুস্থ। আমি ক্রিংকলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি।”

ক্রিংকলের বাবা কুঞ্জ হাওলাদার বৃদ্ধ। তিনি ঠিকমত হাঁটাচলা করতে পারেন না।

তিনি বলেন, “ছেলেটা অসুস্থ। ওর চিকিৎসা করানো দরকার।”

ক্রিংকলের বড় ভাই সঞ্জয় কুমার হাওলাদার জমি দখলচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ক্রিংকলকে অসুস্থ বলে দাবি করেন তিনি।

সঞ্জয় বলেন, “অন্য কোনো কারণে নয়, পাগলামি বাড়লেই কেবল তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেঁধে রাখা হয়।”

চিকিৎসা না করিয়ে কেন শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে সঞ্জয় কোনো উত্তর দেননি। প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যান তিনি।

পাথরঘাটার ইউএনও সুফলচন্দ্র গোলদার জানান, বিষয়টি জেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন তিনি।