হামলাকারীরা প্রথম আলোর কার্যালয় লক্ষ্য করে বড় বড় পাথরের টুকরা নিক্ষেপ করে।
Published : 26 Nov 2024, 04:43 PM
রাজশাহীর পর দৈনিক প্রথম আলোর বগুড়া কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়কের দোতলা ভবনে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হামলা চালানো হয় বলে বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন জানান।
পুলিশ বলছে, আটটি মোটরসাইকেলে এসে হামলাকারীরা এ হামলা চালায়। সঙ্গে করে আনা ব্যাগ ভর্তি পাথরের টুকরা নিক্ষেপ করে প্রথম আলোর কার্যালয় ভাঙচুর করে।
হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে এবং নিজের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশকে জানানো হলেও তারা নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রথম আলোর বগুড়ার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার পারভেজ।
হামলায় প্রথম আলো কার্যালয়ের ‘পুরু কাঁচের দেয়াল’ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কারও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আনোয়ার পারভেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সাধারণত রাত ১১টা পর্যন্ত অফিসে থাকি। কিন্তু হামলার আশঙ্কায় সোমবার পৌনে ৯টার দিকেই বাসায় চলে যাই। পরে জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফোন করে জানান যে, আমাদের অফিসে হামলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ছুটে যাই।”
হামলাকারীদের শনাক্ত করতে রাতেই সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেখানে দেখা গেছে, সোমবার রাত ১০টা ৩৩ মিনিটে আটটি মোটরসাইকেলে করে প্রায় ২২-২৪ জন ব্যক্তি প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে এসে থামেন। মোটরসাইকেল থেকে নেমেই তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে বড় বড় পাথরের টুকরো ছুঁড়তে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক ছিল।
প্রথম আলোর কার্যালয়ের নিচতলায় ‘জুসবার’ নামের একটি দোকানের কর্মী ইমন বলেন, “হামলাকারীরা বয়সে তরুণ। তাদের মুখে মাস্ক পরা ছিল। দুই মিনিটের মধ্যে প্রথম আলোর অফিসে হামলা-ভাঙচুর করে চলে যায়।”
রাজশাহীতে প্রথম আলো কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভাঙচুর
জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডোনিস তালুকদার বলেন, “প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার সময় রেজাউল বাকী সড়কে ‘প্রচুর লোকজনের’ আনাগোনা ছিল। কিন্ত কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা ভাঙচুর চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি প্রথম আলোর কর্মীদের জানানো হয়।”
সাংবাদিক আনোয়ার পারভেজের বলেন, “রোববার থেকেই হামলা বগুড়া অফিসে হামলার একটা আশঙ্কা করছিলাম। এ নিয়ে আমরা আতঙ্ক আর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। এ কারণে পুলিশ সুপার এবং সদর থানার ওসি দুজনকেই অবগত করেছিলাম।”
তার অভিযোগ, “পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতাও করেনি, নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।”
ওসি মঈনুদ্দিন বলেন, “হামলাকারীদের শনাক্ত করতে ‘জোর চেষ্টা’ চ্লছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা প্রথম আলোসহ অন্য সংবাদমাধ্যমের অফিসগুলোত নজরদারিতে রেখেছি।”
হামলার আশঙ্কা থাকার পরও কেনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আগে থেকেই ‘সতর্ক’ ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ঘটনাটি ঘটে গেল।”