অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল তা ধাক্কা খেয়েছে বলেন তিনি।
Published : 18 Jan 2025, 11:51 PM
আওয়ামী লীগ যদি আবার ফিরে আসে তবে ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে। কাজেই আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া যাবে না।
শনিবার সন্ধ্যায় নীলফামারীর জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণ সমাবেশে এ কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
চব্বিশের আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডাকা সমাবেশে তিনি বলেন, “বিএনপি, জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর যার যার কর্মসূচি থাকবে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমাদেরকে এক বিন্দুতে থাকতে হবে।
“আওয়ামী লীগের প্রশ্নে কোনো আপস করা যাবে না। আওয়ামী লীগ যদি আবার ফিরে আসে ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে। পঁচাত্তরে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ছিয়ানব্বইয়ে ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। এসে কি প্ল্যান-পরিকল্পনা করেছিল আপনারা দেখেছেন।
“ভারতে সহযোগিতায় ২০০৮ সালে আর একটি ‘নীল নকশা’ নিয়ে ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে দেশকে ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত করেছিল। যার ফলে কাঁটাতারে ফেলানীরা ঝুলেছিল, সীমান্তে প্রতিনিয়ত লাশ পড়েছিল, নিজ দেশে পারাধীন ছিলাম। তাই আওয়ামী লীগ যদি আবার ফিরে আসে এর চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হবে।”
জাতীয় সরকার গঠন করা হলে দেশে কোনো সংকট তৈরি হত না মন্তব্য করে নুর বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটা ধাক্কা খেয়েছে। আমরা ভেবে ছিলাম এই সরকারের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় সরকার হবে। যেখানে গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী দলের প্রতিনিধি থাকবে।
“কিন্তু দুঃখজনক। ইউনূস স্যার রাজনীতিবিদদেরকে... অবশ্য কোনো কোনো দল জাতীয় সরকার গঠনে আপত্তি তুলেছিল যে; তা দরকার নাই, আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কয়েক মাস থেকে দ্রুত নির্বাচন দেন। কারণ তারা হয়ত মনে করেছেন, দ্রুত নির্বাচন দিলেই ক্ষমতায় চলে আসতেছি। কাজেই ক্ষমতার ভাগ আর কাউকে দেওয়ার দরকার কি।
“কিন্তু দেশের যে সংকট এই সংকট মোকাবেলায় এই দেশের জন্য, জাতির জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন ছিল জাতীয় সরকার। জাতীয় সরকার মানে আন্দোলনকারী দলসহ সব দলের প্রতিনিধি। তাহলে আজকে এই সংকট তৈরি হত না।”
অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না মন্তব্য করে সাবেক ভিপি বলেন, “প্রশাসনকে শক্তিশালী ও সহযোগিতা করতে হবে। কেননা এই সরকারের ব্যর্থতার উপর নির্ভর করবে আগামী জাতির ভবিষ্যৎ। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পাই যে, তারা আগের মত কেউ আওয়ামী লীগ নিয়ে চলছে।
“তারা আইনের তোয়াক্কা না করে একটা দলীয় ভূমিকায় আবার অবতীর্ণ হতে চায়। প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই; প্রশাসনে যারা দলবাজি করবেন তারা চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করুন। প্রশাসনে কোনো দলবাজি চলবে না।”
গণ অধিকার পারিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. সোহাগ হোসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও মুখপাত্র মো. ফারুক হাসান বক্তব্য দেন। সমাবেশ উদ্বোধন করেন গণ অধিকার পরিষদ জলঢাকা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. তাইজুল ইসলাম।