“ইউপি চেয়ারম্যানের কথায় আমি স্কুল বন্ধ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি।”
Published : 24 May 2024, 02:18 PM
তৃতীয় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেনী সদর উপজেলা লেমুয়া ইউনিয়নের কেরনিয়া শহীদ স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে স্কুল মাঠে সমাবেশ করার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সকালে ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারের অংশ হিসেবে স্কুল মাঠে প্যান্ডেল করে সমাবেশ করেন বলে জানা গেছে।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ফেনী সদর উপজেলায় ২৯ মে ভোট গ্রহণ হবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেরনিয়া শহীদ স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্যান্ডেল করে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে নারী সমাবেশে নির্বাচনি প্রচার চালান ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান ও প্রার্থী শুসেন চন্দ্র শীল (দোয়াত-কলম), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী এ কে শহীদ খন্দকার (টিউবওয়েল) ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুর্শিদা আক্তার (কলস)।
প্রতিদিনের মতো ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সকালে স্কুলে আসেন। তখন লেমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ উদ্দিন নাসিম ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিল্পী রানী ঘোষকে স্কুল বন্ধ করে ছুটি দিয়ে সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছুটি দিয়ে প্রধান শিক্ষক বাড়ি চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শিল্পী রানী ঘোস বলেন, “ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের স্কুল বন্ধ করে চলে যেতে বলেন। তার কথায় আমি স্কুল বন্ধ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া বিদ্যালয় মাঠে উচ্চস্বরের মাইক ব্যবহার হলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান (ক্লাস নেওয়া) করা সম্ভব নয়।”
লেমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ উদ্দিন নাসিম বলেন, কেরনিয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের ট্রেনিং চলায় বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধ ছিল। এজন্য মাঠে মহিলা সমাবেশের আয়োজন করা হয়।”
স্কুল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা বেগম প্রথমে বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না, প্রধান শিক্ষকও আমাকে কিছু জানান নাই।”
কিছুক্ষণ পর তার সঙ্গে আবার যোগোযোগ করা হলে বলেন, “স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বন্ধ করতে পারেন না। প্রধান শিক্ষক কেন আমাদের বিষয়টি তখন জানালেন না; কেন ছুটি দিয়ে বন্ধ করে চলে গেলেন সে জন্য ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্কুল বন্ধ করে নির্বাচনি সমাবেশ করার ঘটনাটি ফেনী সদর উপজেলা নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (কুমিল্লা অঞ্চল) মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের কানে গেছে বলে জানান।
তিনি বলেন, “আমি ঘটনাটি শোনার পর খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ফেনী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলছেন, “নির্বাচনি বিধিমালা অনুযায়ী, স্কুল বন্ধ করে সমাবেশ করা যায় না। তাছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচনি সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ দুপুর ২টার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করতে পারে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই।”
ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন করে মোট ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রার্থীদের প্রচার শেষ হবে ২৭ মে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ফেনী সদর ছাড়াও সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।