“একটি চাইনিজ কুড়ালের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। কিছু সন্দেহজনক কক্ষে অভিযান চালিয়ে সেখানে কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়েছি। কিন্তু কোনো বহিরাগতদের হলে পাওয়া যায়নি।"
Published : 14 May 2024, 02:43 PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের এক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সোমবার রাতে মাদার বখশ ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের মধ্যবর্তী রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র রামদা, রড ও ইট-পাটকেল নিয়ে জড়ো হন।
ওই ঘটনার পর রাত সোয়া তিনটার দিকে হল প্রশাসন ও পুলিশ সোহরাওয়ার্দী হলে তল্লাশি চালায়। অভিযান শেষে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহসভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, “হলে যাওয়ার সময় গেইটে হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ ও তার অনুসারীদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। ওই সময় তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিতে থাকেন। এমনকি আমার পা ভেঙে হত্যার হুমকিও দেয়।
“পরে বিষয়টি জানালে নেতা-কর্মীরা হলের সামনে জড়ো হন।"
সরেজমিনে দেখা যায়, মাদার বখশ ও সোহরাওয়ার্দী হলের মধ্যবর্তী রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন।
এক পক্ষের এই উত্তেজনা ও অস্ত্রশস্ত্র দেখে কয়েক গাড়ি পুলিশ এবং পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের (ডিবি) সদস্যরা সেখানে যান।
খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ প্রশাসক প্রণব কুমার পান্ডে, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে যান।
এরপর রাত সোয়া তিনটার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান এবং আসাদুল্লা-হিল-গালিব অভিযোগ করেন, সোহরাওয়ার্দী হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে। পরে হল প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা ওই হলে অভিযান চালায়। এরপর মঙ্গলবার ভোর প্রায় পাঁচটার দিকে নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নিয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল রাতে সবার সামনেই আমি কয়েকজন ছোট ভাই নিয়ে হলে প্রবেশ করি। প্রবেশ করার সময় আতিকের সঙ্গে দেখা হয় ঠিকই; কিন্তু কোনো কথা হয়নি। আবার মূল গেইট দিয়েই বের হয়েছি আমি। তবে এ সময় আমার সঙ্গে কোনো বহিরাগত ছিল না।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব সাংবাদিকদের বলেন, “ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পার্শ্ববর্তী জোহা হল এবং মাদার বখ্শ হলের ছাদ থেকে বেশ কিছু বহিরাগতকে ডাইনিংয়ের ছাদ দিয়ে হলে প্রবেশ করতে দেখে। তাই ওরা প্রক্টর স্যারকে জানায়। এরপর প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় হলে অভিযান চালায়। তবে তাদের এক নেতাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছিল।"
সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বেশকিছু সূত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, এই হলে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে আমরা অভিযান চালাই।
“এ সময় একটি চাইনিজ কুড়ালের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। কিছু সন্দেহজনক কক্ষে অভিযান চালিয়ে সেখানে কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়েছি। কিন্তু কোনো বহিরাগতদের হলে পাওয়া যায়নি।"
অস্ত্রহাতে মহড়ার প্রসঙ্গে আসাবুল বলেন, “এমন কোনো দৃশ্য আমাদের চোখে পড়েনি। তবে হলে রাজনীতির বিষয়টা থাকায় সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছি।"