পূর্ব লন্ডনের বো এলাকার বাসিন্দা দবিরুল গত রোজার মাসে লকডাউনের মধ্যে প্রতিদিন নিজের বাড়ির পেছনের ৮০ মিটার বাগান পায়ে হেঁটে মোট ৯৭০ বার চক্কর দিয়েছেন।
আরেক শতবর্ষী ব্রিটিশ নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন টম মুর তার বাড়ির বাগানে হেঁটে স্বাস্থ্য-কর্মীদের জন্য যেভাবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড সংগ্রহ করেছিলেন, তা দেখেই উৎসাহিত হয়েছিলেন দবিরুল।
তার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ, ব্রিটেন এবং আরো কিছু দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহ করা।
রামাদান ফ্যামিলি কমিটম্যান্ট নামের ওই চ্যারিটিতে তোলা অর্থ থেকে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) দান করা হয় ১১৬ হাজার পাউন্ড। বাকি অর্থ আরও ২৬টি দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মহামারীতে বিপর্যস্ত গরিব মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে ব্যবহার করা হয় ওই অর্থ।
সিটি অব লন্ডন করপোরেশন জানিয়েছে, বুধবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা দেওয়া হবে।
সিটি অব লন্ডনের নির্বাচিত কাউন্সিলর মনসুর আলী ও প্রেম গয়াল, ব্যারোনেস উদ্দিন এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার উপস্থিত থাকবেন সেই অনুষ্ঠানে।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে অসহায় মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহের নজির গড়ায় শতবর্ষী দবিরুল এ বছর ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথের জন্মদিনে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) খেতাবও পেয়েছেন।
তার ছেলে আতিক চৌধুরী বলেন, “আমার বাবাকে এই সম্মাননার জন্য মনোনীত করায় আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। লন্ডনের সকল জ্যেষ্ঠ নাগরিক এবং প্রবাসী, যারা এই শহরকে এত প্রাণবন্ত ও বহু সংস্কৃতির মিলনস্থলে পরিণত করেছেন, তাদের সবার পক্ষ থেকে আমার বাবা এই সম্মাননা গ্রহণ করবেন।
১৯২০ সালের ১ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার কুলঞ্জ গ্রামে জন্ম নেওয়া দবিরুল ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন ১৯৫৭ সালে। লেখাপড়ার পর সেখানে চাকরির পাশাপাশি কমিউনিটির কাজেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার স্ত্রী খালেদা দবীর চৌধুরী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুক্তরাজ্য শাখার একজন নেত্রী।
বাঙালি কমিউনিটিতে সুপরিচিত পেনশনার দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে অনেকেই চেনেন কবি দবিরুল হিসাবে। কবিতাপ্রেমী দবিরুল এখনও কোনো সভা-সমাবেশে গেলে স্বরচিত কবিতা পড়ে শোনান। শত শত কবিতা লিখেছেন তিনি। তার লেখা কবিতার বইও প্রকাশিত হয়েছে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |