রানির খেতাব পেলেন দবিরুল

গত রমজানে করোনাভাইরাস সঙ্কটে দুর্গত মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহ করায় ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথের জন্মদিনে দেওয়া অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) খেতাব পেয়েছেন শতবর্ষী ব্রিটিশ বাংলাদেশি দবিরুল ইসলাম চৌধুরী।

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2020, 03:54 AM
Updated : 10 Oct 2020, 03:55 AM

তিনি লন্ডনের বো এলাকায় তার বাড়ির সামনের বাগানে পুরো রমজান মাস ৯৭০ দফা হেঁটে চ্যারিটির জন্য ৪ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা) তহবিল সংগ্রহ করেন।

রামাদান ফ্যামিলি কমিটম্যান্ট নামের একটি চ্যারিটির জন্য তোলা এই অর্থ থেকে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) দান করা হয় ১১৬ হাজার পাউন্ড এবং বাকি অর্থ আরও ২৬টি দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে বিতরণ করা হয়।

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মহামারীতে বিপর্যস্ত গরিব-দুঃখী মানুষদের খাবারসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে এই অর্থ ব্যবহার করা হয়।

দবিরুল আরেক শতবর্ষী ব্রিটিশ সেনা টম মুরের নিজের বাড়ির আঙিনায় হেঁটে এনএইচএস অর্থাৎ ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের জন্য ৩৩ মিলিয়ন পাউন্ড সংগ্রহের খবর দেখে অনুপ্রাণিত হন।

দবিরুল তার লন্ডনের ফ্ল্যাটের সামনের আঙিনায় হেঁটে মাত্র এক হাজার পাউন্ড তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নিধা‍র্রণ করেছিলেন। তবে ব্যাপক সাড়া পড়ায় তা লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে যায়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও বিরোধী দলের নেতা লেবার পার্টির কিয়ার স্টারমার দবিরুল ইসলামের তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

দবিরুল ইসলাম চৌধুরী ওবিই খেতাব পেয়ে খুবই খুশি এবং নিজেকে গর্বিত মনে করছেন। যারা তার এই উদ্যোগে সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে আতিক চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথম দিকে বাবার টার্গেট ছিল এক হাজার পাউন্ড তোলা। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এই টার্গেট পূরণ হয়ে যায়। যত বেশি তহবিল আসতে থাকে তত বেশি তার বাবা উৎসাহিত হয়ে তার তৎপরতা বাড়িয়ে দেন। এমন কি রোজা শেষ করেও তিনি আরও কিছু দিন হাঁটা অব্যাহত রাখেন।”

“আমার বাবার জন্য আমি গর্বিত,” বলেন আতিক।

কয়েক বছর আগে স্ত্রী খালেদা দবির চৌধুরীর সঙ্গে দবিরুল ইসলাম চৌধুরী।

১৯২০ সালের ১ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার কুলঞ্জ গ্রামে জন্ম নেওয়া দবিরুল ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন ১৯৫৭ সালে। লেখাপড়ার পর সেখানে চাকরির পাশাপাশি কমিউনিটির কাজেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার স্ত্রী খালেদা দবীর চৌধুরী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুক্তরাজ্য শাখার একজন নেত্রী।

বাঙালি কমিউনিটিতে সুপরিচিত পেনশনার দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে অনেকেই চেনেন কবি দবিরুল হিসাবে। কবিতাপ্রেমী দবিরুল এখনও কোনো সভা-সমাবেশে গেলে স্বরচিত কবিতা পড়ে শোনান। শত শত কবিতা লিখেছেন তিনি। তার লেখা কবিতার বইও প্রকাশিত হয়েছে।