সাংস্কৃতিক কার্যালয়ে গিয়ে দেখি নাম নিবন্ধন শেষ। আর কোনো সুযোগ নেই। তাতে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। অনেক চেষ্টাতেও কোনো কাজ হলো না। পরে মোবাইল নাম্বারটা দিয়ে সামান্য অনুরোধ করলাম। কেউ না গেলে যেনো আমাকে জানানো হয়।
দিন কয়েক অপেক্ষায় রইলাম, আশা আর নিরাশার মধ্য দিয়ে। কবে পাব এই শুভ সংবাদ? একদিন অপেক্ষার পালা শেষ হলো, কাঙ্খিত সেই ফোনকলটি এলো। আমি গারদাকায় যেতে পারবো। মনের আনন্দ তখন উপচে পড়ছিলো। ভ্রমণ যে বড় শখের জিনিস। তাছাড়া জায়গাটির নাম গারদাকা। মিশরের অত্যন্ত দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি। ইংরেজিতে বলে হারগাদা। লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত এই শহর ইউরোপিয় ও আমেরিকান পর্যটকদের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিটি গ্রীষ্মের মৌসুমেই এখানে পৃথিবীর নানা দেশের পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এই শহরটিকে তাই পর্যটকের শহরই বলা চলে।
কিছুক্ষণ পর গাড়ি চলতে শুরু করলো, একেবারে বাতাসের বেগে। কায়রো থেকে ঘণ্টা দুয়েক চলার পর মূল রাস্তা আসে লোহিত সাগরের পাশ দিয়ে। সে সময়ই প্রথম লোহিত সাগর দেখা। কিন্তু আবছা আঁধার থাকায় কোনোকিছু পরিষ্কার দেখাচ্ছিলো না। তারপরো মুঠোফোন দিয়ে বেশকিছু দৃশ্য ধারণ করে রাখলাম। সাত সকালে সমুদ্র দৃশ্যগুলো দেখাচ্ছিলো বড় অদ্ভুত। তাতে খানিকটা অবাকও হলাম। এভাবে একের পর এক অপরূপ দৃশ্য পেছনে ফেলে গাড়ি চলতে থাকলো দুরন্ত গতিতে।
সকাল আটটায় চলন্ত গাড়িতে আমাদেরকে হালকা শুকনো নাস্তা দেয়া হয়। চলতি পথে এ জাতীয় খাবারই সাধারণত গ্রহণ করা হয়। এমনিতে মিশরিয় জনগণ শুকনো খাবারের বাইরে তেমন কিছু গ্রহণ করে না। রুটি, গিবনা (এক জাতীয় মিশরিয় খাবার) দুধ, ডিম ও হালুয়া (অনেকটা মিষ্টি জাতীয় বিস্কুটের মতো) এগুলোই এদেশে আমাদের নাস্তার আইটেম থাকে। তাতে আর যাই হোক, ভ্রমণের সময় থালা-বাসনের প্রয়োজন পড়েনা।
পাশের ভিনদেশি বন্ধুটিকে এসব শুকনো নাস্তায় বেশ অভ্যস্ত মনে হলো। সে গদগদ করে সব সাবাড় করে ফেললো। তাই বাঙালি হিসেবে যখন এগুলোতে আমার তেমন স্বাচ্ছন্দবোধ হচ্ছিলো না, তখন সে দারুণ আশ্চর্য হলো। জিজ্ঞেস করলাম, তোমাদের দেশেও কী এগুলোই খায়? তার ঝটপট উত্তর, এটাই তো সর্বোৎকৃষ্ট খাবার। তাদের দেশের মানুষ তা অনেক পছন্দ করে। যাক, পরে তাকে বাহবা দিয়ে বিষয়টার ইতি টানলাম।
গারদাকায় প্রবেশের পর থেকেই আমার ভেতর ভিন্নরকম এক অনুভূতি বিরাজ করছিলো। খুব সাজানো গোছানো একটি শহর। আশপাশের প্রতিটি ভবনই জাঁকজমকপূর্ণ। রোদেলা দুপুরে এগুলো আরো ঝকঝক করছিলো। উন্নতমানের হোটেল-মোটেল হতে পারে। রাস্তাঘাটে মানুষজন তেমন নেই। কুকুর কিংবা অন্যকোনো প্রাণীও চোখে পড়েনি। এ অঞ্চলের কুকুরগুলো দিনের বেলায় সম্ভবত বের হয়না। তবে আকাশে কিছুক্ষণ পর পর হেলিকপ্টারের টহল দিতে দেখা গেলো। বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য হতে পারে।
পরদিন ভোর আটটা। কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠলাম। নাস্তার সময় হয়েছে। বেশি বিলম্ব করা যাবে না। না হয় নাস্তাও যাবে, গাড়িও ছেড়ে দেবে। একূল ওকূল দুটোই হারাতে হবে। তাই ঘুমাতুর চোখে অলসতা করে বেশি সময় পার করলাম না। দ্রুত নাস্তা সেরে সাজগোছ করে নিলাম। এরপর বাইরে যখন এলাম, দেখলাম সূর্যের চোখ রাঙানি খানিকটা বেড়ে গেছে। আরেকটু দেরি হলে রাগি সূর্যের ভীষণ ধমক খেতে হতো। কেউ কেউ একটু একটু দেরি করতে চাইল, ওস্তাদের ধমক খেয়ে হুড়মুড় করে এসে বাসে উঠলো। কয়েকজন ধাক্কাধাক্কি করতে গিয়ে ওস্তাদের গায়ের উপর পড়লো। ওস্তাদ রেগে গিয়ে তাদের আজকের সফরটা বাতিল করে দিলেন। অনুনয় বিনয় করেও কাজ হলো না। সিট নিয়ে রেষারেষি করলো কয়েকজন। ওস্তাদ তাদের ড্রাইবারের পাশে নিয়ে বসালেন।
মাঝ সাগরে একটি চর, নাম তার প্যারাডাইস। বিচের কিনারা থেকে ওখানে যাওয়ার জন্য আছে ‘সাফিনা’, বাংলায় বলে ‘জাহাজ’। এগুলো দেখতে বড় চমৎকার। সবগুলো প্রায় একই ধরনের। তবে আলাদা আলাদা রঙের। দু’তলা এগুলো। প্রতিটি জাহাজ থেকেই বাজছে নানান বেসুরো সঙ্গীত। একমাত্র অ্যারাবিয়ান ছাড়া অন্য কারো তা বুঝার কথা না। ইবরাহীম ভাই নাকি মিশরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভাষাও বুঝতেন। তিনিও এ সঙ্গীতগুলোর কী অর্থ, তা বুঝতেন কিনা কে জানে?
আমাদের জন্য একটি জাহাজ ভাড়া করা হলো। ভেতর প্রবেশের পর দেখলাম, প্রতিটি তলাতেই রয়েছে বেশ খোলামেলা জায়গা। আছে কিছু চেয়ার। এগুলো হালকা বেগুনি রঙের, ডেকের দুপাশে সাজানো। মাঝখানে অনেকখানি খালি জায়গা। জাহাজের সারেং সিমসাম গড়নের একজন খুব মনোযোগ সহকারে এর নিয়ন্ত্রণ করছেন। মিশরিয় ভাষায় জিজ্ঞেস করলাম, কী খবর তোমার? উত্তরে একটি হাসি দিলো। কিছু না বলে উল্টো আমাকে প্রশ্ন করলো- তোমরা কী ভারতীয়? বললাম- না, আমরা বাংলাদেশি। মিশরিয়দের কাছে উভয় দেশের মানুষ অবিকল একরকম বোধ হওয়ায় তারা হর হামেশাই এ জাতীয় প্রশ্ন করে থাকে। তবে আমরা চিনতে পারি, কে ভারতীয় আর কে বাংলাদেশি। এ ক্ষেত্রে নেপালিদের চিনতে একটু বেগ পেতে হলেও চুলের স্টাইল দেখে নির্ণয় করা যায়।
জাহাজের মধ্যে সবাই নানা কাজে ব্যস্ত। কেউ ঘন ঘন ছবি তুলছে। কেউ দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। নিজেদের মাঝে হাসাহাসি করছে অনেকে। এরই মাঝে একজন জাহাজের কিনারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ধপাস করে পড়ে গেলো সাগরে। সে উত্তাল সাগরে হাবুডুবু খাওয়ার পরিবর্তে দিব্বি সাঁতার কাটছে। প্রথম দৃশ্য দেখে দুর্বলচিত্তের কেউ কেউ চিৎকার জুড়ে দিলো। পরক্ষণে তার সাঁতার কাটা দেখে শান্ত হয়ে গেলো সবাই। লোকটি আফগানিস্তানের। বৃহদকায়, লম্বা আকৃতির। দেখলে মনে হবে সাগরের তলদেশ গিয়েও সে ঠাঁই পাবে। তার সাথী সঙ্গীরা বলল- এমনি নাকি তার অভ্যাস। মাঝ সাগরে যে কোনো সময় লাফিয়ে পড়ে। ভাগ্যিস দানব হাঙর বোধ হয় তখন ঘুমে ছিলো। নতুবা কী হতো সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। লোকটি বেশিক্ষণ সাগরে সাঁতরাতে পারলোনা। ওস্তাদ আদেলের ধমক খেয়ে আবার দ্রুতবেগে উঠে এলো। কেউ কেউ এই সাহসিকতার জন্য তাকে বাহবা দিলো। আমার কাছে ব্যাপারটি সাহসিকতার কাজ মনে হলো না। অতিরঞ্জন বলতে পারি। নিয়ম-শৃঙ্খলা বলে একটি ব্যাপার আছে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে তাকে প্রশংসার কাতারে ফেলা যায় না। তাছাড়া একজনের জন্য দশজন বিরক্ত হোক তা কারো কাম্য হতে পারেনা।
জাহাজটি এক সময় প্যরাডাইসটিতে এসে ভিড়লো। আমরা এক এক করে সবাই নেমে পড়লাম। সেখানে ভিনদেশি অনেক নারী পুরুষের দেখা মিললো। বেশির ভাগই ইউরোপিয়, আমেরিকান আর রাশিয়ান। এশিয়ার মধ্যে কোরিয়, জাপানি ও চীনারা আছেন। প্রচণ্ড তাপদাহে সবাই সাগরে এসেছে একটু শীতলতার সন্ধানে। দেহকে একটু বিশ্রাম দিতে। সংখ্যা তাদের দু’তিন হাজারেরও অধিক হবে। তারা চরটির যে প্রান্তে আছে আমরা আছি তার বিপরীত প্রান্তে।
এখানে আমরা পানিতে নামলাম। সঙ্গে নিলাম একটি প্লাস্টিকের টায়ার। সাগর পানিতে নামার সময় এগুলো একটা থাকতে হয়। তাতে ফূর্তির আমেজটা আরেকটু বৃদ্ধি পায়। যেমন ইচ্ছে তেমন করে সাঁতরানো যায়। পানিতে ভেসে থাকে বলে কোনো শক্তি খরচ না করেই অনেক দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। আগেই বলেছিলাম- লোহিত সাগরের এই দিগটার পানি দারুণ স্বচ্ছ। যাতে তার গুণাগুণ বর্ণনা করে শেষ করে যাবে না। কাজেই আমাদের আনন্দের পরিমাণ বেড়ে গেল কয়েকগুন। এই আনন্দে অনেক্ষণ ভেসে থাকলাম। যখন উঠলাম তখন বাজে বেলা বারোটা। আবার জাহাজে উঠতে হবে। এবারের কর্মসূচি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।
আমি ডুবানোর জন্যে পূর্ণ প্রস্তুতি নিলাম। গাইড ঘোষণা করলেন- যারা সাঁতার জানে তারা সবাই নামতে পারে। এতে করে আরো কয়েকজন নামার জন্য তৈরি হলো। আমি আর শরীফ এক সঙ্গে নামলাম। নেমেই দিলাম ডুব। তাতে যা দেখলাম মনে হয় জীবনে তা কোনদিন ভুলতে পারবো না। সাগরের নিচে বিশাল জগত। মহান আল্লাহর অতি বিস্ময়কর সৃষ্টি। পৃথিবীর উপরিভাগে যেমন তিনি সৃষ্টি করেছেন। তার তলদেশে এরচেয়েও বেশি জীব রয়েছে। গাছপালা, পাহাড়-পর্বত, বিভিন্ন খনিজ সম্পদ আর হাজারো প্রজাতির প্রাণী। কতো যে সুন্দর! তার বর্ণনা লেখা কিংবা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমি মুক্ত নয়নে সব দেখতে লাগলাম। দু’হাতকে ডানা বানিয়ে একেকবার একেকদিকে যেতে লাগলাম।
একবার একদিকে গিয়ে দেখি কত সুন্দর দৃশ্য! নানা রঙের মাছগুলো নির্লিপ্ত বিচরণ করছে। সাগর দেশে আছে উদ্ভিদরাজী। আছে ছোট বড় কত পাথর। নয়নাভিরাম ফুলরাজি। আবার অন্য একদিকে দেখি তারচেয়েও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। ছোট ছোট মুক্তদানার মতো চকচক করছে সাদাবালি। সবই দেখলাম মন খুলে আর প্রাণ ভরে। প্রায় ঘণ্টা খানেক থাকলাম। হোটেলে ফিরতে ফিরতে একেবারে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। অযু-গোসল সেরে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। হালকা আহার শেষে নিলাম বিশ্রাম। সেই সঙ্গে আজকের দিনের সব কর্মসূচিও সমাপ্ত হলো।
পরের দিন গারদাকা ভ্রমণের তৃতীয় দিন। ঘোরাফেরার জন্য আজকেই শেষ দিন। কারণ চতুর্থ দিন ফেরার পালা। কাজেই যা কিছু দেখার আজকেই দেখতে হবে। নতুবা পরে আফসোসের সীমা থাকবে না। তাই আটঘাট বেঁধে নামলাম। আগের দিনের মতো আর বিলম্ব করল না কেউ। তাছাড়া ওই শাস্তির কথাও তো কম বেশ সবার জানা আছে। সবাই দ্রুত গাড়িতে চেপে বসলো। গাড়ি চলতে শুরু করল অন্য একটি বিচের উদ্দেশ্যে। আজকের কর্মসূচি খুবই চমৎকার। সেটি বলছি একটু পরেই। তার জন্য প্রথমে আমরা বিচটির সামনে এসে গাড়ি থেকে নামলাম। ফরমাল পোশাক খুলে একটি বেঞ্চিতে রাখলাম। সাঁতরানোর পোশাক পরলাম, কিন্তু গাইড এসে বললেন, পানিতে এখনই নামার সময় হয়নি। অগত্যা আবার পূর্বের পোশাকগুলো পরতে হলো। এবার ধীরে ধীরে হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।
দেখলাম- গতকালের ন্যায় আজও সাগরে ভাসমান অনেকগুলো জাহাজ। তবে ঠিক আগেকারগুলোর মতো নয়। কৌতুহলী ভঙ্গিতে জাহাজে প্রবেশের পর দেখলাম- এগুলোর তলাতে গ্লাস লাগানো। তার মানে সাগরের পানি দিয়ে চলতে থাকবে আর সবকিছু ভেসে উঠবে গ্লাসে। অবস্থার সৌন্দর্য উপলদ্ধি করতে পেরে যারপরনাই আনন্দিত হলাম। সবাই দু-ভাগ হয়ে দুটি জাহাজে প্রবেশ করলো। নাবিক সাহেব এরপর আর তেমন বিলম্ব করলেন না। ইঞ্জিন স্টার্ট দিলেন। জাহাজ চলতে শুরু করলো। পূর্ব থেকেই একটু বেসুরও সঙ্গীত বাজছিলো। ভালো লাগছিল না শুনতে। কিন্তু শুনতে হচ্ছিলো। কারণ মাথামোটা এই মিশরিয় নাবিককে তা বন্ধ করতে বললে হিতে বিপরীত হতে পারে। শেষে আরো উচ্চস্বরে বাজাবে। তাই চুপ করে থাকাটা শ্রেয় মনে হলো।
জাহাজের চলার গতি বেড়ে গেলে সবাই গ্লাসের আশপাশে এসে জড়ো হলাম। অপূর্ব সুন্দর দৃশ্যগুলো দেখতে লাগলাম। সাগর কতো চিত্র-বিচিত্র। কতো নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। কতো দৃষ্টিকাড়া ছবি, প্রকৃতি। সবকিছুই ভেসে উঠছে গ্লাসে। মনে হচ্ছিলো, মাছগুলো ঠোকরে ঠোকরে গ্লাস ছিদ্র করে ফেলবে। উদ্ভিদরাজি আর ফুলগুলো হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। এই বুঝি গ্লাস ফেটে সাগর তলে ডুবে গেলাম। একটু ভয় ভয় করছিলো। বড় বিচিত্র ধরনের মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে আসছিলো। এসে তিড়িং বিড়িং করে আবার চলে যাচ্ছে। আবার অন্য মাছ আসছে। উপরে তাকিয়ে কী যেনো দেখছিলো এগুলো। মনে হচ্ছে আমাদের দেখছে। পাছে আবার ধরা না পড়ে, তাই বেশিক্ষণ থাকেনা। মাঝে মাঝে ভয়ংকর টাইপের দু’একটি প্রাণীও দেখা যায়। অনেক বড় বড় আকৃতির, নাম জানি না। আগে জিওগ্রাফি চ্যানেলে দেখতাম। এবার দেখছি অনেকটা সরাসরি।
একটু সামনে এসে দেখলাম, বড় বড় ফুলের গাছের মতো, ফুল ধরে আছে। এই গভীর সমুদ্রে এত সুন্দর ফুল, কোত্থেকে এলো? জানতে পারলাম, এগুলো নাকি অনেক বিষাক্ত। ধরতে গেলে হাত কেটে যাবে। তাছাড়া গ্লাস ভেঙ্গে ধরাও সম্ভব না। কিন্তু দৃষ্টি জুড়ালো দেখে। আরেকটু দূরে এসে দেখলাম রঙ-বেরঙের ঝিনুক। ঝিনুকে মালা তৈরি হয়, সেই মালা বিক্রি হয় বাজারে। ঝিনুকগুলো সম্ভবত এখান থেকে সংগ্রহ করা হয়। মুক্তাদানার ন্যায় স্বচ্ছ এই ঝিনুক। দেখে মনে হলো ছুটাছুটি করছে। কে কার আগে যেতে পারে, এই টাইপের। প্রায় দু’ঘণ্টার মতো ঘুরে ঘুরে সব দেখলাম। তারপর সৈকতে ফিরে এলাম। সাঁতরালাম আরো দু’ঘণ্টা। স্বচ্ছ আর নীলাভ পানিতে সাঁতরানোয় বেশ তৃপ্তি আছে। বিকেলবেলায় যখন ফিরছিলাম, তখন মন কিন্তু নীল লাল সাগরেই পড়েছিল।
লেখক: প্রবাসী শিক্ষার্থী, আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |