যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী আবৃত্তি শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নিউইয়র্ক আবৃত্তি উৎসব ২০১৮’।
Published : 21 May 2018, 11:21 AM
রোববার নিউ ইয়র্ক সিটির উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে প্রথমবারের মতো এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘বোধের বিশ্বাসে, ভাবনাকে মজবুত করে’- এই স্লোগানে আয়োজিত এ আবৃত্তি উৎসবের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন মিথুন আহমেদ।
উৎসবের আহ্বায়ক আবীর আলমগীর শুরুতেই তার স্বাগত বক্তব্যে নিউ ইর্য়কে আবৃত্তি উৎসবের জন্য একটি স্থায়ী পর্ষদ ‘নিউইয়র্ক রিসাইটেশন ফেস্টিভ্যাল কমিটি’র চেয়ারম্যান হিসেবে সম্ভাষণ করে এই উৎসবের প্রাণ বলে উল্লেখ করেন আবৃত্তিকার মিথুন আহমেদকে।
উৎসব পর্ষদের উপদেষ্টা মিথুন আহমেদ বলেন, “আবৃত্তি একসময়ে খুব ভালোবেসে করতাম, এখনও আবৃত্তি করতে চাই, আর সেটা খুব ভালোভাবেই করতে চাই। আমি মনে করি এই উৎসবের মাধ্যমে দুটি কাজ হলো। আবৃত্তিকাররা তাদের চর্চাকে আরও ভালো করার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন, আর নিজেদের মর্যাদাবোধ নিয়ে অন্যান্য অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতে যাবেন।”
বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব, আবৃত্তিকার সালেক খান মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সালেক খান বলেন, “আপনারা যারা আবৃত্তির সঙ্গে জড়িত তাদের প্রতি রইলো শুভেচ্ছা। ‘আবৃত্তি’ যেনো ‘আবৃতি’ হয়ে না যায়, উচ্চারণের ক্ষেত্রে শুদ্ধ উচ্চারণটাই যেনো করি, ভয়টা যেন থাকে। যেদিন ভয়টা শেষ হয়ে যাবে সেদিন আপনার পাঠও শেষ হয়ে যাবে।”
এই উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে কবি ও ভাষা সংগ্রামী বেলাল চৌধুরী এবং আবৃত্তিকার কাজী আরিফকে। কবি ও ভাষা সংগ্রামী বেলাল চৌধুরী জীবনচরিত পাঠ করেন মিজানুর রহমান বিপ্লব। আবৃত্তিকার ও মুক্তিযোদ্ধা কাজী আরিফের জীবনচিত্র পাঠ করেন বিলকিস রহমান দোলা।
সালেক খানকে উৎসব স্মারক উত্তরীয় পরিয়ে দেন সাংবাদিক কৌশিক আহমেদ।
উদ্বোধনী বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশনার মাধ্যমেই শুরু হয় আবৃত্তি পর্বের। পরিচালনা করেন শান্তা শ্রাবনী।
এরপর একক আবৃত্তি করেন শরফুজ্জামান মুকুল, সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য্য, জয়া চ্যাটার্জী, লুবনা কাইজার, ফারুক আজম ,ফারুক ফয়সল, এজাজ আলম, মোল্লা বাহাউদ্দিন পিয়াল, মেহের কবীর, হীরা চৌধুরী, রীপা নুর, আনোয়ারুল হক লাভলু, রাহাত আল মুক্তাদির, নাসিমা আক্তার, তন্ময় মজুমদার ও হোসেন শাহরিয়ার তৈমুর।
নতুন প্রজন্মের মধ্যে আবৃত্তি পরিবেশন করেছে লিওনা মুহিত, নাহরীণ ইসলাম, নুহা কাওসার, মুন জেবিন হাই, গুঞ্জরি সাহা, জারিন মাইশা ও আবিবা ইমাম দ্যুতি।
অনুষ্ঠান আয়োজনে বিশেষভাবে শ্রম দিয়েছেন আশরাফুল হাবিব চৌধুরী মিহির, সেমন্তী ওয়াহেদ, মিজানুর রহমান বিপ্লব, আবীর আলমগীর ও মিথুন আহমেদ।
সকল আবৃত্তিকারই কম বেশী শব্দ আর আলোর ব্যবহার করেছেন ,কিন্তু সেমন্তী ওয়াহেদের একটি পরিবেশনা ছিলো নারীকে নিয়ে, সেই পরিবেশনাটা একটা আলাদামাত্রা যোগ করেছে এই আয়োজনে। তার গ্রন্থনার যে নির্বাচন সেটা বাইলিঙ্গুয়াল পরিবেশনা ছিলো, সেখানে একটি ছায়ানৃত্য ছিলো, তাতে লাল আলো ব্যবহার করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে এ্কজন নারী যে বেঁচে উঠেছে। সেটা এই উৎসবের শ্লোগানের পরিপূরক ছিল।
বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশনার মধ্য দিয়েই শেষ হয় আবৃত্তি পর্বের। এ পর্বেরও পরিচালনা করেন শান্তা শ্রাবনী।
এ উৎসবের প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন আশরাফুল হাবিব চৌধুরী মিহির। স্মরণিকা সম্পাদনা ও অলংকরণের দায়িত্বে ছিলেন নজল কবীর আর সহযোগিতায় ছিলেন বিলকিস রহমান রুদোলা ও মেহের কবীর। স্মরণিকার প্রচ্ছদ পেইন্টিং করেছেন তাজুল ইমাম, গ্রাফিক্সে ছিলেন জাহেদ শরিফ ও উৎসব নকশা করেন টিপু আলম ।
আয়োজনে তবলায় ছিলেন জনম সাহা ও ছায়ানৃত্যে ছিলেন সুষনা চৌধূরী। এছাড়া রায়হান জামান, শিবলী নোমানী, নাসিমা বানু চাঁপা, কান্তা আলমগীর,সুতপা মন্ডল, বিশ্বজিত সেনগুপ্ত, নূসরাত এলিন, শিরিন ইসলাম, শহীদ উদ্দিন ও লালন নূরসহ অনেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
উৎসবে আরও যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জি. এইচ. আরজু, ইভান চৌধুরী, তিতাস মাহমুদ ও সেলিম ইব্রাহীম।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উৎসব শেষ হবার সাথে সাথে আহ্বায়ক ও সদস্য-সচিব পদ এবং উৎসব পর্ষদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এই উৎসবের আহ্বায়ক আবীর আলমগীর উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত হবেন। প্রতি দুই বছর অন্তর উৎসব হবে। আগামী আবৃত্তি উৎসব হবে ২০২০ সালে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |