কুয়েতে কাজ শুরুর অপেক্ষায় ১১০ বাংলাদেশি নার্স

আ হ জুবেদ, কুয়েত প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2022, 11:21 AM
Updated : 4 August 2022, 11:21 AM

কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ পেয়ে দেশটিতে পৌঁছানো ১১০ বাংলাদেশি নার্স কাজে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন।

চলতি বছরের ১৯ জুন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫১ জন পুরুষ ও ৫৯ জন নারী নার্স কুয়েতে পৌঁছেছেন। দেশটির মাহবুলা এলাকায় একটি হোস্টেলে অবস্থান করছেন তারা।

কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশে ৩০০ নার্সের ভিসা পাঠানো হয়েছে। এদের ১১০ জন এরই মধ্যে কুয়েতে এসে পৌঁছেছেন। আশা করা যাচ্ছে এ মাসের মাঝামাঝি আরও ৪০ থেকে ৫০ জন আসবেন। বাকিরা শিঘ্র পৌঁছাবেন।

“কুয়েতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে নার্সরা এসেছেন। এখানে সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ভারত, ফিলিপাইন ও মিশরসহ বিভিন্ন দেশের নার্সরা রয়েছেন। এখানে আমাদের দেশের নার্সরা ছিলেন না। ফলে যখন স্থানীয়ভাবে প্রায় এগারশ নার্সের একটি চাহিদাপত্র আসে, তখন এ বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখি।"

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “প্রথম ধাপে যেসব নার্সরা কুয়েতে এসেছেন, তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছে দূতাবাস। নার্সদের হোস্টেলে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর তারা কাজে যোগদান করতে পারবেন বলে আশা করছি।”

সম্প্রতি কুয়েতে পৌঁছানো নার্সদের হোস্টেল পরিদর্শন করেন ‘বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, কুয়েত’ এর সভাপতি মঈন উদ্দিন সরকার সুমন, সাধারণ সম্পাদক আ হ জুবেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হেবজু। তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় হোস্টেলের নানা সুযোগ-সুবিধা ও নিজেদের স্বপ্নের কথা জানান নার্সরা।

তারা জানান, কুয়েতের আইন অনুযায়ী মেডিকেল, ফিঙ্গার প্রিন্টসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই কাজে যোগ দেবেন তারা। নার্সদের হলগুলো সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। কেউ হোস্টেলের বাইরে গেলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। সবাইকে রাত নয়টার মধ্যে হোস্টেলে ফিরতে হয়।

দেশটিতে নার্সিং পেশায় নিয়োগ পাওয়া এমনই একজন খুলনার কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুকুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমরা যারা সরকারি চাকরি থেকে ৩ বছরের লিয়েন নিয়ে এসেছি, আমরা দেশে ফিরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এ অভিজ্ঞতার আলোকে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আশা করছি।”

মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. রমজান আলী বলেন, “নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনার জন্যই এখানে এসেছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে দেশকেও সহযোগিতা করা হবে।”

অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভালো মানের সেবা দিয়ে কুয়েতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার ইচ্ছার কথা জানান মো. আনিসুর রহমান মহসীন, তিনি চট্টগ্রামে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল (বেপজা) এর সাবেক সিনিয়র স্টাফ নার্স।

দক্ষ কর্মী হিসেবে কুয়েতে আসার জন্য নির্বাচিত হওয়ায় নিজেদের আনন্দের কথা জানান স্কলাস্টিকা স্কুলের সিনিয়র হেলথ নার্স আছিয়া খাতুন ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালের নুপুর বিশ্বাস, কৃতজ্ঞতা জানান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডকে (বোয়েসেল)।