তবে আয়োজকের তরফে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়।
Published : 14 Apr 2025, 12:45 AM
যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশি রেমিটেন্স মেলায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের ‘অপব্যবহার’ ও রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন।
শনিবার নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে সংগঠনটি।
তাদের দাবি, ‘রেমিটেন্স ফেয়ার’ এর আড়ালে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় অর্থে বিদেশ সফর করছেন, যা প্রবাসীদের অর্থনৈতিক অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন না করার শামিল।
সংগঠনের লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, “এ ধরনের আয়োজনে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে, অথচ এর নামে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতা ও অংশগ্রহণ প্রশ্ন তুলছে এসব তহবিল ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়ে।”
আয়োজকদের ঘোষণায় জানা গেছে, আসছে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে অনুষ্ঠেয় এই ফেয়ারে অংশ নেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান ও পরিচালক মনোয়ারউদ্দিনসহ একাধিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়কারী আব্দুল কাদের বলেন, “প্রবাসীরা বছরের পর বছর কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠাচ্ছেন। অথচ এমন আয়োজনের খবরও আমরা আগেভাগে জানতে পারি না। কারণ, এটি কোন ফেয়ার নয়, কিছু অসাধু আমলার বিলাসী ভ্রমণের অবলম্বন এবং কিছু দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির অর্থ পাচারের অন্যতম বাহন।”
জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ)-এর সভাপতি গিয়াস আহমেদ বলেন, “স্বৈরাচারের ১৫ বছরই এ ধরনের রেমিট্যান্স ফেয়ারের আড়ালে রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচারের পাশাপাশি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারকরা নিউ ইয়র্কে এসে বিলাসী সময় কাটাতেন। গত বছর এমন এক আয়োজনে বক্তা ছিলেন ১০ জন, কিন্তু দর্শক ছিলেন হাতে গোনা।”
সাংবাদিক ওয়াজেদ এ খান ও জাকারিয়া মাসুদ জিকু অভিযোগ করেন, “ফেয়ারের আয়োজক বিশ্বজিৎ সাহা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের লুটেরা শ্রেণির সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের অন্যতম অবলম্বন হিসেবে এ ধরনের রেমিট্যান্স ফেয়ারের নামে প্রহসন করেছেন। স্বৈরাচারের পতন ঘটার পরও একইধারায় বিশ্বজিৎ সাহার রেমিট্যান্স ফেয়ারের তামাশা চলছে।”
তবে আয়োজকপক্ষ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। ফেয়ারের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ফেয়ার ছিল অত্যন্ত সফল এবং তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ দেশ।”
তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগ কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। বরং বাংলাদেশকে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে উপস্থাপন করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমরা একে বিবেচনা করি। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে আমরা প্রবাসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে কাজ করছি।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে বক্তারা এ ধরনের আয়োজনে সরকারি অর্থব্যয়ের সমালোচনা করেন এবং প্রয়োজনে ফেয়ার প্রতিহতের ঘোষণা দেন।