খালেদার চিকিৎসা নিয়ে মন্ত্রীদের এত দরদ কেন: গয়েশ্বর

“এখানে আগ বাড়াইয়া মাঝে মধ্যে আইন মন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী যেসব কথা বলেন, তাতে জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি, কনফিউশন সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চলে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2023, 07:45 AM
Updated : 10 March 2023, 07:45 AM

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীরা ‘আগ বাড়িয়ে’ কথাবার্তা বলছেন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এসব করে মানুষের মধ্যে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরির পাঁয়তারা চলছে।

‘নিঃশর্ত মুক্তির পর’ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে না বিদেশের মাটিতে হবে, নাকি তিনি পীর ফকিরের শরণ নেবেন, সেটা একান্তই তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলেন সরকার ‘হঠানোর’ আন্দোলনে থাকা বিএনপির এই নেতা।

বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-‘এমট্যাব’ এর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি জিয়ার কবরে শ্রুদ্ধা জানাতে যান।

সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গয়েশ্বর বলেন, “খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য উনাদের (মন্ত্রীদের) তো এতো দরদী হওয়ার দরকার নাই। আমরা দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি চাই। নিঃশর্ত মুক্তি পাওয়ার পর উনি বিদেশে চিকিৎসা করবেন না দেশে চিকিৎসা করবে, না ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাবেন, না ফকিরের কাছে ঝাঁড়-ফুক নেবেন, না তাবিজ নেবেন সেটা একান্তই তার নিজস্ব ব্যাপার।

“এখানে আগ বাড়াইয়া মাঝে মধ্যে আইন মন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী যেসব কথা বলেন তাতে জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি, কনফিউশন সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চলে।”

পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ‘অনুমতি দেওয়া হচ্ছে’ জানিয়ে বৃহস্পতিবার কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে টিকার প্রচার হয়। ওই তথ্যকে ‘সর্বৈব অসত্য’ বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার আবারও তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সে আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে এসেছে।

খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার চিন্তা সরকারের আছে কি না, এমন প্রশ্নে আনিসুল বলেন, “আমার কাছে আবেদনটি আসে নাই এখনও; আসলে পরে নিষ্পত্তি করব।”

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কোভিড মহামারী শুরুর পর ২০২০ সালে সরকার নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে তিনি গুলশানের বাড়িতে রয়েছেন।

বিএনপি নেতা গয়েশ্বর এদিন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণেও সরকারের সমালোচনা করেন।

নিত্যপণ্যের বাজার লাগামহীনভাবে ঊর্দ্ধগতিতে ছুটছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এরসাথে তাল মিলিয়ে জনগণের আয় বাড়ছে না, বরং কর্মসংস্থান সীমিত হচ্ছে। যারা দৈনন্দিন জীবনের আয়-রোজগার করে ডে-লেবার তাদের জীবন দুর্বিষহ, যাদের সীমিত আয় তারাও আজকে বাজেট মিলাতে পারছে না।”

তার ভাষায়, “সরকার দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। সরকারের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, তারা ভোটের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় থাকতেও চায় না, আসতেও চায় না।… সকল পেশা-শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেই গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটাব- এটাই আমাদের বিশ্বাস।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব আবদুস সালাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভানেত্রী জাহানারা বেগম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পুরনো খবর:

Also Read: খালেদার মুক্তির মেয়াদ আবার বাড়াতে পরিবারের আবেদন