বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহতদের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিচারকার্য দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানান বিএনপি নেতারা।
Published : 25 Feb 2024, 01:15 PM
বিডিআর বিদ্রোহে পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, “যে বিচারের কথা আমরা শুনেছি, সেই বিচার হয়েছে। বিচারের আপিল হয়েছে। আজকে ১৫ বছর পার হয়েছে। আরেকটি বিস্ফোরক মামলা রয়েছে, সেই বিচারকার্যও আজকে পর্যন্ত কেন বিলম্বিত হচ্ছে?
“বিচার বিলম্বে হলে সেই বিচারের মূল্য থাকে না। আমরা শুনেছি যে, বিচার প্রক্রিয়া এখনো ঝুলে আছে।… যাদেরকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে, তারা আজকে পর্যন্ত বিনা বিচারে কেন কারাবাস করছে?”
রোববার সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহতদের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিচারকাজ দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে জাতির ইতিহাসে ‘দুঃখজনক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে মঈন খান বলেন, “এমন ঘটনা কোনো জাতির ইতিহাসে ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। আজকে শুধু একটি কথাই বলব- বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক যেন সুশাসনের মাধ্যমে, আইনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পান… আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি। অপরাধী শাস্তি পাবে, সে সম্বন্ধে আমাদের কিছু বলার নাই।
“কিন্তু একজন নির্দোষ ব্যক্তিও যেন কখনো শাস্তি না পায়। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি, সেই নীতিতে বিশ্বাস করে আমরা আজকে সুবিচার আমরা কামনা করি। বিচার কাজে হস্তক্ষেপ করা এটা যুক্তিযুক্ত নয়। এটা বিচারাধীন আছে। আমাদের যারা বিচারক রয়েছেন, তাদের যে নীতি সেই নীতিতে অবিচল থেকে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে এই বিষয়টি অতি দ্রুত সুরাহা করবেন ১৫ বছরের পরে আমরা সেই প্রত্যাশা করি।”
সকাল সাড়ে ১০টায় আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহতদের প্রতি পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহি আকবর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নাল আবেদীন ও তৎকালীন বিডিআরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
বিডিআরের দরবার হল থেকে সূচনা হওয়া ওই বিদ্রোহের ইতি ঘটে নানা ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে পরদিন। পিলখানায় বিদ্রোহের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে জওয়ানরাও বিদ্রোহ করে।
সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।
দেশের ইতিহাসে আলোচিত এ ঘটনায় দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি এখনো জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণে আটকে।