নির্বাচন ছেড়ে নেতাকর্মীদের ‘রাজপথ’ নিয়ে ভাবতে বললেন গয়েশ্বর

রাজপথে আন্দোলন জমাতে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বিষয়টিকে বিএনপির ‘ত্রুটি’ হিসেবে বর্ণনা করেন গয়েশ্বর।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে নেতাকর্মীদের ‘রাজপথ দখলে’ নিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “এখন আমরা দলের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আছি, নেক্সট ইলেকশনে ‘হাউ টু সিকিউর দ্য নমিনেশন’ অর্থাৎ কীভাবে মনোনয়ন লাভ করব সেটাই আমাদের দুশ্চিন্তা। পাস করা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা নেই। সেই কারণেই আন্দোলনের চেয়ে প্রতি এলাকায় এলাকায় প্রার্থীদের প্রতিযোগিতা।

“আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করি, রাজপথ দখল করতে হবে। কিন্তু অনেকেই সেই কথা মত উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তাদের সংগঠিত করতে পারি না যে সাহসী যুবকেরা রাজপথে আসবে, তাদের উৎসাহিত করবে। এটা কিন্তু আমাদের এক ধরনের ক্রটি। সেই ক্রটি থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমি মুখে বলছি, নির্বাচন করব না। আমাকে বলতে হবে আমি যেটা বলি, সেটা কিন্তু কর্মকাণ্ড দিয়ে মানুষকে বিশ্বাস করাতে হবে, মানুষকে আস্থায় আনতে হবে।

“আমার রাজনৈতিক জীবনে যতদিন ধরে আওয়ামী লীগকে চিনি, ততদিন ধরে বলি, আওয়ামী লীগ যাহা বলে তাহা করে না, যাহা করে না তাহা বলে।”

‘আওয়ামী লীগের দাম কমছে’

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ঢাকার বাজারে যে কচুর দাম ৮০ টাকা, সেটা কিশোরগঞ্জের বাজারে ৩০ টাকা। এভাবে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে।

“তার পাশাপাশি একটি জিনিসের দাম ক্রমান্বয়ে কমতেছে। সেই জিনিসটার নাম আপনারা জানেন কি জানেন না- আমি জানি না। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের দাম প্রতিদিনই কমতেছে।

“এই যে লোহা-লক্কর-স্ক্র্যাপ প্রভৃতি জিনিস নিলামে বিক্রি করে, যা ব্যবহারযোগ্য না। সেখানে শত শত লোক নিলাম ডাকতে বসে। কিন্তু আজকে যদি আওয়ামী লীগের নিলাম হয়, আমার মনে হয় এটা কিনবে না কেউ।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, “এই যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন (এ কে আব্দুল মোমেন) সাহেব বলেছেন, ‘ভারতকে বলেছি আমাদের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে’। অর্থাৎ ভারত তাদেরকে রাখবে কিনা এটা নিয়ে সংশয় আছে বলেই…।”

গয়েশ্বর বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা রাষ্ট্রের কথা, রাজনীতির কথা, দেশের মান-সন্মানের কথাটুকু চিন্তা না করে, তারা যে ধরনের উক্তি করেন, তাতে আমরা যে একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক, তা দাবি করার কোনো অবকাশ নাই।”

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গয়েশ্বরের এ বক্তব্য এল।

বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘বিদ্যুত-জ্বালানি সংকটে বাংলাদেশ, নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন বুলু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আব্দুস সেলিম, তাঁতী দলের মনিরুজ্জামান মুনির, কৃষক দলের ইসমাইল হোসেন তালুকদার বক্তব্য রাখেন।