দুদকের মামলায় তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকে আদালতের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি।
দুদকের ওই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে দলটি বলেছে, বিচারিক আদালতের ওই আদেশও সরকারের ‘ফরমায়েশে’ দেওয়া।
অবৈধ সম্পদের মামলায় বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক ও তার স্ত্রী জোবায়দার সম্পতি ক্রোক করার আদেশ দেয়।
যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক ও জোবায়দাকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ হয়।
তার দুদিন পন শনিবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি, যাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি অভিযোগ করে এলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলে আসছেন, আদালতের উপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “প্রতিহিংসাপরায়ণ এই সরকার তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক অভিযোগে মামলা ও রায় দিয়ে গোয়েবলসের মতো মিথ্যাচার করছে।
“তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তা অবান্তর, ভিত্তিহীন, অমূলক। যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশী।”
দুর্নীতি দমন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশন যেন আজ বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকার আবারও নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। আর এই চক্রান্তের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।”
বিস্তারিত উল্লেখ না করে মোশাররফ বলেন, “আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, যে সকল সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোন দলিলে বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নাই, তাকে সেসব সম্পত্তির গায়েবী মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তারেক রহমান এবং ডা. জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কাল্পনিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
বিএনপির আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে এমন মামলা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মোশাররফ। তার নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, “জনগণের স্রোত দেখে ভয়ের কারণেই কিন্তু তারা (সরকার) তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা চালু করে ক্রোক করার এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করা বা দুর্বল করা। তবে এই কর্মকাণ্ডে কোনো কাজ হবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, এ জে মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, কায়সার কামাল, মীর সরাফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমানের সম্পত্তি ক্রোকে আদালতের আদেশের প্রতিবাদ জানাতে শনিবার সকাল থেকে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলও বের করে।