আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিতের কথাও বলা হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টির ইশতেহারে।
Published : 23 Dec 2023, 12:57 PM
শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
২৮ দফার ইশতেহারে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা, দুর্নীতি দমনে বিশেষ আদালত গঠন করে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা, পাচার হওয়ার অর্থ ফেরত আনা, ঋণ খেলাপি রোধ, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধন, স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন, শ্রমিক-কৃষক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে শনিবার ইশতেহার তুলে ধরেন দলটির পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল।
সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা ২৮ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করছি।
“আমরা নির্বাচন করছি ১৪ দলগতভাবে এবং পাশাপাশি এবারের নির্বাচনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যে আমরা আলাদাভাবেও প্রার্থী দিয়েছি। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ২৩ জন প্রার্থী আমাদের প্রতীক হাতুড়ি মার্কায় নির্বাচন করছেন। পার্টির দুই জন প্রার্থী ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করছেন।”
বিএনপিসহ বিরোধী সমমনা জোট ও দলগুলোর বর্জনের মধ্যে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির দুইজন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন
তারা হলেন, বরিশাল-২ আসনে রাশেদ খান মেনন, রাজশাহী-২ আসনে ফজলে হোসেন বাদশা।
নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করলে নারী নেতৃত্ব বিকাশে সংসদের সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা চালুর কথা জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পাটি।
পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল বলেন, “সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলায় কর্মসংস্থান স্কিম চালু, আইনি সুরক্ষাসহ জাতীয় ন্যুনতম মজুরির মানদণ্ড নির্ধারণ, পরিকল্পিত ব্লু ইকোনমি, কোচিং ও নোট ব্যবসা বন্ধ, আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা, পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইনে নারীর প্রতি যে বৈষ্যম রয়েছে, তা দূর করে ‘ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড’, এবং বাজার ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ফড়িয়া প্রথা ও মজুতদারি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ইশতেহারের ঘোষণার অনুষ্ঠানে বিএনপি ও সমমনাদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিগত কয়েক মাস ধরে বিরোধী পক্ষ বিএনপিসহ মিত্ররা একটা লড়াই সংগ্রাম করছেন, আন্দোলন করছেন নির্বাচন বাতিলের অথবা সংস্কারের অথবা নানাবিধ তাদের দাবি-দাওয়া…সুনির্দিষ্ট নির্বাচন বাতিলের দাবিটাই করছেন।
“নির্বাচন বাতিলের দাবি করতে গিয়ে তারা দেশটাকে যে জায়গা নিয়ে গেছেন…আপনারা দেখছেন ট্রেন পুড়ছে…ছোট্ট শিশু মায়ের কোলে অঙ্গার হয়ে গেল, ট্রেনের মধ্যে পুড়ে মারা গেল, ট্রাক পুড়ছে, মুরগি বহনকারী ট্রাক দাউ দাউ করে জ্বলছে, রেল লাইন উপড়ে ফেলা হল কেটে….এরকম একটি জটিল পরিস্থিতি। পাশাপাশি বিশ্ব পরিস্থিতি।”
তিনি বলেন, “একটি বিশেষ দেশের রাষ্ট্রদূত তার অসম্ভব রকমের দৃষ্টিকটূ দৌড়ঝাঁপ, যা কূটনৈতিক আচারকে লঙ্ঘিত করে, তা আমরা দেখেছি এবং গোটা বাংলাদেশকে একটা অস্থিরত পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হল।”
২০০৪ সালে সীমান্ত অঞ্চলে জামায়াতে ইসলামীর ‘তাণ্ডবের’ কথাও তুলে ধরেন এই পলিটব্যুরোর সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, আনিসুর রহমান মল্লিক, শরীফ সাফী, এনামুল হক ইমরান, তপন বসু, কামরুল আহসান উপস্থিত ছিলেন।