নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে নানান ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
Published : 07 Nov 2023, 12:33 AM
জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আনুগত্য, অসীম সাহস ও দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশিত পথে মহান মুক্তিযুদ্ধে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় চার নেতা। জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে গেছেন, কিন্তু বেঈমানি করেননি।
"আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আদর্শে অটুট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজন হলে পিতার মতো আমরাও নিজেরাও জীবন দিয়ে যাব।"
জেল হত্যা দিবস ও জাতীয় চার নেতা স্মরণে সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি‘র স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
চার নেতার একজন এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালে ১৫ অগাস্টে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড এবং তেসরা নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস নিয়ে বড় করে আলাদা সাবজেস্ট হিসেবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যেখান থেকে আমাদের নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে নানান ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশবিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। এই সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকমীদের অনেক কিছু করার আছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।“
অনুষ্ঠানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম কন্যা সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বলেন, “আমার আব্বাকে জেলখানায় দেখতে গেলাম, অনেক কথা হল। আম্মা আব্বাকে বললো, ‘আপনার দুই মেয়ে আপনাকে নিয়ে খুব চিন্তা করে’। আব্বা বললেন, ‘চিন্তা করো না, আমি খুব শীঘ্রই তোমাদের কাছে চলে আসব।
"৪ তারিখ বিকালবেলায় জেলখানা থেকে আমাদের কাছে একটি ফোন আসল, আব্বা হয়ে গেল মৃতদেহ। আব্বা কথা রেখেছেন- তিনি ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসলেন, কিন্তু নিথরদেহে।"
কিশোরগঞ্জ-১ আসনের এ সংসদ সদস্য বলেন, “সামনে নির্বাচন আসছে, শতবাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক নিয়মে। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখব।”
ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র তানভীর শাকিল জয় বলেন, “মানবজাতির ইতিহাসে জঘন্যতম দিন তেসরা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস। মৃত্যু অবধারিত জেনেও খন্দকার মোস্তাকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন জাতীয় চার নেতা। এই সাহস ও ত্যাগ এবং নেতার প্রতি আনুগত ও দেশের প্রতি ভালোবাসা বিরল।”
সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য জয় বলেন, “খুনিদের উত্তরসূরি দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এই প্রজন্ম আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় জাতীয় চার নেতার ত্যাগ ও সাহস নিয়ে যতটুকু এগিয়ে যেতে থাকব, এই মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে সেটি ততটা সহযোগিতা করবে।”
সভায় তাজউদ্দীন আহমদের জ্যেষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদ রিপি বলেন, “আমার পরিবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তিনটি দাবি জানিয়েছি। দাবি তিনটি হলো, ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তক ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা।
“এগুলো আমাদের তুলতে হবে কেন, এগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে দাবিগুলো বাস্তবায়ন হওয়া দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন, এটি আমাদের জন্য সুখবর।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্লোগান ৭১’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘স্লোগান ৭১’ এর সভাপতি নয়ন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অমির সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিক ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।