আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি হামলায় পণ্ড

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2022, 12:22 PM
Updated : 7 Oct 2022, 12:22 PM

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগের হামলায় তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় বলে পরিষদের নেতারা দাবি করেন।

ছাত্রলীগের হামলায় পরিষদের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন জানিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, “ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের এলোপাতাড়ি পিটিয়েছেন।”

আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করার কথা জানান তিনি। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক নেতা।

২০১৯ সালে বুয়েটের হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনে মারা যাওয়া শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভার আয়োজন করেছিল ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’, যা গঠন করেছিল ছাত্র অধিকার পরিষদ।

পরিষদের নেতারা বলছেন, শুক্রবার কর্মসূচির শুরুর পর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার ও মাইক ভেঙে দেয়, ব্যানার পুড়িয়ে ফেলে। তাদের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা আদিব বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। লাঠিসোঁটা নিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে।”

তবে ঘটনাস্থলে থাকা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তারা (ছাত্র অধিকার) ক্যাম্পাসে বহিরাগত, মৌলবাদীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করতে এসেছিলাম, তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কিনা। এসময় তারা কিছু না দেখিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করে।”

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ফোন করা হলে তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

রমনা বিভাগের পুলিশ উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্র অধিকার পরিষদ রাজু ভাস্কর্যের কাছে বক্তব্য দিচ্ছিল, টিএসসিতে তখন সম্ভবত কৃষিমন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠান চলছিল এবং অনেক নেতৃবৃন্দ সেখানে এসেছিলেন।

“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্র অধিকারের নেতাদের মাইক ঘুরিয়ে বক্তব্য দিতে বলেন। এ নিয়ে ওই সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির একটি ঘটনা ঘটে এবং একজনের মাথা কেটে যায়।”

তাকে যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়, ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মীরাও সেখানে ছিলেন। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা জরুরি বিভাগে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সেখানেও উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ।

তিনি বলেন, “পুলিশ তখন ছাত্র অধিকারের ১২ থেকে ১৪ জনকে থানায় নিয়ে আসেন। আমরা দুপক্ষের কথাই শুনছি। আর যেহেতু একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে এবং আহতও হয়েছেন, তাই  আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”