গত বছরের আগস্ট থেকে পাঁচ মাস হাসপাতালটিতে ভর্তি ছিলেন বিএনপি নেত্রী। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের চার দিনের মাথায় তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন।
Published : 13 Mar 2024, 10:09 PM
কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন রাতে সাড়ে ৯টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ম্যাডামকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। কয়েকটি পরীক্ষা একটু সময় লাগবে। সেজন্য উনাকে ভর্তি করা হয়েছে। পরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড উনার চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।”
গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালের পথে রওনা হন। এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাত সাড়ে ৮টায় বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান বিএনপি নেত্রী।
সর্বশেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। পরে সেদিন রাতে আবার ‘ফিরোজা’য় ফিরে আসেন।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী আর্থাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট এভারকেয়ারে ভর্তি হওয়ার পর টানা ৫ মাস সেখানেই ছিলেন খালেদা জিয়া। এ সময় তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ করে দিতে বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানানো হয়। সরকার রাজি না হওয়ার পর বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ একটি দল ঢাকায় এসে তার চিকিৎসা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস এবং হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) সম্পন্ন করেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের চার দিন পর গত ১১ জানুয়ারি বাসায় ফেরেন তিনি। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি আবার এভারকেয়ারে যান। সেই রাতেই ফিরে আসেন তিনি।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
তার সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পরপর বাড়ানো হলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। সেই রায়ের বিরুদ্ধে তার এবং সাজা বাড়াতে দুদকের আপিলের পর ওই বছরেরই অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও সাজা হয় খালেদা জিয়ার।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৩০টির বেশি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।