“বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয়, আবার যদি সরকার গঠন করতে পারি পুরো বাংলাদেশকেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব,” বলেন তিনি।
Published : 20 Dec 2023, 12:35 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো দল চাইলে নির্বাচনে না আসতে পারে; কিন্তু আগুন দিয়ে মানুষ মারার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক ভোটের প্রচার শুরুর আগে বুধবার সকালে সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ হরতাল-অবরোধ চায় না, তারা নির্বাচন চায়।
“যারা নির্বাচন করবে না, করবে না। কিন্তু আগুন দিয়ে মানুষ মারা। আগুন দিয়ে সরকারি সম্পত্তি… এটা জনগণের সম্পত্তি। নতুন নতুন কোচ, নতুন রেল, সেই লাইন তুলে ফেলে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করা। এটা তো সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী কাজ, জঙ্গিবাদী কাজ। আর সেই সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট।”
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ সংঘর্ষে পণ্ড হয়ে গেলে পরদিন থেকে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে তাদের এই কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়া হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই।
মঙ্গলবার ভোরে হরতাল শুরুর আগে ঢাকায় ঢোকার সময় নাশকতার শিকার হয় নেত্রকোণা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দেওয়া হলে তা আরও দুটি বগিতে ছড়ায়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভানোর পর এক মা ও তার শিশু সন্তানসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৪ সালেও একই কাজ করেছে। এবারও তারা হরতাল দিয়েছে, মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি।
“তাদের বোঝা উচিত, এদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, ভোট দিতে চায়। কিন্তু সেখানে আমরা কী দেখলাম? রেলে আগুন দিল, একটা মা সন্তানকে নিয়ে সেই আগুনে পুড়ে মারা গেল। এর চেয়ে কষ্টের দৃশ্য আর হতে পারে না। নারী-শিশুর ওপর হামলা, জজ, সাংবাদিক, পুলিশের ওপর হামলা কোন ধরনের রাজনীতি?”
এ কথা বলার সময় গলা ধরে আসে শেখ হাসিনার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে এলে ‘জনগণের কল্যাণ হয়’। সেজন্য আবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
“আজকে আমি সিলেটে এসেছি। এখানে এখন কোনো ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষ নাই। প্রত্যেকটা গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষকে আমরা ঘর করে দিতে পেরেছি। মানুষের মৌলিক চাহিদা আমি পূরণ করে যাচ্ছি।
“যেটুকু বাকি আছে ইনশাআল্লাহ আগামীতে নির্বাচন, বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয়, আবার যদি সরকার গঠন করতে পারি পুরো বাংলাদেশকেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব।”
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে বুধবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সরকারপ্রধান। ছোট বোন শেখ রেহানাও এ সফরে তার সঙ্গে আছেন। বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
সিলেটে পৌঁছে শুরুতেই শাহজালালের মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে যান হযরত শাহপরাণের মাজারে।
সিলেট সার্কিট হাউজে দুপুরের খাবার শেষে বিকাল ৩টায় তিনি যোগ দেবেন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভায়। এর মধ্য দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক ভোটের প্রচার শুরু হবে।
আরো পড়ুন: