“জিয়া দরখাস্ত করে বঙ্গবন্ধুর কাছে, কাকুতি মিনতি করে বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছিলেন; প্রমাণ আছে,” বলেন তিনি।
Published : 23 May 2024, 05:01 PM
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতে খুন হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপকর্মে যুক্ত থাকার যেসব প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যমে আসছে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তার কথায়, “আপনারা (সাংবাদিকরা) এখন বলছেন, কলকাতায় চোরাকারবারি... তো আমি সাংবাদিকদের বলি, তিন তিনবার জাতীয় সংসদে এমপি নির্বাচিত হয়েছে। তখন আপনারা কি এ তথ্যটা এনেছিলেন? এখন ভারতীয় সাংবাদিকরা কোন তথ্য আনল, সেটার উদ্ধৃতি দিচ্ছেন কেন?
“আপনারা তো এদেশের নাগরিক। সে (আনার) যদি অপরাধী হয়, তাহলে সে কথা আপনাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কেন আসলো না? এটা আমারও প্রশ্ন।"
বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের নবগঠিত যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্যদের পরিচিতি সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ বলেন।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন।
এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। বুধবার সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার।
তারপরই আনার সোনা চোরাচালানসহ নানা অপকর্মে যুক্ত ছিলেন বলে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে থাকে। বলা হচ্ছে, ওই সব কারবারের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছেন এই সংসদ সদস্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সংসদ সদস্য কলকাতায় মারা গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ইনভেস্টিগেশন সম্পন্ন হবার আগে আমরা তো বলতে পারছি না। তবে আওয়ামী লীগের সে কী ছিলো, সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু সে যে এলাকার (জন) প্রতিনিধি ছিল, সে এলাকায় গিয়ে দেখবেন- তার জন্য শোকার্ত মানুষ। প্রতিনিয়ত সারা এলাকায় ঘুরে বেড়াতো মোটরসাইকেলে করে।
“তাকে আমরা নমিনেশন দিয়েছি তার জনপ্রিয়তার জন্য। এখন সে ভেতরে কোনো অপরাধ করে কি না...প্রধানমন্ত্রী কিন্তু জিরো টলারেন্স। কোনো অন্যায়কারী, অপরাধী দলের লোক হলে তিনি কিন্তু ছাড় পাবেন না। কিন্তু এটা তো প্রমাণিত হতে হবে।"
দেশের অর্থপাচারের সঙ্গে বিএনপিই জড়িত মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অর্থপাচারের জন্য আপনারা (বিএনপি) বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অপরাধী। সিঙ্গাপুরে, আমেরিকায় অর্থপাচার কে করেছে? সে অর্থপাচারকারী তারেক রহমান এবং কোকো। এই দুজনের পাচার করা অর্থের একটা অংশ সিঙ্গাপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
“এফবিআই ঢাকায় এসে তারেক রহমানের মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারা নিজেরা যে অপরাধের জন্য অপরাধী, সে দায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের উপর চাপাতে চায়। এটা যে কত বড় মিথ্যাচার!"
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি একটা প্রশ্ন করেছি, ১৫ অগাস্টের সাথে যদি জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকে, তাহলে কিলারকে নিরাপদে বিদেশে কে পাঠাইছে?
“বিভিন্ন দূতাবাসে খুনিদের চাকরি দিয়েছে। পঞ্চম সংশোধনীতে খুনিদের বিচার রোধ করার জন্য জিয়াউর রহমান সংবিধানের আইনে খুনিদের বিচার বন্ধ করলেন। কেন তিনি সেটা করতে গেলেন?"
বিএনপির আরেক নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “মেজর হাফিজ বড় বড় কথা বলেন, হাফিজ সাহেবকে বলি, আপনি যে বইটি স্বাধীনতার পরে লিখেছিলেন, প্রথম সংস্করণে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে তথ্য আপনি দিয়েছিলেন, বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর সে তথ্যটি কেন পাল্টে দিলেন? এর জবাব কী?"
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেনাপ্রধান বাকশালে যোগ দেওয়া সঠিক ব্যক্তি, কিন্তু উপ-প্রধান (জিয়াউর রহমান) বাকশালে যোগ দেওয়ার উপযুক্ত ছিলেন না। তিনি দরখাস্ত করে বঙ্গবন্ধুর কাছে, কাকুতি মিনতি করে বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। প্রমাণ আছে।
“এই জিনিসটিকেও তারা ধামাচাপা দিতে চায়। তিনি বাকশাল কমিটির ৭১ নাম্বার সদস্য ছিলেন।"