যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে বিএনপি।
Published : 14 Jul 2024, 08:25 PM
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন জোরদারে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বিএনপির ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে এ বৈঠক হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বার বার আমরা দেখছি যে, সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে, সংকট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে যে বিদ্যমান সংকট তৈরি হয়েছে, গণতন্ত্রহীনতার সংকট, দূর্নীতি-অনাচারে দেশ ছেয়ে গেছে এবং স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের নিযুক্ত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা দুর্নীতি করে দেশটাকে ফোকলা করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো শূন্য হয়ে যাচ্ছে, টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। দ্রব্যমূ্ল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
“দেশের স্বার্থহানিকর চুক্তি-সমঝোতা করা হচ্ছে। সীমান্তে মানুষ হত্যা হচ্ছে, অরক্ষিত থাকছে, নানা কারণে আমরা মনে করি যে, এক দফার দাবিতে আমরা লড়াই শুরু করেছি ওই এক দফা বাস্তবায়ন ছাড়া সংকটের সমাধান হবে না। আর সেই এক দফার যে লড়াই, সেই লড়াইকে এগিয়ে নিতে আমরা আগামী দিনে কর্মসূচি ঘোষণা করব। ওই কর্মসূচি ঘোষণার প্রেক্ষিত হিসেবে আজকে আমাদের মধ্যে এই আলোচনা হয়েছে।”
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে বৈঠকে বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামি ঐক্যজোটের একাংশের মাওলানা আবদুল করিম, লেবার পার্টির একাংশের ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির একাংশের শামসুদ্দিন পারভেজ ও ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
নজরুল ইসলাম খান ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গত তিন দিনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক বাম গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়বাদী সমমনা জোট, এনডিএ, গণফোরাম, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
‘কোটা সংস্কার প্রসঙ্গে’
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আপনারা জানেন যে, ছাত্রদের দাবি ছিল কোটা সংস্কারের, কোটা বাতিল। সেই দাবি প্রতি বিএনপি সমর্থন জানিয়েছে। সেই ছাত্ররা এখন এই দাবিতেই আন্দোলন করছে।
“দেশের প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা শপথ গ্রহণ করেন, তখন তাদেরকে বলতে হয় যে, কখনো অনুরাগ বা বিরাগে মুখোমুখি হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। কিন্তু আমরা দেখলাম যে, প্রকাশ্যে ঘোষণা করেই একটা বিরাগের বশবর্তী হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন– ‘কোটাই বাতিল হয়ে করে দিলাম’। এটা কেউ যুক্তিসঙ্গত মনে করে না, মনে করে এটা বিরাগের বশবর্তী হয়ে এটা করা হয়েছে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ইভেন সরকারির দলের অনেক লোকও বলে ওইভাবে সিদ্ধান্ত সঠিক হয় নাই এবং ওইভাবে করার কারণেই হাই কোর্ট সেটা বাতিল করেছিল।”
এসব সমস্যার সমাধান ‘এভাবে হয় না’ মন্তব্য করে নজরুল বলেন, “কয়েকটা বছর ধরে এই আন্দোলনকে জিইয়ে রেখে এটা অর্থহীন করা হয়েছে। উচিত ছিলো যেটা সেটা হল যে, সংস্কারের ব্যবস্থা করা এবং যুক্তিসঙ্গত সংস্কার। আমার দলের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তার বাইরে আমাদের কোনো বক্তব্য নাই।”