‘‘স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গিয়েছে, বহুবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম তা আজও পূরণ হয়নি,” বলেন তিনি।
Published : 16 Mar 2025, 01:08 AM
যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
শনিবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের অংশীজনদের সম্মানে দলের ইফতার আয়োজনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘যৌক্তিক সময় বলতে সংস্কারের জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন তার বেশি নয়।”
শফিকুর বলেন, ‘‘স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গিয়েছে, বহুবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম তা আজও পূরণ হয়নি। কেন তা পূরণ হয়নি তা বিশ্লেষণের অবকাশ নেই।
”আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি মেলাতে পারছি না। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে, তারাই নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে অস্থিরতা চলে আসছে। জুলুম নির্যাতন কখনই বন্ধ হয়নি। জাতি অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়নি।”
মাগুরায় আট বছরের একটি শিশু নির্যাতনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ‘অত্যন্ত লজ্জা ও বেদনার’ বলে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা তার জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
”রাষ্ট্র যদি মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারে তাহলেই মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারে। আমাদের দেশে শিক্ষিত লোকের অভাব নেই। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার অভাব রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মানুষ সত্যিকার মানুষ হতে পারছে না। দোয়া করি এ জাতিকে যেন আমরা প্রকৃত নৈতিক শিক্ষা দিতে পারি।”
ইফতারে বিএনপির মির্জা আব্বাস ও জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফত মজলিসের মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জুনায়েদ আল হাবিবী, খেলাফত আন্দোলনের মুজিবুর রহমান হামিদী, কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর ও রাশেদ খান, খেলাফত আন্দোলনের হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুনির হোসাইন কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আবদুল হান্নান মাসউদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার রাশেদ প্রধান, ন্যাপের জেবেল রহমান গণি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের ববি হাজ্জাজ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
দৈনিক সংগ্রামের প্রকাশক আবুল আসাদ ও সম্পাদক মীর শাহীদুল হক আজম, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার, দি নিউনেশনের সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম অংশ নেন ইফতারে।
জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জ্যেষ্ঠ নেতা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, আনম শামসুল ইসলাম, এটিএম মাছুম, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ, আবদুল হালিম, মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, মতিউর রহমান আকন্দ, আব্দুর রব, সাইফুল আলম খান মিলন, মুবারক হোসাইন, নূরুল ইসলাম বুলবুল, মুহাম্মাদ সেলিম উদ্দিনসহ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আলী হোসেন এবং জামায়াত-শিবিরের নিহত নেতাদের পরিবারের সদস্য এবং গণঅভ্যুত্থানে বেশ কয়েকটি নিহত পরিবারের সদস্যরা ইফতারে অংশ নেন।