বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনে এবং তার সুস্থতা কামনায় মঙ্গলবার সারা দেশে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার দল।
রোববার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নেতাকর্মীদের এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে তার রোগমুক্তি ও সুস্থতা এবং দেশব্যাপী চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত ও যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুস্থতা কামনায় মঙ্গলবার দেশব্যাপী মহানগর-জেলা-উপজেলা ও থানায় পর্যায়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।”
গত আড়াই দশক ধরে খালেদা জিয়া ১৫ অগাস্ট তার জন্মদিন পালন করে আসছেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা রয়েছে। এবার সেই দিনটিতে আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি না দিয়ে পরদিন দোয়া মাহফিল করার ঘোষণা দেওয়া হল।
বিভিন্ন নথিতে তার আরো জন্মদিনের হদিস পাওয়ায় কোনটি খালেদা জিয়ার প্রকৃত জন্মদিন তা নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। তার জন্মসাল নিয়েও কয়েক রকম তথ্য মিলেছে এর আগে।
এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতবচর জুনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিন সংক্রান্ত নথি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।
খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে পাঁচটি তারিখ ব্যবহার করার কথা সে সময় ওই রিট আবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তার এসএসসির নম্বরপত্রে জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬। বিবাহ নিবন্ধনে জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ৯ অগাস্ট ১৯৪৪। ২০০১ সালে নেওয়া তার মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে জন্ম তারিখ ৫ অগাস্ট ১৯৪৬। আর ২০২১ সালের মে মাসে করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম তারিখ লেখা হয় ৮ মে ১৯৪৬। তিনি জন্মদিন পালন করেন ১৫ অগাস্ট, জাতীয় শোক দিবসে।
বিএনপির ওয়েবসাইট বলা হয়েছে, ১৯৪৫ সালের ১৫ অগাস্ট দিনাজপুরে খালেদা জিয়া জন্মগ্রহণ করেন। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে খালেদা জিয়া চতুর্থ। বাবা এস্কান্দর মজুমদার, মা বেগম তৈয়বা মজুমদা। পৈত্রিক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে বাবার কর্মস্থলে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণতান্ত্রকামী মানুষের আশা-ভরসার এক মূর্ত প্রতীক। সারাটা তিনি জীবন সংগ্রাম করেছেন, রাজনীতি করেছেন। এমন একটি নৈতিকতার মানদণ্ড তিনি তৈরি করেছেন জনগনের কাছে, যে ওয়াদা দেন সেই ওয়াদা থেকে কোনোদিন সরে আসেননি। তিনি সব সময় জনগনের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন।”
“আজকে তাকে (খালেদা জিয়া) বন্দি করে রেখে অবৈধ সরকার অবৈধ কার্য্ক্রম করছে। আজকে যদি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার থাকত, তাহলে বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় রাজনীতিতে তার যে কথা, তার যে কণ্ঠ আমরা সবাই শুনতে পারতাম।… এটা শেখ হাসিনা ভয় পায় বলেই তাকে বন্দি করে রেখেছে। আজ তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”
অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম, গাজীপুরের সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।