নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির ঘোষিত সার্চ কমিটি নিয়ে আগ্রহ নেই বিএনপির।
Published : 05 Feb 2022, 05:30 PM
শনিবার মন্ত্রিপরিষদ সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন জারির পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে দলের অনাগ্রহের কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমি বলি, সার্চ কমিটি আমার জন্য কোনো সাবজেক্টই না, আমি ইন্টারেস্টও না। কারা আছে, কারা না আছে, নিরপেক্ষ তো অন্য ব্যাপার।”
“সুতরাং এটাতে কে থাকলো? আর কে থাকলেই নিরপেক্ষ হয়ে যাবে-এটা তো কোনো কথা না। এ নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্যও করতে চাই না, আমাদের আগ্রহই না।”
সার্চ কমিটি আপনার দৃষ্টিতে নিরপেক্ষ কি না প্রশ্ন করা হলে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘‘আমার কাছে এটি (সার্চ কমিটি) নিরপেক্ষ মনে হয়নি।”
সার্চ কমিটির সদস্যদের নিরপেক্ষতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি তো বলেছি, এ সরকারের আমলে তো এটা অন্য প্লানেট (গ্রহ) থেকে এনে বানাই নাই, এই প্ল্যানেট থেকেই করেছে। সব খাতে সবার খবর জানে কে কী করে? বাংলাদেশের খুব ছোট জায়গা। সবার খবর সবাই জানে।
“আমার মুখ দিয়ে না বলিয়ে আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন।”
শনিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
সার্চ কমিটি নতুন ইসি গঠনের জন্য কমিশনারদের নাম প্রস্তাব করবে। সেই নাম থেকে ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সার্চ কমিটি গঠনের পর বিএনপি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি, একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা আগ্রহও দেখাননি।
নির্বাচন কমিশন গঠনের সংসদে বিল পাসের পরপরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এ আইন মানেন না বলে জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “এটি শুধু আমাদের কাছে নয়, দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, গ্রহণীয় হতে পারে না। আর যে আইন মানুষ গ্রহণ করে না-সেটি কোনো আইনই নয়, সেটাকে কেউ মানবে না, এটাকে কেউ মানবেই না।”
শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য টুকু বলেন, “আমার কথা পরিষ্কার আমরা বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে আগ্রহী না। আমাদের আগ্রহ হলো, এমন একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, এমন একটি প্রশাসন থাকবে যে প্রশাসন একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন জনগণকে দিতে পারবে। যেটা ১৯৯১ সালে দিতে পেরেছে, ১৯৯৬ সালে দিতে পেরেছে এবং ২০০১ সালে দিতে পেরেছে সেই রকম একটা সরকার দরকার।”
নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে বিএনপির কেন আগ্রহ নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার কথা আপনারা বুঝেননি। আমি বলেছি, সরকার নিরপেক্ষ না হলে কমিশন কী করবে? নির্বাচন পরিচালনা করবে সরকার। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন কমিশন দিয়ে কী হবে?”
“নির্বাচন কমিশন তখনই কার্যকর হবে, যখন একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকবে। আমি মনে করি, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে এবং এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হলে মানুষ ভোটও দিতে আসবে না। যেটা অতীতে আমরা দেখেছি।”