ছাত্রদলকে নেতৃত্ব দিতে প্রার্থী ৭৬ জন

ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী ২৭ জন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ৪৯ জন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2019, 01:48 PM
Updated : 12 Sept 2019, 01:52 PM

কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপির ছাত্রসংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে শতাধিক জন মনোনয়ন ফরম কিনলেও মঙ্গলবার সময় শেষ হওয়ার পর দুই পদে মোট ৭৬ জন তা জমা দিয়েছেন।

প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মহড়া দিয়ে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে ফরমসহ কাগজপত্র জমা দেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে প্রার্থীদের সঙ্গে আসা কর্মী-সমর্থকরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‍মুক্তি দাবিতে স্লোগানে মুখর ছিলেন।

সভাপতি পদে কোনো নারী ফরম কেনেননি। সাধারণ সম্পাদক পদে যে তিনজন নারী ফরম কিনেছিলেন, তাদের মধ্যে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান পাপন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ডালিয়া রহমান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের শীর্ষ এই দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে, যাতে সারাদেশে ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সর্বমোট ৭৬টি ফরম জমা পড়েছে। বিক্রি হয়েছিল ১১০টি।”

বুধবার থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন মনোনয়নপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করবেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে গঠিত বাছাই কমিটি।

সাত্তার জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩১ আগস্ট। প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবেন ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত।

এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপিল কমিটি কাজ করছে।

সভাপতি পদে প্রার্থী যারা

আজিম উদ্দিন মেরাজ, মো. ইলিয়াস, হাফিজুর রহমান, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, সাজিদ হাসান বাবু, আল মেহেদী তালুকদার, মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, তানভীর রেজা রুবেল, মো. এরশাদ খান, এবিএম মাহমুদ আলম, মো. আসাদুল আলম টিটু, এম আরজ আলী শান্ত, মো. সুরুজ মন্ডল, মো. আবদুল মাজেদ, মাইনুল ইসলাম, মো. ফজলুর রহমান, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, মুহাম্মদ ফজলুল হক নিরব, আরাফাত বিল্লাহ খান, এসএম আল আমিন, মো. জুয়েল মৃধা, আবদুল হান্নান, মো. শামীম হোসেন, মো. মামুন খান, এসএএম আমিরুল ইসলাম, সুলায়মান হোসাইন ও আল আমিন কাউছার।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী যারা

রিয়াজ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মো. ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার, আবদুল মান্নান, নাদিয়া পাঠান পাপন, এবিএম বাকির জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক, মো. হাসান(তানজিল হাসান), মো. আলাউদ্দিন খান, রাশেদ ইকবাল খান, আমিনুর রহমান, ইকবাল হাসান শ্যামল, ইমদাদুল হক মজুমদার, মো. নাইম হাসান, কেএম সাখাওয়াত হোসেন, শাহনেওয়াজ, এএএম ইয়াহইয়া, ডালিয়া রহমান, সোহেল রানা, মোহাম্মদ কারীমুল হাই নাঈম, মো. মহিনউদ্দীন রাজু, আরিফুল হক, মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান রিংকু, মো. আবুল বাশার, মো. মিজানুর রহমান সজীব, মো. জুলহাস উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির, সাদিকুর রহমান সাদিক, আবদুল মোমেন মিয়া, কাজী মাজাহারুল ইসলাম, আজিজুল হক সোহেল, শেখ মো. মশিউর, মো. জামিল হোসেন, শেখ আবু তাহের, মো. তবিবুর রহমান সাগর, মাজেদুল ইসলাম, মাহমুদুল আলম শাহিন, মো. জোবায়ের আল মাহমুদ রিজভী, নাজমুল হক হাবীব,  জহিরুল ইসলাম (দিপু পাটোয়ারি), আনিসুর রহমান সুমন, এমএম বাবুল আক্তার শান্ত ও মুন্সি আনিসুর রহমান।

প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা

ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে।

২০০০ সাল থেকে এর পরে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই কেবল প্রার্থী হতে পারবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে এবং পাসের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি ছিলেন রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আকরামুল হাসান।

শুরুতে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘদিন পর এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়, যাতে ৭৩৬ জনকে পদ দেওয়া হয়েছিল।

গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলে প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এবার বয়সের শর্ত যোগ করা হলে তা নিয়ে সংগঠনটির একাংশ প্রকাশ্যে বিরোধিতায় নেমেছিল। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও ভাংচুর চালানো হয়। তখন কয়েকজনকে বহিষ্কারও করা হয় ছাত্রদল থেকে। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।