আদালতে হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই খালেদার মুক্তি সম্ভব: রিজভী

খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্যারোলের নামে সরকার ‘অশুভ’ চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2019, 08:37 AM
Updated : 18 April 2019, 08:37 AM

সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “প্যারোল নিয়ে চলছে একেবারে সরগরম অপ্রপ্রচার। এই অবৈধ সরকার দেশনেত্রীর জীবন হুমকির মুখে ফেলে সুদুরপ্রসারী স্বার্থসিদ্ধির ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।

“আইনজীবীরা বলেছেন, তাকে (খালেদা জিয়া) যে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে তা সহজ জামিনযোগ্য। আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি চান তিনি।”

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে বলব, দেশনেত্রীকে নিয়ে মাইনাস ফর্মুলা বন্ধ করুন। প্যারোলের নামে মাইনাস তত্ত্বের যে অশুভ চক্রান্ত চলছে, এই চক্রান্ত করে লাভ হবে না। তার জামিনে আর বাধা দেবেন না। আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দিন। আদালতের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই আমাদের প্রিয় দেশনেত্রী আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে বেরিয়ে আসবেন।”

গত কয়েকদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘সূত্রবিহীন’ খবর সম্পর্কে বিএনপিনেতা রিজভী বলেন, “সরকারপন্থি কয়েকটি মিডিয়া প্রতিদিন মনগড়া প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাগুলোর সাথে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জড়িত বলে ব্যাপক গুঞ্জন আছে। প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সফল করার জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে।”

বিএসএমএমইউ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে তিনি বলেন, “তিনি শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত, হাত নাড়াতে পারছেন না, আর্থ্রাইটিসের কারণে পা নাড়াতে পারছেন না। তাকে সুচিকিসা দেওয়া হচ্ছে না।

“গতকালও চিকিসকরা বলেছেন তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এই অবস্থায় দেশনেত্রী তার পছন্দ মতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান, গোটা দেশবাসী চায়- এখানে ওইসব গণমাধ্যমে কোনো নিউজ আমরা দেখি না।”

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “নয়দিন হল নুসরাত মারা গেছেন। অথচ এই দুষ্কর্মের সহযোগিতাকারী সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর সোনাগাজী থানার ওসি নুসরাতকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে লাঞ্ছিত করে, সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেও তার কোনো বিচার হচ্ছে না।

“অন্যদিকে যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগে, সেই পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সরকার পুলিশ প্রশাসনের কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলেছে সরকার। এই সরকারের কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট হচ্ছে যে, এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তারা জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য দোষীদের সাজা দেওয়া হবে বলে অভিনয় করছে।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আহমেদ আজম খান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবে রহমান শামীম, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল খালেক, রফিক হাওলাদার, নাদিম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।