সরকার অনুভূতিশূন্য, বোধহীন: রিজভী

বাংলাদেশকে এখন ‘গুমরাজ্যে’ পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2019, 07:07 AM
Updated : 24 March 2019, 07:07 AM

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সরকার অনুভূতিশূন্য ও বোধহীন। তারা গুম-খুনের নির্দেশ দিয়ে দানবরূপে জনগণের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে।

“দেশ বর্তমান ও অনাগত দিনের দুঃশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা, হতাশায় ভরে গেছে। সরকার বেআইনি পথে হাঁটছে বলেই এই শ্বাসবিরোধী পরিবেশ।”

রিজভী অভিযোগ করেন বিএনপি ও সরকার বিরোধী অসংখ্য নেতাকর্মীকে এখনও গুম করে রাখা হয়েছে।

“গুম ঘর থেকে কেউ সৌভাগ্যক্রমে ফিরে আসলেও অনেকের স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা-স্বজনরা দিনরাত চোখের পানিতে বুক ভাসাচ্ছেন হারিয়ে যাওয়া তাদের প্রিয়জনদের জন্য। তারা কার কাছে বিচার চাইবে, কার কাছে যাবে? দেশটাকে এখন শেখ হাসিনা ‘গুমরাজ্য’ বানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, এই গুম-খুন বন্ধ করুন।”  

১৫ মাস নিখোঁজ থাকার পর সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের ফিরে আসার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এখনও গুম আছেন ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল আলম হিরু, হুমায়ুন কবীর পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম, মাহবুব হাসান, মাজহারুল ইসলাম, আদনান চৌধুরী, পারভেজ হোসেনসহ প্রায় হাজার খানেক মানুষ। এখনো নিরুদ্দেশ আছেন বিগ্রেডিয়ার আবদুল্লাহিল আমান আজমী, ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাশেম (আরমান)। এসমস্ত গুম হওয়া মানুষের জন্য তাদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা কাঁদছেন।”

রিজভী বলেন, “বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট এক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টার বিরুদ্ধে তিনজনকে গুম করার অভিযোগ উঠেছে। প্রচ্ছায়া লিমিটেডের তিন কর্মচারীকে আইনের অপব্যবহার করে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। সম্প্রতি এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশে আল-জাজিরা সম্প্রচার বন্ধ  করে দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ থেকে এখন আর তাদের ওয়েব সাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। এর মাধ্যমে সরকার আবারও প্রমাণ করল সত্য গলা টিপে রাখতে চায় তারা।”

গত ১০ বছরে সরকারে রোষানলে ‘চ্যানেল ওয়ান’, ‘ইসলামিক টিভি’, ‘দিগন্ত টিভি’, ‘পিস টিভি’,‘আমার দেশ’সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাকশাল পুণঃপ্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গণমাধ্যমেকে হত্যা করছে তারা। সত্যকে তারা স্তব্ধ করে রাখতে চায়। স্বৈরাচার দীর্ঘায়িত হলে নাৎসীবাদের উত্তরণ ঘটে। এই সরকারও নাৎসীবাদের উপাসক।”

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে রিজভী বলেন, “এই নির্বাচনে ভোটার যাচ্ছেনা, ভোটারশূন্য কেন্দ্র। খাসির মাংস দিয়ে খিচুরি খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে ক্ষমতাসীনরা, তারপরও ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে পারছে না।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, নাজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, মনির হোসেন, আবদুল খালেক, রফিক হাওলাদার, নাদিম চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, সরদার মো. নুরুজ্জামান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।