তার আদর্শ, দর্শন ও জীবন বোধ থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে মঙ্গলবার নগর ভবনে এক নাগরিক শোকসভার আয়োজন করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
ওই সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “সৈয়দ আশরাফ ছিলেন সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বের একজন ব্যক্তি। তিনি একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন। সৈয়দ আশরাফ সারাটা জীবন রাজনীতি করেছেন, কিন্তু রাজনীতি থেকে তিনি কোনো সুযোগ নেননি। রাজনৈতিক ও ব্যক্তি জীবনসহ সবক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সৎ ও দেশপ্রেমিক।
“সৈয়দ আশরাফ রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন- রাজনীতি করলে দুর্নীতি ছাড়েন, দুর্নীতি করলে রাজনীতি ছাড়েন। কিন্তু আমরা প্রায়ই দেখি রাজনীতির নামে অন্যান্য পেশায় প্রবেশ করে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এই জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।”
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
৬৭ বছর বয়সী আশরাফ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার সততা ও নির্লোভ মানসিকতার প্রশংসা করছেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “মানুষ মারা গেলে কিছু দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সম্পদ রেখে যান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অদৃশ্যমান সম্পদের পরিমাণ বেশি। তার সততা, ন্যায়পরায়নতা ও আদর্শের মতো সম্পদক অনুভব করার বিষয়।”
স্মরণ সভায় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, “আশরাফ ভাই কেবল আওয়ামী লীগের নেতাই ছিলেন না, তিনি তার গুণাবলী দিয়ে সারা দেশের মানুষের নেতা হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।
“জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য সন্তান ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল। তার বিরুদ্ধে, তার চরিত্র নিয়ে কথা বলার লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি তার ব্যক্তি স্বার্থে কোনো কিছু করেননি, দেশের স্বার্থে আজীবন কাজ করে গেছেন।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, “সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। আমার দেখা ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে আশরাফুল ইসলামের মতো নেতা হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া যাবে।”
তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের সৈয়দ আশরাফের আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তার কোনো কথা নিয়ে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে দেখিনি।
“কারণে অকারণে প্রতিপক্ষকে আঘাত করে কখনো বক্তব্য দেননি তিনি। শালীনভাবে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন।”
নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা যেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মতো আচরণ করেন সেই প্রত্যাশা করেন সাঈদ খোকন।
সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে শোকসভায় অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, কাউন্সিলর আবু আহমেদ মান্নাফি ও কাউন্সিলর হেলেনা আক্তার বক্তব্য দেন।