সোমবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিকালে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটি সুস্থ রাজনৈতিক ধারা নয়, এটি অসুস্থ রাজনীতির প্রকাশ বলে আমরা মনে করি।”
পাঁচ বছর রাজশাহীর মেয়রের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালে বুলবুলের কাছে হেরেছিলেন লিটন। এবার দলের প্রতীক নৌকা ও ধানের শীষ নিয়ে দুজন ভোটের লড়াইয়ে নামেন।
কারচুপিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নগরীর ইসলামিয়া কলেজ কেন্দ্রে দুপুর ১টা থেকে ভোটগ্রহণের শেষ সময় বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন বুলবুল।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটন বলেন, “এর আগেও একবার তিনি (বুলবুল) ব্যানার সরানো নিয়ে রাস্তায় অবস্থান ধর্মঘট করার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সস্ত্রীক। পরেরদিন আমরা সস্ত্রীক দেখিনি, অন্য একজন নারী কাউন্সিলরকে নিয়ে রাস্তায় বসেছিলেন। এতে কোনো কর্মী ছিল না।
“আজকেও তার পাশে কোনো কর্মী ছিল না। এটি তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রমাণ করে। এখানে যে সুস্পষ্ট দলীয় বিভাজন, সেটিই প্রমাণ করে।”
লিটন বলেন, “যেভাবে তিনি একটি কলেজে বসে থাকলেন, দীর্ঘ প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টা ধরে, নিজের ভোটটি প্রদান করলেন না, এটির মাধ্যমে তিনি কী প্রমাণ করতে চাইলেন? সেটা কেবল তিনিই জানেন। তিনি এটার ব্যাখ্যা দেবেন নিশ্চয়।”
নিজের ভোটও না দেওয়ার কারণ দেখিয়ে বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, “যেখানে ভোটের মূল্য নাই; যেখানে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা ভোট চুরির সাথে সম্পৃক্ত, সেখানে আমার ভোটের কোনো দাম নেই।”
রাজশাহীর ১৩৮টির মধ্যে ২৮টির মতো কেন্দ্রে ঘুরেও ‘কোনো বিশৃঙ্খলা, বিভ্রাট, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আইনশৃঙ্খলা বহির্ভূত কাজ’ দেখেননি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী লিটন।
তিনি বলেন, “সকাল বেলা ভোট দিয়ে যে কথাটি বলেছিলাম যে, দিনটি শান্তিপূর্ণ যাবে, রাজশাহীর মানুষ শান্তিপ্রিয়, শান্তিকামী। সেভাবে দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে পার করেছি আমরা। উত্তেজনা ঘটানোর চেষ্টা যে একেবারে হয়নি, তা নয়। তবে আমাদের নেতাকর্মী, সমর্থকবৃন্দ ও ভোটাররা সেগুলো এড়িয়ে গেছেন, যে কোনোভাবে।”
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য লিটন বলেন, “সারাদিন আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা ঈদের আনন্দের মতো। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভোটের দিন আনন্দের দিনই বটে। সেটা অনেক আগে থেকে আমরা দেখে আসছি।
“এখানে আমাদের আনন্দটা আরও পরিপূর্ণতা পেত, যদি আমাদের প্রতিপক্ষ যিনি মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, তিনি যদি জনগণের রায়টি মেনে নিতেন।”
তিনটি সিটির মধ্যে রাজশাহী সিটির ভোট ‘সবচেয়ে বেশি শান্তিপূর্ণ, সবচেয়ে সুন্দর পরিবেশে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন লিটন।
“খুব উৎসবমুখর পরিবেশে এটা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে বলে আমি মনে করি। মানুষের মধ্যে উল্লাস, উচ্ছ্বাস দেখেছি। শুরু থেকে আমরা বলেছি, জনগণ নৌকার জোয়ারে ভাসছে।”
নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে মন্তব্য করে বিএনপির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেন তিনি।
বিজয়ী হলে বিএনপির প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন কি না- এ প্রশ্নে লিটন বলেন, “বিভিন্ন শরীক দল, নাগরিক সমাজের যেসব লোক নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বুদ্ধি-পরামর্শ নিয়েই দীর্ঘদিন চলেছি, এবারও চলব।”