‘মূল্যহীন’ হয়ে পড়া ভোট দিলেন না বুলবুল

কারচুপিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নিজের ভোটও দিলেন না রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

নিজস্ব প্রতিবেদকও রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2018, 11:15 AM
Updated : 30 July 2018, 11:18 AM

“যেখানে ভোটের মূল্য নাই; যেখানে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা ভোট চুরির সাথে সম্পৃক্ত, সেখানে আমার ভোটের কোনো দাম নেই,” ভোট না দেওয়ার এই কারণ জানিয়েছেন তিনি।

ভোটে জিতে গত পাঁচ বছর মেয়রের দায়িত্ব সামলানোর পর এবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন বুলবুল। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

এবার  ভোটের শুরু থেকে কারচুপির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে আসছিলেন বুলবুল।

সোমবার সকালে রাজশাহীর ১৩৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়া কয়েক ঘণ্টা পর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামিয়া কলেজ কেন্দ্রে মেয়রের ব্যালট পেপার দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ আসে বুলবুলের কাছে।

দুপুরের আগে ওই কেন্দ্রে ছুটে যান বুলবুল। কেন্দ্রের ভেতর ঘুরে এসে প্রতিবাদ জানাতে নিজের ভোট না দিয়ে প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা কলেজের মাঠে বসে পড়েন রাজশাহীর বিদায়ী মেয়র।

বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এসে বুলবুলকে তুলে আনেন।

বুলবুল তখন সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে গণতন্ত্র বিপন্ন’ বলে তার এই প্রতিবাদ।

তিনি বলেন, “পুলিশ প্রশাসন, প্রিজাইডিং অফিসার, নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং অফিসারসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সচিব, তাদের নীল নকশার বাস্তবায়ন রাজশাহীর এই নির্বাচন।  

“২৭ থেকে ৩১টা সেন্টারে গিয়ে ঘুরে দেখেছি, পুলিশের সহায়তায় অনেক কেন্দ্রে ভোট কাটা হইছে। অনিয়ম আমার চোখে ধরা পড়েছে।”

নিজের ভোট না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি প্রার্থী বলেন, “বাংলাদেশের সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ সবাই আজকে নিরূপায়।

“আমার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে যে বিপন্ন গণতন্ত্র। আমি আমার ভোট পর্যন্ত দেইনি। যেখানে ভোটের মূল্য নাই। যেখানে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা, ভোট চুরির সাথে সম্পৃক্ত। সেখানে আমার ভোটের কোনো দাম নেই।”

“আমি মাননীয় অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শুধু এটুকু বলতে চাই- তার নিজের দিকে তাকাতে। তার আশপাশে যে কর্মচারী লোকজন রয়েছে-তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে যে, আমরা সঠিক কাজটি করছি কি না?”

এদিকে বুলবুলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসলামিয়া কলেজ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল শাফি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “উনি (বুলবুল) ১টার দিকে এখানে এসেছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, আমরাও বলেছি।”

ভোটগ্রহণে কোনো সমস্যা ছিল না বলে দাবি করেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।

পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আল শাফি বলেন, “পোলিং এজেন্ট যদি চলে যায়, নিয়োগপত্র যদি ঠিকমত না দেন, তাহলে তো আমরা কাউকে ঢুকতে দিতে পারি না। সাতজনের লিস্ট দিয়েছেন, একজনের স্বাক্ষর ছিল না। বাকিদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।”