“সমস্যার সমাধান করা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব; যদি না পারেন তাহলে দায়িত্ব নিয়েছেন কেন,” বলেন তিনি।
Published : 15 Nov 2024, 07:59 PM
গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাস হয়ে গেলে এখনও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেছেন, “এভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এইসব সমস্যার সমাধান করা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব।
“যদি না পারেন তাহলে দায়িত্ব নিয়েছেন কেন? তিন মাস হয়ে গেছে (দায়িত্ব গ্রহণের), মানুষ আর বেশি দিন আপনাদের সময় দেবে না।”
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের সমাবেশে বক্তব্য দেন সাকি।
গত ১৫ বছর রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ আন্দোলন করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০১৯ সালের পরে আমরা স্পষ্ট বলেছি, বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর পরে ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচন, ২০১৮ সালে মধ্যরাতের নির্বাচন এবং ২০২৪ সালে আমি-ডামির নির্বাচন।
“এই সবকিছুর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র, সংবিধান, আইনকানুন সবকিছুকে তারা যে ব্যবস্থায় পরিণত করেছে, তাতে আর একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভব নয়।”
সে কারণে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন পরবর্তী বাংলাদেশে ‘একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে’ মন্তব্য করে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সাকি।
তার ভাষ্য, “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তি হবে গণতান্ত্রিক সংবিধান। রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ও আইনকে সংস্কার, মেরামত ও রূপান্তর করতে হবে। তার মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচন হবে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বুকের রক্তের দাম দিতে ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের ঐক্য প্রয়োজন।
“সব রাজনৈতিক দলের সামনে আজকে চ্যালেঞ্জ জনগণের স্বপ্নকে সত্যি পরিণত করতে পারবেন কিনা। আমরা যদি জনগণের স্বপ্নকে সত্য পরিণত করতে চাই, আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে না দেখতে চাই, তাহলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “১৬০০ এর অধিক ছাত্র শ্রমিক (গণআন্দোলনে) শহীদ হয়েছেন, তাদের মানুষ শ্রমিক। ৫০০ এর ওপর মানুষ অন্ধ হয়েছে, ৫০ হাজারের ওপর আহত। এই দেশের শ্রমজীবী খেটেখাওয়া মানুষের কথা সংবিধানে না এলে জনগণের হাতে ক্ষমতা না থাকলে, ক্ষমতাবানেরা জনগণের কাছে জবাবদিহি না করলে কোনো সংবিধান গণতান্ত্রিক হতে পারে না। ফাঁক গলে আবার ফ্যাসিস্ট আসবে।”
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আব্দুর রশীদ, মনির উদ্দীন পাপ্পু বক্তব্য দেন।