“গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন তারেক জিয়া যেখানেই থাক, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনব।”
Published : 26 May 2024, 11:28 PM
যাবজ্জীবন সাজা মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় বাস্তবায়নের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “এখন একটাই কাজ, ওই কুলাঙ্গারটাকে ফেরত নিয়ে আসা।… গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন তারেক জিয়া যেখানেই থাক, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনব।”
বাসস জানিয়েছে, রোববার গণভবনে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। এরপর থেকে পরিবার নিয়ে তিনি সেখানেই আছেন।
তারেক বিদেশে থাকা অবস্থায়ই পাঁচটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় আসে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় তার।
সবশেষ গতবছর ২ অগাস্ট অবৈধ সম্পদের মামলায় তারেকের ৯ বছর ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড হয়।
তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকরের কথা এর আগেও সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে। সবশেষ এ বছরের ২৮ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি হলে তারেককে ফেরানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে।
“আমি যতটুকু শুনেছি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তারা একটা প্রোপোজাল দিয়েছিল এবং সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। … সেই প্রোপোজালটা এখনও আমরা পাইনি।
“আমরা যেটুকু জানি এ ধরনের আলোচনা হয়েছে। এটা তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইপ্লিমেন্ট করবে, আমাদের প্রতিনিধি আলোচনার সময় ছিল। আলোচনাটা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে এখনও আমাদের কাছে বিস্তারিত কিছু আসেনি।”
রোববারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, ওই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক জিয়াকে যেন বাংলাদেশে ফেরত দেয়। আমরা তাকে নিয়ে এসে সাজা কার্যকর করব।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এদেশের মানুষ জঙ্গিবাদ ও অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ওই কুলাঙ্গারটার সাজা কার্যকর করতে পারলে এদেশের মানুষ জঙ্গিবাদ ও অগ্নি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্তি পাবে। তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যে অগ্নি সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের মধ্যে যারা বিদেশে পলাতক রয়েছে, তাদেরকেও ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা– এটাই আমার লক্ষ্য। আর সেই সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা সেভাবে কাজ করছি।”
নিজের নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে, তাদেরকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। সেই দায়িত্বটাও আমার নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া টুঙ্গিপাড়ার মানুষকে নিতে হবে। যে যেখানে আছে এটা সবার কাছে প্রচার করতে হবে। এটা খুবই দরকার।”