গয়েশ্বর বলেন, “অনেকের দাবি ছিল, অনেকের প্রস্তাব ছিল, আমরা যেন হরতাল দিই। বিএনপি আজকে সেই হরতালটি ঘোষণা করেনি।“
Published : 30 Jan 2024, 03:37 PM
কালো পতাকা হাতে নিয়ে ‘দেশের মানুষ’ দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘ঘৃণা জানাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেছেন, “আজকে ডামি নির্বাচনের সংসদ বসছে। সকাল থেকে সারা দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কেউ লাল পতাকা, কেউ কালো পতাকা লইয়া রাস্তায় রাস্তায় হাঁটে… জনগণ কি উদযাপন করছে এই সংসদ? অর্থাৎ তিরস্কার দিচ্ছে, ঘৃণা জানাচ্ছে, ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
“কিন্তু যাদের লাজ-লজ্জা-ভয় নাই…. তাদের দ্বারাই এরকম সংসদে বসা যায়।“
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এক মানবন্ধনে গয়েশ্বর কথা বলছিলেন।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে ৭ জানুয়ারির ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে বিকালে।
দ্বাদশ সংসদ প্রথম অধিবেশনের বসার এক ঘণ্টা আগে কালো পতাকা দেখাতে মিছিল করার কথা রয়েছে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলোর। এর মধ্যে ঢাকায় বিএনপি জড়ো হবে সাতটি জায়গায়।
বিএনপির এই কর্মসূচির পাল্টায় দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা হাতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগও।
সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, “বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তন হয়। আজকে (সংসদের প্রথম দিন) অনেকের দাবি ছিল, অনেকের প্রস্তাব ছিল আমরা যেন হরতাল দিই। বিএনপি আজকে সেই হরতালটি ঘোষণা করেনি।
“বিএনপি যেভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিগত দিন চলছে, সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যেই বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং করে যাবে।“
আওয়ামী লীগের অতীত আন্দোলনের উদাহরণ টেনে গয়েশ্বের বলেন, “আমরা রেকর্ড করতে পারি নাই এক সরকারের মেয়াদে ১৭৩ দিন হরতাল দেওয়ার, আমরা রেকর্ড করতে পারি নাই গান পাউডার দিয়ে শেরাটনের সামনে বাসে মানুষ মরার। আমরা এখনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারি নাই চলমান পথিককে বিবস্ত্র করার, আমরা এখনো পারি নাই লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরে তার উপরে নাচ-গান করতে।
“এইরকম সংস্কৃতি কাদের মনে? যারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না। এরকম সংস্কৃতি কাদের মনে? যারা জোর করে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকে।”
গয়েশ্বর বলছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ঐক্য সুদৃঢ় করে সরকারের পতন ঘটাতে তারা বদ্ধ পরিকর।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি এবং ‘ডামি’ সংসদ বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের রুহুল আমিন গাজী, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ওবায়দুল কবির খান, এগ্ররিচালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শফিকুর রহমান শফিক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাহবুবুল আলম শামীম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকী, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশসের সাখাওয়াত হোসেন, ডিপ্লোমা এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউর হায়দার পলাশ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, এমট্যাবের হাফিজুর রহমানসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।