“আন্দোলনে এখন আর ছাত্ররা নেই। বিএনপি জামাত তাণ্ডব করতে নেমেছে, তাদেরকে কোনো ছাড় নয় “
Published : 04 Aug 2024, 04:51 PM
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা।
রোববার সকাল ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, মিরপুর ১০ নম্বর, ধানমন্ডি, ফার্মগেইট, আসাদ গেইটেরএর মোড়, পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
এছাড়া মহাখালীর তিতুমীর কলেজের সামনে, কাকরাইল মোড়, পরিবাগ, সায়েন্স ল্যাব মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তি মিছিল নিয়ে বের হচ্ছেন এবং বাইকে শোডাউন দিচ্ছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী মোবারক হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কৃষিবিদ পরিষদ ও কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনের যৌথ আয়োজনে কৃষিবিদরা খামারবাড়ি এলাকায় জড়ো হয়ে শান্তি সমাবেশ করেন।
শান্তি সমাবেশ শেষে সংসদ ভবন এলাকায় মহড়া দিয়ে আবারও খামারবাড়ি এরাকায় অবস্থান নেন তারা। বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তারা স্লোগানে বলেন, ‘রাজপথ ছাড়ি নাই, শেখ হাসিনার ভয় নাই’; ‘শিবিরের চামড়া তুলে নেব আমরা’; ‘ছাত্রদলের গুন্ডারা হুঁশিয়ার সাবধান, বিএনপির গুন্ডারা হুঁশিয়ার সাবধান’।
ধানমন্ডিতে সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে আবস্থান নেওয়া যুবলীগ নেতা তাজবিরুল হক অনু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আন্দোলনে এখন আর ছাত্ররা নেই। বিএনপি জামাত তাণ্ডব করতে নেমেছে, তাদেরকে কোনো ছাড় নয়। রাজপথে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেটা আমরা জানি।”
পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেওয়া সুত্রাপূর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাইদ বলেন, তারা ‘দুর্বৃত্তদের প্রতিহত’ করবেন।
“বিএনপি জামায়াতের কিছু লোক কোর্টে হামলার চেষ্টা চালিয়েছে। আমরা প্রতিহত করেছি, আর এর জন্য বেশি সময় লাগেনি। বিএনপি-জামায়াত মোকাবেলা করেইতো বড় হয়েছি।”
এদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়েল সামনে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সকাল থেকেই অবস্থান নিয়ে আছেন।
বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী ছাত্রদের কেউ ওই এলাকায় নামেনি। সকাল থেকে মিরপুর এলাকায় কোনো গোলযোগের খবরও পায়নি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ওবায়দুর মাসুম জানান, সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে জড়ো হতে দেখা যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
মিছিলকারীদের হাতে এ সময় লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।
মিরপুর ১০ নম্বরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি। তবে মিরপুর ২ নম্বর থানার সামনে সাঁজোয়া যানসহ সশস্ত্র পাহারায় ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। মিরপুর ১ নম্বর সনি সিনেমার সামনেও পুলিশকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
মিরপুরে অবস্থান নেওয়াদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা ‘নৈরাজ্যকারীদের’ রাস্তায় নামতে দেবেন না।
“মিরপুরে বিএনপি-জামায়াত কয়েকদিন ধরে বহু তাণ্ডব চালিয়েছে, আর তাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না। বিএনপি-জামায়াত মিরপুরে নামলেই গণধোলাই দেওয়া হবে। আমরা বিএনপি-জামায়াতকে রুখে দিতে রাজপথে আছি।”
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর, মিরপুর ১৪ নম্বর, কচুক্ষেত, মিরপুর ১৩ নম্বর, মিরপুর ১ নম্বর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে যান চলাচল ছিল কম।
সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশার চলাচল বেশি দেখা গেছে। মিরপুর ১০ নম্বর ও আশপাশের বেশিরভাগ দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ ছিল।
মিরপুরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সামনের চায়ের দোকানী আবুল হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত দোকান খোলা রাখছি। তয় কতক্ষণ পারমু জানি না। গ্যাঞ্জাম লাগলেই দোকান বন্ধ কইরা দৌঁড় দেওয়া লাগব।”
তবে ইসিবি চত্বরে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে আন্দোলনকারী ছাত্রদের জড়ো হতে দেখা যায়।
মহাখালীর তিতুমীর কলেজের আশেপাশের এলাকায় সবাল ১১টা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সড়কে নামতে দেখা যায়।
তারা মিছিল নিয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। নেতাকর্মীদের লাঠিসোটাসহ মোটরসাইকেলে করে সড়কে ঘুরতে দেখা যায় এ সময়। তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন– ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’।