আস্থা না থাকায় রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন না প্রবাসীরা: ফখরুল

“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকার বিভিন্ন রকম আইন কানুন দেখাচ্ছে,” বলেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2023, 07:31 AM
Updated : 21 Oct 2023, 07:31 AM

দেশের অর্থনীতির ওপর আস্থা না থাকায় প্রবাসীরা আগের মতো আর রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “এই সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছে। তার অর্থ- বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর তাদের আস্থা নাই, সেজন্য তারা অর্থ পাঠাচ্ছে না। এরকম অবস্থা করে রেখেছে।”

সোমবার বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত কৃষক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন। বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার হত্যা করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তার অভিযোগ, “যে কথাগুলো তারা (সরকার) বলছেন- এই কথাগুলোর একটাই মাত্র উদ্দেশ্য। এরা আসলে কাপুরুষ, এরা ভীত। এরা জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি সুস্থ হয়ে যান, আবার জনগণের মাঝে ফিরে আসেন; তাহলে দেশনেত্রীর জন্য কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে, তাদের তখতে তাউস ধ্বংস হয়ে যাবে।”

ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য তারা (সরকার) বিভিন্ন রকম আইন কানুন দেখাচ্ছে। যখন আপনার (শেখ হাসিনার) কানের সমস্যা হয়েছিল, তখন আপনি আমেরিকা চলে গিয়েছিলেন- যান নাই? আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যখন জীবন-মরণের সমস্যা, তখন এইসব কথা বলছেন কেন?”

নিজেই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘‘একটাই কারণ যে, রাজনৈতিকভাবেই তারা বেগম জিয়াকে হিংসা করে, তারা বেগম জিয়াকে সুস্থ করতে চায় না, তারা বেগম জিয়াকে রাজনীতি করতে দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সম্পূর্ণ লক্ষ্য একটাই যে, এদেশে কোনো বিরোধী দল থাকবে না, এদেশে তারাই সরকার চালাবে, তারাই সরকারে থাকবে। তাদের কথাবার্তা শুনলে মনে হবে- তারাই শুধু এদেশের মালিক আর আমরা সব প্রজা।”

গত ৯ অগাস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওই আবেদনে ‘না’ জানিয়ে মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

মির্জা ফখরুল বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমস্যা তৈরির অভিযোগ করে বলেন, “পিটার হাসকে নিয়ে তারা (সরকার) খুব রেগেছে। তাদের নেতা-মন্ত্রীরা সমস্ত ডিপ্লোম্যাটিক নর্মসকে উপেক্ষা করে তার বিরুদ্ধে তারা যার পর নাই কথাবার্তা বলছে। এমনকি তাদের বংশবদ যে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আছে, মিথ্যাচার করছে।”

সরকারের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। সংসদ বিলুপ্ত করুন, একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। সত্যিকার অর্থে দেশের ভালো চান, দেশের কল্যাণ চান এই ব্যবস্থায় আসুন। অন্যথায় দেশের মানুষ জানে, কীভাবে স্বৈরাচারকে কীভাবে ফ্যাসিবাদকে দূর করতে হয় এবং সেটাই ইনশাল্লাহ এদেশের মানুষ করবে।”

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের নাসির হায়দার, জামাল উদ্দিন খান মিলন, মামুনুর রশীদ খান।

(প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)