সংঘাতে প্রাণহানির দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি গণতন্ত্র মঞ্চের

“এটা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, জনগণের ভেতরে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বলতে আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই”, বলেন মঞ্চের নেতা সাইফুল হক।

সোমবার রাজধানীর তোপখানা রোড়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বক্তব্য রাখছেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে ‘হত্যার দায়’ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সোমবার তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের একটি ন্যায্য আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের পথে না গিয়ে সরকার ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডসহ নাশকতার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে এর সমুদয় দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের।

“আমরা সরকারকে জনগণের জানমালের এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির দায়দায়িত্ব নিয়ে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগ করার আহ্বান জানাই।”

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণাও দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সাইফুল হক বলেন, “সরকার যেভাবে কেবলমাত্র বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এই গণআন্দোলন দমন করতে চেয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, জনগণের ভেতরে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বলতে আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই।

“সরকার ও তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের নামে প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টারে গুলিবর্ষণ করে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তার বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”

সাইফুলের ভাষ্য, “হত্যা-গ্রেপ্তার-নিপীড়ন ও ‘মিথ্যা’ তথ্য প্রচার করে সংকটের কোনো সমাধান সম্ভব নয়।”

সংকট উত্তরণে সরকারকে রাজনৈতিক সমাধানের পথ বেছে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে ছাত্র-জনতা হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত, দ্রুত কারফিউ প্রত্যাহার, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবিসহ বিশেষ বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং গণমাধ্যমের ওপর ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সাইফুল হক বলেন, “সরকার ও সরকারি দলের যাবতীয় উসকানি ও নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা এড়িয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ ছয় দফার জনদাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে গণআন্দোলন এগিয়ে নেবে।”

যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দল ও জোটসহ গণতন্ত্র মঞ্চ সারাদেশে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান তিনি।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার-নিপীড়ন এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরকে রিমান্ডে নেওয়ার নিন্দা জানান সাইফুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, একেএম জামির, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আবু ইউসুফ সেলিম, বাবুল বিশ্বাস, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খানও উপস্থিত ছিলেন।