“আমরা ১৭ বছর আন্দোলন করেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার দাবিতে, অন্য কোনো নির্বাচনের জন্য নয়,” বলেন তিনি।
Published : 11 Feb 2025, 10:58 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের আশেপাশেই পতিত ফ্যাসিস্টদের দোসর ‘ডেভিল’ অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের এক কর্মশালায় সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘দেশে ডেভিল হান্ট অপারেশন’ চলছে। ‘শয়তান’ শিকার করতে গিয়ে যেন ভালো লোক ধরা না পড়ে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশের হাল ধরা অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসন ও পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রদবদল শুরু করে। এ নিয়ে প্রশাসনে অস্থিরতাও তৈরি হয়।
সম্প্রতি ভারতে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য অনলাইনে প্রচারের ঘোষণার পাল্টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন ভাঙা হয়।
এছাড়া শেখ হাসিনার বাসভবন সুধাসদনসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর, শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।
এসব ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে গাজীপুরে শুক্রবার রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনার পর এ বিশেষ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় সরকার।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে দেশ ‘অস্থিতিশীলকারীদের’ ধরতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের এ অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী।
অভিযানে বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, “এই শয়তান শিকার করার জন্য বনে-জঙ্গলে ঘুরার দরকার কি ভাই। শয়তান তো আপনার আশেপাশেই আছে। এই সরকারের সঙ্গে আছে, সামনে আছে, পেছনে আছে, সচিবালয়ে আছে, ওদের আগে ধরেন।”
সচিব পর্যায়ের পাঁচজনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ধরনের লোক শুধু সচিবালয় নয়, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জায়গায়, আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছরে সরকারের রুন্ধ্রে রন্ধ্রে এ লোকগুলোকে বসিয়ে গেছে।
“সেই গ্রামের ইউএনও অফিস থেকে ডিসি অফিস, ডিসি অফিস থেকে ঢাকার প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই ধরনের লোকগুলো বসে আছে।”
বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, “সচিবালয়ের মধ্যেও আছে এই ধরনের শয়তান, যারা এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পা চাটা গোলাম… তাদের পারপাস সার্ভ করে যাচ্ছে। এই সরকারকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে।”
‘কোনো ভদ্র লোক আওয়ামী লীগ করে না’ দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, “যদি কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে সে কিন্তু একসময় বেরিয়ে যায়।”
এ সময় তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর দলটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদাহরণ টানেন।
মঙ্গলবার বিএনপি নেতারা সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলেছেন।
সে বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন হবে না।
“আমরা ১৭ বছর আন্দোলন করেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার দাবিতে। অন্য কোনো নির্বাচনের জন্য নয়।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ঘোষণা দিলে আওয়ামী লীগ মাথা বের করে হাজির হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ঢাকার মুগদায় ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়।
সেখানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর। সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মহানগর দক্ষিণের সদস্য ইশরাক হোসেন।