তাহলে কি বিএনপি নেতৃত্বের মৌন সম্মতি আছে? জানতে চান ওবায়দুল কাদের

“আমি অবাক হলাম, মির্জা ফখরুল পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল, তিনি একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না,” বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2023, 08:31 AM
Updated : 24 May 2023, 08:31 AM

বিএনপির এক নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার পরও দলটির দায়িত্বশীল কোনো নেতা এ নিয়ে কথা না বলায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, "তাহলে কি এতে তাদের মৌন সম্মতি রয়েছে?"

বুধবার রাজধানীর সড়ক ভবনে বারৈয়ারহাট রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিস্থাপন অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “রাজশাহীতে তারা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তিনি (হুমকিদাতা) যে সাধারণ ব্যক্তি, এটা ভাবার কারণ নেই, কারণ তিনি জেলার প্রধান এবং কেন্দ্রের সদস্য। আমি অবাক হলাম, মির্জা ফখরুল (ইসলাম আলমগীর) পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল, তিনি একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না।”

গত শুক্রবার বিকালে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাই স্কুল মাঠে এক জনসমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেন বলে আওয়ামী লীগ থেকে অভিযোগ উঠে।

এর প্রতিবাদে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন দলটি। গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে বেশ কয়েকটি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদুত পিটার হাস, তিনি এই ঘটনাকে ভালোভাবে নেননি এবং নিন্দা করেছেন। সেখানে বিএনপি থেকে কোনো দায়িত্বশীল নেতা… আজ পর্যন্ত তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি এবং তাদের একজন জয়েণ্ট সেক্রেটারি ‘স্লিপ অব টাং’ বলে দায়িত্ব শেষ করেছেন।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এটা তো এখানেই শেষ নয়, তারা তাদের মিছিলে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার- এই স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন। মির্জা ফখরুলের সামনেই দিচ্ছেন। তাদের সিনিয়র নেতাদের সামনে প্রকাশ্যে এর আগেও রাজশাহীতে আরো একটি ১৫ অগাস্ট ঘটানোর কথা বলেছিলেন তাদের এক নেতা এবং এই প্রসঙ্গে বিএনপির কাউতে কোনো কথা বলতে শুনিনি।

“এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়, তাদের নেতারা যেটা রাজশাহী থেকে বলেছেন, সেটাই বিএনপিরই কথা। তারা এখন ২৭ দফা থেকে এক দফার কথা বলছে। তাহলে কি বুঝে নেব তাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে হত্যার দফা?”

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে তিনি বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের বক্তব্য জানতে চান।

“এখনো তাদের স্থায়ী কমিটির কোনো নেতা কিছু বলেননি। তাহলে নিশ্চয় এটাতে তাদের মৌন সম্মতি আছে। উপর দিয়ে তারা বলতে পারছে না কাউকে দিয়ে বলাচ্ছেন।”

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, “গতকাল তারা গায়ে পড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।

“বিআরটিসির একটি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলল, এটা গাড়িতে আগুন দিল, একটি গাড়ি ভাঙচুর করল; এটা তারা যে আন্দোলনের নামে... আমরা এতদিন বলে আসছিলাম, তারা আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করবে, সন্ত্রাস করবে এবং এটা তাদের পুরোনো স্বভাব।”

সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, যে পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যা দায়িত্ব, তারা সেটা পালন করবে, আর আওয়ামী লীগ এসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে রাজনৈতিকভাবে।

“আমার পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে চাই। তবে প্রতিরোধ করতে হলে আমরাও প্রতিরোধ করব।”

সিটি কর্পোরেশর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ইসি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কি না– তা নিয়ে এখনই মন্তব্য করা যাবে না।

“নির্বাচন হলে বুঝতে পারবেন ইসির ভুমিকা কী। এ যাবৎ অনেকগুলো নির্বাচন হল... যেমন গাইবান্ধা তারা বন্ধ করে দিয়েছে। পরে তারা সুন্দর নির্বাচন করেছে। ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচন এরই মধ্যে হয়েছে, এখানে অংশ না নিলেও তো কিছু বলার নেই।

“তারা (বিএনপি) নির্বাচনও করবে না আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবে... পরিচয় গোপন করে গাজীপুরসহ বাকি চারটি সিটি করপোরেশনে তাদের প্রার্থী আছে। তাদের স্বরূপে তারা উন্মেচিত হবে সেটা নির্বাচনে প্রমাণিত হবে।”