পঁচাত্তরের কুশীলবদের বের করতে কমিশন চাইলেন হানিফ

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিদেশে পালিয়ে থাকা আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2022, 12:39 PM
Updated : 8 August 2022, 12:39 PM

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের বের করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ।

সোমবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘ‌রে ‘বাঙা‌লির গণতা‌ন্ত্রিক আন্দোলন ও মু‌ক্তি সংগ্রা‌মের নেপ‌থ্যের সংগঠক বঙ্গমাতা শেখ ফ‌জিলাতুন নেছা মু‌জি‌ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, বঙ্গমাতাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তার হত্যাকারী যারা- তাদের যারা দণ্ডপ্রাপ্ত, বিদেশে পালিয়ে আছে; তাদের বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ও সকল রাষ্ট্রগুলোকে অনুরোধ করব।

“যারা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবতার কথা বলেন, মানবতার পক্ষে অবস্থান নিতে বলেন; তাদের কাছে জাতির পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ, আপনারা তো সবচেয়ে মানবাধিকারের দেশ হিসেবে চিহ্নিত, আপনারা তো গণতন্ত্রের বড় দেশ হিসেবে চিহ্নিত, আপনাদের মত দেশে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অবস্থান বিশ্বের কাছে এবং বাঙালি জাতির কাছে সবচেয়ে বড় বেমানান।”

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, কিন্তু এই হত্যকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ এখনও উন্মেচন হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল, যাদের জন্য সমাজ ও দেশ বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল; এই বিভক্তি দূর করতে হলে পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের যারা কুশীলব ছিল, সেই জিয়াউর রহমানসহ তাদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।

“এজন্য তদন্ত কমিশন গঠন করে পঁচাত্তরের এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নেপথ্যে থেকে যারা ভূমিকা রেখেছিলো, তাদের মুখোশ উন্মেচন করা হোক।“

পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ যে বন্ধ করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল- যারা আত্মস্বীকৃত ঘাতক, তাদের বিচার করতে গেলে নেপথ্যে খলনায়কদের নাম বেরিয়ে আসবে। আর এতে জিয়াউর রহমানের নাম সবার আগে চলে আসবে। এজন্য তিনি ঘাতকদের বিচার বন্ধ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার কারণেই এই বিচার করা সম্ভব হয়েছে।”

বঙ্গবন্ধুর জীবনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার অবদান তুলে ধরে হানিফ বলেন, “বেগম মুজিবের বিচক্ষণতা ছিল প্রখর। রাজনীতিতে তিনি যুক্ত ছিলেন না, কিন্তু নেপথ্যে থেকে রাজনীতিতে সহায়তা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তার যে পরামর্শগুলো ছিল, তা ছিল অবিস্মরণীয়। তিনি অনেক অনুপ্রেরণাময়ী ছিলেন।

“ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে অনেকে অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে নিজের মনে যা আসবে তা বলতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে যখন কারগারে থাকতেন, তখন তার সাথে দেখা করে তার নির্দেশনা দলের নেতাকর্মীদের জানাতেন।”

বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনাসভা আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি।

দ‌লের উপ‌দেষ্টা প‌রিষ‌দের সদস‌্য এবং বন ও প‌রি‌বেশ বিষয়ক উপ ক‌মি‌টির চেয়ারম‌্যান অধ‌্যাপক খন্দকার বজলুল হ‌কের সভাপ‌তি‌ত্বে এতে বক্তব্য দেন দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কার্যনির্বাহী ক‌মি‌টির সদস‌্য আনোয়ার হো‌সেন, ইতিহাস‌বিদ ও বাংলা‌দেশ ইউনিভা‌র্সি‌টি অব প্রফেশনালের অধ‌্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হো‌সেন, রাজ‌নৈ‌তিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায়।

অনুষ্ঠান সঞ্চলনা ক‌রেন আওয়ামী লী‌গের বন ও প‌রি‌বেশ বিষয়ক সম্পাদক ও উপ ক‌মি‌টির সদস্য স‌চিব দে‌লোয়ার হো‌সেন।