সংগঠনের নাম, ব্যানারের লোগো, ছবি তোলা প্রভৃতির মধ্যে হারিয়ে যায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া। যার সুযোগ নিচ্ছে আমলাতন্ত্রনির্ভর নীতিনির্ধারণী মহল অথবা দাতা সংস্থাগুলো।
Published : 31 Mar 2024, 07:26 PM
‘প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নের নামে শোষণ করার রাজনীতি’ থেকে আমাদের মুক্ত করবে, আমাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে এমন জননেতার খোঁজে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই, যিনি বজ্রকণ্ঠে দিন বদলের হাঁক দেবেন।
কিন্তু আমরা কি মাথা তুলে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জনে সক্ষম? আমরা কি প্রস্তুত, দয়া-দাক্ষিণ্য-কল্যাণ ভুলে, বৈষম্যের কাঠামো ভেঙে নিজের অধিকার অর্জনের আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার দুঃসাহস দেখাতে?
সমাজে বৈষম্যের কাঠামোর গভীরে গেলে অদ্ভুত এক বিষয় নজরে আসে। সাধারণত আমরা দেখি সমাজে নারীরা পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর কারণে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। কিন্তু আমরা প্রতিবন্ধী মানুষেরা সমাজের নারী ও পুরুষ উভয়পক্ষ থেকেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র— এই তিনটি খাত থেকে বৈষম্যের যাঁতাকলে পিষ্ট আমরা। এর কারণ, অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষমতার কাঠামো। অন্যদিকে, নারীরা বর্তমান সমাজের ক্ষমতা কাঠামোতে অংশ নিলেও তাদের মধ্যেই কেউ কেউ ভাবছেন প্রতিবন্ধী মানুষেরা নেতৃত্ব বা ক্ষমতা কাঠামোর উপযোগী নন। প্রসঙ্গক্রমে মনে পড়ছে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন (জেপিইউএফ)-এর নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (অতিরিক্ত সচিব) বক্তব্য। তিনি নারী সংগঠন ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠনের নেতৃত্ব এবং ধরন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন, “নারীরা এককভাবেই সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে পারবে, কিন্তু প্রতিবন্ধী মানুষ অপ্রতিবন্ধী মানুষের সাহায্য ব্যতীত নেতৃত্ব দিতে পারবে না।”
‘প্রতিবন্ধী মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম’ সমাজের এই ধারণার ভিত্তি কী?
আমাদের সমাজে আজও মেডিকেল মডেল বা কল্যাণমুখী কাঠামো বিরাজমান। এ ধারণার অধীনে প্রতিবন্ধিতাকে অসুস্থতা ভাবা হয়। অপরদিকে অধিকারভিত্তিক ও সামাজিক মডেলে প্রতিবন্ধিতাকে মানববৈচিত্র্য মেনে সমনাগরিক মর্যাদার দাবি তোলা হয়। প্রচলিত মেডিকেল মডেলে অসুস্থ, অক্ষম, দুর্বল ভাববার নেতিবাচক মানসিকতার ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং নেতৃত্ব চর্চায় অসমর্থ। এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হচ্ছে, রাষ্ট্র প্রতিবন্ধী মানুষের খাতের ব্যবস্থাপনা আজও কল্যাণভিত্তিক সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সীমাবদ্ধ রেখেছে।
বিগত কয়েক দশকে প্রতিবন্ধী মানুষের নেতৃত্ব চর্চার পথ অগ্রসর হলেও প্রকৃত অর্থে নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছে দাতা সংস্থাগুলো, সরকারি নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ এবং প্রতিবন্ধী মানুষের জন্যে (for the people approach) সেবা প্রদানকারী এনজিও সংস্থাসমূহের অপ্রতিবন্ধী নেতারাই। নেতৃত্বাসীন প্রতিবন্ধী মানুষেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের হাতের পুতুল হয়ে রয়েছেন।
আমরা অধিকারভিত্তিক সচেতনতার কথা বলি। জনওকালতিমূলক কর্মসূচি (advocacy program) নেয় এনজিওগুলো। কিন্তু বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে যারা নেতৃত্বে আছেন তারা কেউ মেডিকেল মডেলের ধারণা ভেঙ্গে অধিকারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে (right based/of the people approach) কাজ করছে না। আমরা যুক্তিতে মানি কিন্তু চর্চা করি না।
এইপর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের খাতে কর্মরত বেশিরভাগ উন্নয়নকর্মীগণ আমাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন এসেই যায় অধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে এত চিৎকার, তবে দিন শেষে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই কেন?
দাতা সংস্থার কবলে প্রতিবন্ধী মানুষদের নেতৃত্ব
বর্তমানে আমরা যারা নেতৃত্ব চর্চায় আছি, তারা অনেকটানামধারীনেতৃত্বের চক্রে আটকে পড়ে আছি। প্রতিবন্ধী মানুষের নেতৃত্ব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠন (Organisation of Persons with Disability বা ওপিডি) পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা দাতা সংস্থার ওপর সম্পূর্ণরূপেই নির্ভরশীল। একটি সংগঠনের প্রশাসনিক ও আর্থিক সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ক্ষেত্রে নামধারীনেতৃত্ব ধরে রাখতে গিয়ে আমরা দাতা সংস্থার অর্থায়নের ফাঁদে পা দিই। প্রকল্পের উদ্দেশ্য-শর্ত পূরণ করতে গিয়ে আমরা অধিকার অর্জনের সংগ্রাম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছি,দেখা দিয়েছে কার্যকরী নেতৃত্বের সংকট।
বর্তমানে দাতা সংস্থাগুলো নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একটি নেটওয়ার্ক চাইছে। কোনো কোনো দাতাসংস্থা ইতোমধ্যে আর্থিক বরাদ্দ দিতে শুরু করেছে। তবে এক্ষেত্রে দাতাসংস্থা বা হোমরাচোমরা এনজিওগুলোই নেতৃত্বে থাকতে চায়। ফলে আবারও পুরোনো বোতলে নতুন মদের মতো পরনির্ভরশীল কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি হচ্ছে এবং একের পর এক নেটওয়ার্ক সংগঠন তৈরি হচ্ছে কেবল।
অসংগঠিত ও সমন্বয়হীনতা
যেনতেন ভাবে জীবিকা নির্বাহ করাটা মুখ্য হওয়ার কারণে বাংলাদেশের ওপিডিগুলোর মধ্যে সামাজিক আন্দোলনের প্রবণতা কমে গেছে। ফলে সমাজ পরিবর্তনের কার্যক্রম হারিয়ে যাচ্ছে। অসংগঠিত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে প্রতিবন্ধী মানুষেরা।
অথচ নারীদের একতাবদ্ধতার ফলে বিগত কয়েক দশকে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় হয়েছে।সংখ্যালঘু জাতিসত্তার মানুষেরা একতাবদ্ধ। এমনকি শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষেরা সমাজবিচ্ছিন্ন হলেও শুধু নিজেদের গোষ্ঠীর ভেতর দারুণভাবে সংগঠিত। অথচ অন্যান্য প্রতিবন্ধী মানুষেরা (শারীরিক, দৃষ্টি ও অন্যান্য) সমাজে চলতে-ফিরতে পারলেও গোষ্ঠী হিসেবে সমাজের সবচেয়ে অসংগঠিত অংশ হিসেবে রয়ে গেছে। সংগঠনের নাম, ব্যানারের লোগো, ছবি তোলা প্রভৃতির মধ্যে হারিয়ে যায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া। যার সুযোগ নিচ্ছে আমলাতন্ত্রনির্ভর নীতিনির্ধারণী মহল অথবা দাতা সংস্থাগুলো। ওপিডিদের সাইনবোর্ড দেখিয়ে বাণিজ্যিক মানসিকতার জয় হচ্ছে, আদর্শ পেছনে পড়ে যাচ্ছে।
সামাজিক কুসংস্কার (Social stigma) ভাঙতে মাঠপর্যায়ে ধারাবাহিক সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে নিতে আমরা ব্যর্থ। অতীতে আমাদের দেশে কিছু নেটওয়ার্ক তৈরি হলেও তা দাতাসংস্থার চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তৃণমূল ওপিডিসমূহের জাতীয় নেটওয়ার্ক (এনজিডিও), জাতীয় মোর্চা (ন্যাডপো), জাতীয় প্রতিবন্ধী নারী পরিষদ (এনসিডিডব্লিউ) এর মতো কিছু ওপিডি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়ে দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিবন্ধী মানুষদের মধ্যে শুরুতে তৎপরতা তৈরি করেছিল। কিন্তু দাতাসংস্থার ওপর নির্ভরশীলতার কারণে পরবর্তীতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বেশিরভাগই মুখ থুবড়ে পড়ে। আজও অনেক সংগঠন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আছে। এই সংকট থেকে কেউ কেউ একসময় বের হওয়ার চেষ্টা করেছেন। দাতাসংস্থার নির্ভরশীলতার এই প্রবণতাকে ছাপিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে মাঠপর্যায়ে অনেকখানি এগিয়ে ছিল ওপিডিদের স্বাধীন ও স্বনিয়ন্ত্রিত নেটওয়ার্ক প্রতিবন্ধী নাগরিক সংগঠনের পরিষদ (পিএনএসপি)।
পিএনএসপি জন্মলগ্ন থেকেই দাতা সংস্থার ওপর নির্ভরশীল নয়, স্বাধীনভাবে কাজ করছে— এমন সদস্য সংগঠন নিয়ে তৈরি হয়। এটি শুরু থেকেই কমিউনিটি বা গোষ্ঠীর চাঁদা/অনুদান এবং দেশীয় বাণীজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অনুদানের মাধ্যমে স্বনির্ভর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিবন্ধী মানুষদের মধ্যে প্রতিবাদের প্রবণতা তৈরির জন্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিধিত্ব চর্চা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতরের দাবিতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মানববন্ধন, সমাবেশ প্রভৃতি প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে ও অর্থায়নে আয়োজন করা হতো। চিন্তা-চেতনার বিকাশে নিয়মিত প্রতিবন্ধী তরুণদের নিয়ে পাঠচক্র, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শিল্প-সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে (Cross-disability) মেলামেশার অন্তঃসম্পর্ক তৈরি করা, প্রতিবন্ধী তরুণদের সংগঠিত করতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ উন্মুক্ত স্থানে আড্ডা আয়োজন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কের মধ্য দিয়ে জনগোষ্ঠীকে সচেতন করানোসহ নানাবিধ কাজের নমুনা পিএনএসপি রেখেছে। প্রতিবন্ধী মানুষদের নেতৃত্ব চর্চা ও দক্ষতা তৈরির বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে পিএনএসপি-এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। কিন্তু এসমস্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দূরদর্শীতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সর্বজনগ্রাহ্য যে নেতৃত্বের প্রয়োজন, তার অভাবে পিএনএসপির এ ধরনের কাজে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এভাবেই বিগত কয়েক দশকে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ও সংগঠন গড়ে উঠলেও প্রথমত পরনির্ভরশীলতা এবং দ্বিতীয়ত সমন্বয়হীনতা ও আন্তঃসম্পর্কের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে এসব উদ্যোগ।
প্রসঙ্গক্রমে তিন প্রজন্মের তিনটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের সংগঠনের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।ষাটের দশকে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় অন্ধ সংস্থা শিক্ষিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে না পারায় গ্রাজুয়েট দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উদ্যোগে ২০০৪ সালে ভিজ্যুয়্যাল ইমপেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস) প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ভিপস দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তরুণদের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়। ফলে এক যুগ পর তৃতীয় প্রজন্মের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তরুণেরা নিজেদের দাবি তুলে ধরতে গড়ে তোলে ‘চাকরি প্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের গ্রাজুয়েট পরিষদ’ নামে আরেকটি সংস্থা। তারাও লাগাতার মাঠপর্যায়ের আন্দোলন চালিয়ে গেছে। কিন্তু নিজেদের অধিকারের পক্ষে কাজ করলেও এই তিন প্রজন্মের তিনটি সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় বা আন্তঃসম্পর্কগড়ে ওঠেনি। অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষদের সংগঠন ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক মেলামেশার সংস্কৃতিও এদেশে তৈরি হয়নি। উল্লেখ্য, বাংলা ইশারাভাষার দোভাষীর অভাবে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষেরা। যদিও পিএনএসপি-এর মতো নেটওয়ার্ক দেশে প্রথমবারের মতো সকল ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক, আত্মমর্যাদাবোধ, স্বাধীন জীবনযাপন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের চর্চা এবং ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা— এমনই কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপনের চেষ্টা শুরু করেছিল।
দাতা সংস্থার অর্থায়ন-নির্ভরতার বিকল্প
আমাদের লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আন্দোলন যেন দাতা সংস্থার মুখাপেক্ষী হয়ে পিছিয়ে না পড়ে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠনগুলো দাতা সংস্থার ওপর নির্ভরশীলতার পরিবর্তে কমিউনিটি থেকে চাঁদা গ্রহণ, আয়ভিত্তিক কার্যক্রমের পরিধি বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চর্চায় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসদস্যভিত্তিক সংগঠনের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে সংগঠন ও কার্যক্রম পরিচালনার তহবিল সংগ্রহের প্রবণতা গড়ে তোলা দরকার। ঠিক একইভাবে অন্যান্য বাণিজ্যিক ও সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর কল্যাণমুখী প্রথাগত সহায়ক উপকরণ ও ব্যক্তিভিত্তিক ক্ষুদ্র দানের প্রবণতা বন্ধ করা দরকার। এর পরিবর্তে তারা এলাকাভিত্তিক ওপিডিগুলোকে স্বনির্ভর, স্বচ্ছ ও জবাবদিহতামূলক সংগঠন হিসেবে তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট এবং গঠনমূলক কার্যক্রমের উদ্যোগে উৎসাহিত করতে পারে।
দাতা সংস্থার শর্তসাপেক্ষ পরনির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্র-সমাজকে বৈষম্যহীন সমঅধিকার-মর্যাদা-অংশগ্রহণ নিশ্চিতের আদর্শ ধারণ করানোর লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট অধিকারকর্মী-সংস্থা-ভুক্তভোগীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের মাধ্যমে স্বতস্ফূর্ত সামাজিক আন্দোলনের চর্চা করা দরকার। প্রতিবন্ধী মানুষদেরকে সংগঠিত করতে তাদের সাংস্কৃতিক ও চেতনতাগত মুক্তির জন্য পিএনএসপি-এর মতো মুক্তির পথে জ্ঞানের ও যুক্তির যে সম্পর্ক রয়েছে তা জানতে এবং জানাতে হবে। সাংস্কৃতিক ও চিন্তার বিকাশের মধ্য দিয়ে আমরা যদি নিজেদের শাণিত করতে না পারি, কেবল নিজেদের আর্থিক স্বচ্ছলতার জোরে সমাজের বৈষম্য কাঠামো ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব নয়।
তথ্য সহযোগিতা: ইফতেখার মাহমুদ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আন্দোলনের সংগঠক