Published : 12 Aug 2021, 02:31 AM
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিনকার্ড অর্থাৎ ইমিগ্রেশনের আশায় ১৮৮৫ সালের পাতাঝরা হেমন্তের রাতে জার্মানির কার্লস্ট্যাড নামের এক পল্লী শহর থেকে ফ্রিডরিক ট্রাম্প নামে একজন দেশ ছেড়েছিলেন। যিনি পেশায় ছিলেন নাপিত। তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর।
জন্ম তারিখ ১৮৬৮ সালের ১৪ মার্চ। তখন কারও পক্ষে আন্দাজ করা অসম্ভব ছিল যে নাপিত ফ্রিডরিকের নাতি একদিন হবেন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। হবেন বিশ্বের অন্যতম ধনী বিলিওনিয়ার। ফ্রিডরিকের জন্মের সময়টা ছিল পৃথিবীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ যুগ। তার জন্মের ১৮ দিন আগে ১৮৬৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনকে ইমপিচ অথবা অভিশংসন করা হয়।
কংগ্রেসের নিন্ম কক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবার একজন প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে চার বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ সবেমাত্র তিন বছর আগে শেষ হয়েছিল।
আটলান্টিক মহাসাগরের অন্য তীরের ইউরোপের রাজনীতিতে চলছিল ভৌগলিক এবং কাঠামোগত আমূল পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স অটো এডওয়ার্ড লিওপোল্ড (যিনি বিসমার্ক নামে বহুল পরিচিত) এর বদৌলতে নাপিত ফ্রিডরিকের মাতৃভূমি জার্মানিতে চলছিল নিদারুণ পরিবর্তনের জোয়ার। ১৮৫০ দশক থেকে শুরু করে ১৮৭০ দশকে শিল্প বিপ্লব এবং বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে জার্মানির অসংখ্য স্বাধীন অথবা স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছিল চোখে পড়ার মত। ১৮৬০ সালের প্রথমার্ধে বিসমার্ক প্রথমে তৎকালীন জার্মান ভাষাভাষীদের অন্যতম শক্তিশালী রাজ্য প্রাশিয়া, পরে নর্থ জার্মান কনফেডারেশন, এবং সর্বশেষ তারই প্রতিষ্ঠিত জার্মান রাইখ অথবা জার্মান সাম্রাজ্যের চ্যান্সেলরের পদে বসেন। জার্মান সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন ১৮৭১ থেকে ১৮৯০ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ বছর।
ফ্রিডরিকের জন্মের চার বছর আগে থেকে শুরু করে তার তিন বছর বয়স পর্যন্ত- মাত্র সাত বছরে তিনটি যুদ্ধে বিসমার্ক পরাজিত করেন ডেনমার্ক (১৮৬৪), অস্ট্রিয়া (১৮৬৬), এবং ফ্রান্স (১৮৭১)-কে। সেডান এর যুদ্ধে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ভাইপো ফ্রান্সের সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নকে বন্দি করা হয় এবং বিসমার্কের সৈন্যরা প্যারিস পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এই যুদ্ধে বিজয়ের পর বিসমার্ক 'প্রথম উইলহেম'-কে 'সম্রাট কাইজার উইলহেম' হিসেবে অভিষিক্ত করেন প্যারিসের সন্নিকটে ভার্সাই প্যালেসের ইতিহাসখ্যাত হল অব মিররস-এ।
জার্মান অর্থনীতির জোয়ার আরও বেগবান হয়েছিল। ঘটেছিল দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব। কিন্তু ফ্রিডরিকের রাজ্য ব্যাভেরিয়াতে এর ছোঁয়া তেমন লাগেনি। কেননা ব্যাভেরিয়া অনেকটা পরে ১৮৭১ সালে জার্মানির সাথে যুক্ত হয়।
দুইটি কারণে ফ্রিডরিক জার্মানি ছেড়েছিলেন। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স বিসমার্ক ষোল বছর বয়সের পুরুষদের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছিলেন। প্রত্যেক যুবককে তিন বছর বাধ্যতামূলক কাজ করতে হবে সামরিক বাহিনীতে। নইলে কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করতে হবে। দ্বিতীয় কারণ হলো, ফ্রিডরিক পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতা। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জোয়ার তার ছোট পল্লী-শহর কার্লস্ট্যাডে পৌঁছায়নি। ফ্রিডরিকের বয়স যখন আট বছর, তখন তাঁর পিতার মৃত্যু ঘটে এমফিসিমা (ফুসফুসের ক্ষত) রোগে। রোগের প্রধান কারণ ছিল পারিবারিক আঙ্গুরের খামারে ব্যবহৃত কীটনাশক।
ফ্রিডরিকসহ ছয় সন্তানের বাবার কঠোর পরিশ্রম করতে হত নিজস্ব খামারে এক দরিদ্র কৃষক হিসেবে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বিষাক্ত কীটনাশক ফুসফুসে প্রবেশ করায় তাকে মরণঘাতি রোগটিতে পেয়ে বসে। পোকা মাকড় থেকে ফসল রক্ষায় অনেক সময় ফ্রিডরিককে রাতভর আঙ্গুরের পাতায় রঙ করতে হত কপার সালফেট মেখে। বাবার মৃত্যুর পর তার মাকে সংসার চালাতে হত প্রতিবেশীদের কাছে নিজের হাতে তৈরি রুটি বিক্রি করে।
১৪ বছর বয়সে ফ্রিডরিক জীবিকা নির্বাহের পেশা হিসেবে বেছে নিলেন নাপিতের কাজ। ফ্রাঙ্কেনথল নামে পাশের একটি ছোট শহরে একজন নাপিতের শিক্ষানবিশ হিসেবে যোগ দেন। সপ্তাহের সাত দিনই তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন। শিক্ষানবিশি শেষ করার পর ওই শহরে তার চাকরি জোটেনি। তাই ফিরে এসেছিলেন নিজের পল্লী-শহরে। দেখতে দেখতে তিনি ষোল বছরে পা দিলেন। তখন তাকে বাধ্যতামূলকভাবে সদ্য প্রতিষ্ঠিত জার্মান সাম্রাজ্যের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বিসমার্কের মতিগতি বোঝা ভার। কে জানে কখন কোন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন! অতীতে তাই করেছেন।
সেসময়ের ইউরোপের যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতিতে, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়াটা ছিল প্রাণের ঝুঁকি। যদি ফ্রিডরিক সেনাবাহিনীতে যোগ দিতেন, তখন যুদ্ধে যাওয়ার সম্ভাবনাই হত বেশি। হয়তো তার মৃত্যুও ঘটতে পারত। তাই ফ্রিডরিক দেশ ছেড়ে পালালেন। প্রায় একশ বছর পর ডনাল্ড ট্রাম্প পিতামহ ফ্রিডরিকের মতো দেশ ছেড়ে পালাননি। কিন্তু 'বোন স্পার' (হাড় বৃদ্ধিজনিত রোগ) এর ভুয়া অজুহাত দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া এড়াতে পারেন।
দাদা ফ্রিডরিকের তেমন টাকা পয়সা ছিল না। দরিদ্র নাপিত দেশ থেকেই হয়ে গেলেন লাপাত্তা। গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বিশাল সম্ভাবনার দেশ। সেখানে রয়েছে আর্থিক উন্নতির অনেক সুযোগ। ১৮৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের পাস করা 'হোমস্টেড আইন' অনুযায়ী দরখাস্ত দাখিলের জন্য সামান্য ফি এবং পাঁচ বছর জমিতে কাজ করার নিশ্চয়তার বিনিময়ে ১৬০ একর জমির মালিকানা পাওয়া যেত। অন্যদিকে, সেকালে জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে ফ্রিডরিকের মাতৃভূমি ব্যাভেরিয়ায় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী জমি মূলত সমভাবে ভাগ হত সন্তানদের মধ্যে। কাজেই কয়েক প্রজন্ম পার হতে না হতেই দেখা যেত যারা গ্রামে থেকে গেছেন, তাদের মালিকানায় জমির পরিমাণ অতি নগণ্য।
জার্মানির তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র তখন ছিল স্বর্গরাজ্য। সত্যি বলতে ফ্রিডরিকের পল্লী-শহর কার্লস্ট্যাডে তখন লোক ধরে রাখা ছিল এক নিদারুণ চ্যালেঞ্জ। সরকারি কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করত যেন নাগরিকরা এলাকা ত্যাগ না করে। কিন্তু অনেকেই অল্প সময়ের জন্য বাইরে যাওয়ার অজুহাত দিয়ে কেটে পড়ত অচেনা গন্তব্যে ভাগ্য উন্নয়নের অন্বেষণে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে।
১৮৮৫ সালের হেমন্তের এক রাতে আঙুরের শেষ ফসল তুলে ও গোলায় ভরেন ফ্রিডরিক। তারপর ত্যাগ করলেন তাঁর পল্লী-শহর কার্লস্ট্যাড যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে। রেখে গেলেন, বিধবা মায়ের জন্য একটি বিদায়ী চিরকূট এবং সামান্য অর্থ। সেই হেমন্তের পাতাঝরা রাতেই শুরু হল ফ্রিডরিকের স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে তীর্থযাত্রা। প্রথম যেতে হলো প্রায় সাড়ে তিন শ মাইল দূরে ব্রিমেন শহরে। উত্তর সাগর থেকে সাঁইত্রিশ মাইল উজানে ভেজার নদীর তীরে। ব্রিমেন তখন ইউরোপের অন্যতম বন্দর নগরী।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ফ্রিডরিকের সমুদ্র যাত্রা শুরু হলো এস এস আইডার নামে জার্মান সমুদ্রগামী এক জাহাজে। ক্ষেতমজুর দরিদ্র ফ্রিডরিকের স্থান হয়েছিল সবচেয়ে কম ভাড়ার জাহাজের স্টিয়ারিজে- অর্থাৎ জাহাজের সবচেয়ে নিচের ডেকে মালামাল রাখার স্টোরেজের কাছে। গাদাগাদি করা হয়েছিল ৫০০-রও বেশি যাত্রীকে। স্টিয়ারিজ যাত্রীদের জন্য জাহাজে ছিল না কোনও স্নানাগার। সামান্য খাবার ছিল বরাদ্দ কেবিন যাত্রীদের জন্য। অন্যান্য গরীব যাত্রীদের মত ফ্রিডরিক যে খাবারের রসদ নিয়ে জাহাজে উঠেছিলেন, সেটাই রান্না করে খেয়েছিলেন অনেক দিন ধরে। ব্রিমেন হতে নিউ ইয়র্কে পৌঁছাতে লাগতো দশ দিন। দশ দিন সমুদ্রযাত্রার পর আইডার জাহাজটি যখন নিউ ইয়র্ক বন্দরে নোঙর করত তখন এমন দুর্গন্ধ বের হত যে নিউ ইয়র্ক শহরের সেসময়ের এক ধনকুবের কর্নেলিয়াস ভ্যান্ডারবিল্ট শহর কর্তৃপক্ষকে স্যানিটারি বিধান লঙ্ঘনের অপরাধে অভিযোগ করেছিলেন ।
ফ্রিডরিকের নিউ ইয়র্কে পৌঁছার প্রায় পাঁচ বছর আগে ধনকুবের মারা যান। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য,বর্তমান বাজার দরে কর্নেলিয়াস ভ্যান্ডারবিল্টের সম্পদের পরিমাণ হবে ১৮৫ বিলিয়ন ডলার।
২০২০ সালে মার্কিন নির্বাচনে ধনকুবের ভ্যান্ডারবিল্টের চতুর্থ প্রজন্মের বংশধর সিএনএন-এর সাংবাদিক অ্যান্ডারসন কুপার এবং নাপিত ফ্রিডরিকের নাতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের খিস্তিখেউর পুরো বিশ্বের মানুষের মধ্যে হাসির খোরাক জুগিয়েছিল।
দুইজনেই পারিবারিকভাবে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা। ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে গো-হারা হারার পর ডনাল্ড ট্রাম নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি। নির্বাচনের দুই দিন পর অ্যান্ডারসন কুপার বলেছিলেন- "ট্রাম্প হলো এক এক থলথলে কচ্ছপ, উত্তম-মধ্যম প্রহারান্তে চিৎ হয়ে পড়ে আছে প্রখর সূর্যালোকে।"
নাপিত ফ্রিডরিককে নিউ ইয়র্ক বন্দরে স্বাগতম জানিয়েছিলেন তাঁর বোন ক্যাথরিন। তিনি দুই বছর আগে নিউ ইয়র্কে ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে আশ্রয় পেয়েছিলেন।
ইতিহাস খুব অদ্ভুত। অভিবাসী ফ্রিডরিকের নাতি ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন পদ্ধতির প্রতিটি ধাপে ধাপে বাধার সৃষ্টি করে অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। নিউ ইয়র্কে পৌঁছার পরপরই ফ্রিডরিক নাপিতের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সাহিত্য ও ললিতকলার নায়ক নাপিতের মত ভাগ্যবান ছিলেন না ফ্রিডরিক। পেশায় তার ছিল ছেঁদো কপাল। বাংলা সাহিত্যের অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিশুতোষ পুস্তক "কানকাটা রাজার দেশ" এর নাপিত একজন হিরো। কানকাটা রাজার সঙ্গী। চাকরির চিন্তা ছিল না। দিব্যি আরামে কেটেছে কাল।
ট্রাম্পের দাদা ফ্রিডরিকের জন্মের মাত্র তিন বছর আগে একজনকে 'নাপিত'কে মুখ্য চরিত্র করে ফরাসি সব্যসাচী লেখক, কারিগর, কূটনৈতিক বিপ্লবী পিয়ের অগাস্টিন বোমারশে তার ট্রিলজি 'ফিগারোর নাট্যগুচ্ছ' রচনা করেন। এ নাটকগুলোর ওপর ভিত্তি করে অস্ট্রিয়ার আমেদিঊস মোজার্ট এবং ইতালির জ্যাককোমো পুচিনি রচনা করেন কয়েকটি কালজয়ী অপেরা। মোজার্ট রচিত অপেরা 'দ্য ম্যারিজ অভ ফিগারো'-র নাপিত 'ফিগারো' কৃষকদের বিপ্লবে উত্তেজিত করে। উত্তরাধিকার সূত্রে অভিজাত শ্রেণির বিরুদ্ধে কাল্পনিক নাপিত 'ফিগারো'-র বক্তৃতায় রুষ্ট হয়েছিলেন 'হোলি রোমান সম্রাট', দ্বিতীয় জোসেফ। অনেক কাটছাঁটের পর ওই অপেরাটি পরিবেশিত হয়।
এই প্রবন্ধের সত্যিকারের নাপিত ফ্রিডরিক, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পিতামহ, কেবলই একজন নাপিত। কানকাটা রাজার নাপিত অথবা ইউরোপের সাড়া জাগানো হিরো নাপিত 'ফিগারো' নন। নোংরা দুর্গন্ধময় জাহাজ থেকে নেমে ফ্রিডরিক নিউ ইয়র্কে নাপিতের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ঘর পালানো নাপিত ফ্রিডরিক ছিলেন নীতিবিহীন দুঃসাহসী এক ফটকাবাজ।
নিউ ইয়র্কের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে তিনি ভাগ্য অন্বেষণে অ্যামেরিকার ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট পশ্চিমাঞ্চলে পাড়ি জমান। সেখানে তখন মাটি খুঁড়ে বের করা হচ্ছে সোনা আর সোনা। ফ্রিডরিক শুরু করলেন পরিবারবিচ্ছিন্ন সোনা সন্ধানীদের মদ, জুয়া, যৌনক্ষুধা নিবৃত্তের ব্যবসা। বনে গেলেন কোটিপতি।