নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে আগে প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করা। নতুন প্রজন্মের অপরাধ প্রবণতায় এই বন্ধনের ব্যত্যয় ঘটেছে।
Published : 06 Apr 2025, 05:01 PM
কিছুদিন আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটা সংবাদে চোখ আটকে যায়। থমকে যাই ফেইসবুক পোস্টে সামান্য ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট করায় বন্ধুর হাতে বন্ধু খুনের খবরে। সংবাদে জানা যায়, শেরপুরের নাঈম বাদশা নামে এক কিশোর তারই বাল্যবন্ধু সবুজ আহমেদের একটি ফেইসবুক পোস্টে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দেয়। এ নিয়ে নাঈমের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় সবুজ। এই ক্ষুব্ধতা থেকেই হত্যাকাণ্ড। সামান্য ফেইসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়া সহ্য করার মতো সহনশীলতা আমাদের নতুন প্রজন্মের নেই। আমাদের সমাজের শিশু-কিশোররা ঠিক কবে এমন অসহিষ্ণু হয়ে উঠল, তা অনুধাবন করতে পারছি না। তবে অনুমান করছি, এই সমাজ আজও শিশুবান্ধব হয়ে ওঠেনি। শিশুদের জন্য বাসযোগ্য দেশ ও দেশের পরিবেশ নেই বলা যায়। সত্যিকার অর্থেই এদেশ যদি শিশুদের নিয়ে ভাবত তাহলে এমন কিশোর অপরাধ সংঘটিত হতো না। শিশু-কিশোররা জীবনঘাতি অপরাধে জড়িয়ে পড়ত না।
২০১৩ সালের ১৪ অগাস্ট। ঢাকার চামেলীবাগের নিজ বাসায় খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা (পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মাহফুজুর রহমান এবং তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান। হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর তাদের তরুণী কন্যা ঐশী রহমান পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করে নিজেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেন। ওই ঘটনা সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। মিডিয়ার বদৌলতে এমন দু-একটা ঘটনা আমাদের গোচরে এলে আমরা তা নিয়ে চিন্তিত হই, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করি। কিছুদিন হইচই হয়। এরপর ভিন্ন কোনো ইস্যু এসে আমাদের অন্য দিকে নিয়ে যায়। আমরা ভুলে যাই পূর্ববর্তী ঘটনা। ফলে সমস্যা সমাধানের ভাবনার সুযোগ আমাদের আর হয়ে ওঠে না। গত কয়েক দশক থেকে এভাবেই চলছে সমাজ ও রাষ্ট্র। স্রোতে গা ভাসিয়ে ছুটেছি আমরা। কোনো সমস্যার টেকসই সমাধানের উদ্যোগ উল্লেখযোগ্যভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে না। রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার থেকে শিক্ষাঙ্গন সবখানেই এক ধরনের হেলাফেলার দৃশ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিধায় সামাজিক স্তরে নানা ধরনের বিরূপ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়াতেও বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকার পর থেকেই দেশে কিশোর অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় বলে পরিসংখ্যানে পাওয়া যায়। ওই সময় থেকে জুলাই অভ্যুত্থান এবং জুলাই পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে বেশ কয়েক মাস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ফলে কিশোরেরা এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে, তাদের নিয়ন্ত্রণ খানিকটা অসম্ভব হয়ে গেছে। রাজধানী শহর ঢাকা ও এর আশপাশসহ দেশের অন্যান্য সকল শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। আধিপত্য বিস্তার ও ভয়ের সংস্কৃতি তৈরিতে তারা ভয়ঙ্কর সব অপরাধ সংঘটিত করছে। কিছুদিন আগেই আমরা ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলেশ্বরী নদীতে ট্রলারে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দেশি অস্ত্র উঁচিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিসহ আতংক সৃষ্টির ঘটনা দেখেছি। এটা বর্তমান বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেরই চিত্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খানিকটা নাস্তানুবাদই। ঢাকাতেই কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গিয়ে পুলিশকে মারপিট ও লুটের শিকার হতে হয়েছে, এমন চিত্রও আমরা দেখেছি। এমন পরিস্থিতিতে কিশোরদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীগুলোকে আরও তৎপর হলেই হবে না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশের পাড়া-মহল্লায় অপরাধ নিরুৎসাহে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করাও প্রয়োজন।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছর থেকে কিশোর অপরাধ যেভাবে আলোচিত হচ্ছে, তার একটা ইতি টানা আবশ্যক৷ আমরা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত যেসব ঘটনা দেখি, সেসব ঘটনার বর্ণনায় কিশোর অপরাধের ধরন-ধারণ দেখলে আমাদের গা শুধু শিউরে ওঠে না, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ চিন্তা করলে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি৷ বর্তমানে কিশোর অপরাধের পরিধি অন্যান্য অপরাধের মতো যেভাবে বিস্তার লাভ করছে, তা আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে— এ নিয়ে সন্দেহ পোষণের কোনো অবকাশ নেই৷ বিশেষত তথ্য-প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঠিক ব্যবহার না থাকায়, কিশোর অপরাধ দিনকে দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে৷ এই বাস্তবতাগুলো সামনে রেখে শিশু-কিশোরদের নিয়ে আমাদের সত্যিকার অর্থেই ভাবনা-চিন্তা করা প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে গিয়ে নিজেদেরকে আয়নার সামনে দাঁড় করালে বিদ্যমান সমাজ ও রাষ্ট্রের যে চিত্র আমরা দেখতে পাই, তা বড়ই বিদঘুটে ও ক্ষতবিক্ষত৷
এমন পরিস্থিতি জিইয়ে রেখে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে আগে প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করা। নতুন প্রজন্মের অপরাধ প্রবণতায় এই বন্ধনের ব্যত্যয় ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরূপ প্রভাব পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার সম্পর্ককে ভঙ্গুর করে তুলেছে। পরিবারের কিশোর সদস্যদের ভুল পথে পরিচালিত হওয়ার দরুন দুর্বল হচ্ছে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন, বাড়ছে মানুষে মানুষে সম্পর্কের দূরত্ব। অবক্ষয় হচ্ছে সামাজিক অনুশাসন ও মূল্যবোধের। এতে বিনষ্ট হচ্ছে সামাজিক ভারসাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ। কমে যাচ্ছে মানুষের মাঝে আন্তরিকতা, নবীন-প্রবীণে বাড়ছে সম্পর্কের তিক্ততা। যা সমাজে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে।
নতুন প্রজন্মের হাত দিয়ে আমরা যে সুশৃঙ্খল, বৈষম্যহীন, বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশ গঠন করতে চাচ্ছি, তার জন্য এই প্রজন্মকে উপযোগী করে গড়ে তোলার মিশন এখনই হাতে নিতে হবে। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন শিশু-কিশোরদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা। তারা যেন মাদক ও অপরাধ সংশ্লিষ্ট হয়ে না ওঠে, এজন্য তাদের পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, খেলাধুলার আয়োজন, সুস্থ বিনোদনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রজন্মকে মোবাইল ও ইন্টারনেটের অপব্যবহার থেকে মুক্ত করতে তথ্য-প্রযুক্তিকে শিশুবান্ধব প্রক্রিয়ায় আনতে হবে।
বিশেষত শিশু-কিশোররা তাদের শৈশব থেকেই যেভাবে মোবাইল গেমিংয়ে আসক্ত হয়ে পড়ে, তা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের। এসব গেমিং শুধু শিশুর চিন্তা ও সৃজনশীল ক্ষমতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, তাদের মনস্তত্ত্বে নৈরাজ্য ও সহিংস মনোভাবেরও উদগীরণ ঘটায়। শিশু-কিশোররা সচরাচর যেসব গেম খেলে, তার সিংহভাগই মরণঘাতী অস্ত্রযুদ্ধ, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের উপকরণে ভরপুর। তারা গেমিংয়ের মধ্য দিয়ে শুরুর দিকে ভার্চুয়াল সহিংসতায় লিপ্ত থাকে এবং পরবর্তীতে তা বাস্তব জগতে অনুরূপ ক্রিয়া সংগঠনে তাদের মনোজগতে সম্মোহন সৃষ্টি করে। ফলস্বরূপ তারা দল উপদলে বিভক্ত হয়ে কিশোর গ্যাং তৈরি করে এবং গ্যাং কালচারের মধ্য দিয়ে সমাজকে নিজেদের জানান দেয়। বিপথগামী মনস্তত্ত্ব গঠনে বিভিন্ন গেম, অনলাইন প্লাটফর্মের সহিংস ও ক্রিমিনালাইজড কন্টেন্ট, নারী ও প্রগতিবিরোধী বক্তব্য তাদের চিন্তাকে সমাজ বিধ্বংসী ধারায় প্রভাবিত করে।
বর্তমানে প্রযুক্তির এই অপব্যবহারে কিশোর অপরাধ আরও জটিল আকার ধারণ করছে। এটা গ্যাং-কালচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রযুক্তির বদৌলতে আর্থিক ও সন্ত্রাসমূলক নানা অপরাধে বিস্তৃত হচ্ছে। তারা মাদকদ্রব্য ব্যবহার ও বিপণনের মতো কাজেও নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে৷ প্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহার, অস্থিতিশীল রাজনীতি, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে এসব অপকর্ম বৃহৎ পরিসরে পৌঁছে যাচ্ছে৷ ফেইসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও টেলিগ্রামের মধ্যে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন, অশ্লীল ও আধিপত্যবাদী নানা ভিডিও ক্লিপ বা কন্টেন্ট তাদের অপরাধকে উস্কে দিচ্ছে। এতে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়ে থেকে যে কোনো বয়সের ব্যক্তিই সহজেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত হতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন৷ এ বিষয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের নীতিমালা গ্রহণ করেছে কিনা, আমরা জানি না৷
বিভিন্ন অনলাইন মেসেজ অ্যাপ যেভাবে মাদক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা সুস্থ প্রজন্ম গঠনের জন্য অশনিসংকেত। একই সঙ্গে যৌন উত্তেজক, নারী বিদ্বেষী ও নারীকে যৌনপণ্য ভাবাপন্ন প্রচার প্রচারণাও ফেইসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে কিশোর-তরুণদের মাঝে ধর্ষণকামীতাকে জাগিয়ে তুলছে। বিধায়, কিশোর-তরুণরা ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধেও সম্পৃক্ত হচ্ছে। ফলে প্রযুক্তির ব্যবহার কেবল নিশ্চিত করে বসে থাকলেই হবে না, এর জন্য মনিটরিং সেল গঠন করাও জরুরি। কোন বয়সের মানুষ কোন ধরনের প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবহার করছে, তারও একটি নির্দেশনা ও নজরদারি থাকা প্রয়োজন বলে মনে করি।
বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের অনেকেই এমনসব দামি মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন, যা বেমানান তো বটেই, সেটা তার জরুরি প্রয়োজনও নয়৷ পরিবারই কিশোর-কিশোরীদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড কিংবা স্মার্টফোন তুলে দিচ্ছে, কিন্তু ফোনে তার কার্যক্রম কী তা জানার চেষ্টা করছে না। ছেলে-মেয়ে ফোনে কী ব্যবহার করছে, তারও খোঁজ রাখছেন না। অভিভাবকের এমন দায়িত্বহীনতাও তার সন্তানকে অপরাধ জগতে পৌঁছে দিচ্ছে। আজকের প্রজন্ম যেভাবে মোবাইলে বুঁদ হয়ে গেছে এবং মোবাইল থেকে বেরিয়ে যেভাবে অপরাধ জগতে পা রাখছে, তা ভবিষ্যৎ জাতি গঠনে আমাদের সঙ্কটের মুখে ফেলে দেবে। ইতোমধ্যে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বেশ ভালোভাবেই আমরা ভবিষ্যৎ আঁচ করতে পাচ্ছি। আমাদের সমাজে যেসব ঘটনা কখনো কল্পনা করা যেত না, আজকাল তাই ঘটছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক লাঞ্ছিত হচ্ছেন, নারীদের উত্যক্ত করা হচ্ছে, ঘটছে ধর্ষণ।নৈতিকতার স্খলনে যা যা হবার, তার সবটাই হচ্ছে। এসব নিয়ে আমাদের এখনই ফলপ্রসূ ভাবনা ভাবতে হবে।
কিশোর-তরুণদের দ্বারা ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে পরিবার, সমাজের দায় রয়েছে। এমনকি রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থারও নানা সংযোগ রয়েছে এর সঙ্গে৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী৷ কিশোর গ্যাং পরিচালনায় রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিবর্গসহ নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টার অভিযোগও নতুন নয়। সুতরাং এককভাবে কিশোর অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব নয়। আমাদের প্রজন্ম এসবের মধ্য দিয়ে যেভাবে নিশ্চিত এক ধ্বংসপুরীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে করে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ জরুরি। পরিবার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গসহ আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই আত্মবিধ্বংসী প্রজন্মকে আলোর দিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্মপরিকল্পনা ও কর্ম উদ্যোগ। শৈশব থেকেই আমরা শিশু-কিশোরদের নৈতিক, মানবিক বিকাশে সমাজহিতৈষী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত করে তুলতে পারি। ক্রীড়া, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে তাদের কুপ্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ। এজন্য দরকার রাষ্ট্র ও সমাজের যৌথ উদ্যোগ।
সরকার ও জনসমাজ যদি এক হয়ে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে উদ্যমী হয়, তবেই এই সঙ্কট উত্তরণ সম্ভব। অন্যথায় আমাদের সামাজিক স্তরে ক্রমশই ভেঙে পড়বে এবং আমরা সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনগুলো থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। ইতোমধ্যে কিশোর অপরাধ আমাদের সামাজিক বেষ্টনীতে তীব্র আঘাত শুরু করে দিয়েছে। এটাকে এখানেই থামিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।