রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের অন্দর মহলে

অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্কটকে আরও গভীর করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান, কার্যত তাই ঘটছে।

>>রয়টার্স
Published : 7 Sept 2017, 05:18 PM
Updated : 7 Sept 2017, 07:00 PM

গত বছর অক্টোবরে রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার পর সেনা অভিযানের প্রেক্ষাপটে গঠিত কফি আনান নেতৃত্বাধীন ওই কমিশন গত ২৪ অগাস্ট তাদের তদন্ত শেষ করে।

প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশের পর সেদিন মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে রাত ৮টার দিকে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের নেতা আতা উল্লাহ অনুসারীদের কাছে বার্তা পাঠান প্রত্যন্ত মায়ু পার্বত্য এলাকায় অগ্রসর হতে। অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য দা-কুড়ালের মতো অস্ত্র ধরতে বলেন তিনি।

মধ্যরাতের অল্প কিছুক্ষণ পর ছুরি, লাঠি, ছোট অস্ত্র ও হাতবোমা নিয়ে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা।   

“২০০ থেকে ৩০০ মানুষ গেলে ৫০ জন মারা যাবে। আল্লাহর ইচ্ছায় বাকি দেড়শ জন তো ছুরি দিয়ে তাদের হত্যা করতে পারবে,” অন্য এক বার্তায় অনুসারীদের বলেন আতা উল্লাহ। মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ওই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

আতা উল্লাহর নেতৃত্বাধীন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা এআরএসএ- এখন পর্যন্ত যতগুলো হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা।

গত অক্টোবরে সীমান্তবর্তী তিনটি পুলিশ পোস্টে হামলার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে এই গোষ্ঠী। সে সময় তারা প্রায় ৪০০ যোদ্ধাকে ব্যবহার করেছিল বলে মিয়ানমার সরকারের তথ্য। এবার হামলাকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ছিল বলে ধারণা সেনা বাহিনীর।

তাদের এই পরিসরে হামলার সামর্থ্য অনেক রোহিঙ্গা তরুণের এই গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।

ডজনের বেশি রোহিঙ্গা ও রাখাইনের গ্রামবাসী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত অক্টোবরে সেনা অভিযানে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া এবং বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা ও ধর্ষণের পর এআরএসএ’র প্রতি ঝুঁকছে তরুণরা।

জাতিগত সংঘাতপূর্ণ রাখাইন রাজ্যের এই সঙ্কটই মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, এই সমস্যা মোকাবেলায় তার ভূমিকা এরইমধ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই নেত্রীর সাবেক পশ্চিমা সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের ওপর এই নিপীড়ন চলতে থাকলে মানবিক বিপর্যয় ও আঞ্চলিক অস্থিরতা দেখা দেবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

রোহিঙ্গা নেতৃবৃন্দ ও অনেক বিশ্লেষক বলছেন, সংখ্যালঘু এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাঘবে সু চির ব্যর্থতা সন্ত্রাসবাদের প্রতি তাদের সমর্থন বাড়াচ্ছে।

ব্যাপক পাল্টা আক্রমণ

এআরএসএ অনেক গ্রামজুড়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, যা তাদের বড় ধরনের হামলা চালাতে সক্ষম করে তুলেছে।

মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের এই দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মুসলিম নাগরিকদের হত্যা ও রোহিঙ্গা গ্রামে অগ্নিসংযোগের অভিযোগও করছে তারা।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি বাহিনী ও সংস্থাকে কেউ যাতে সহযোগিতা করতে না পারে সেজন্য এগুলো করছে এআরএসএস। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তারা।

সেনা দমন অভিযানের মুখে রাখাইন থেকে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা

তাদের সর্বশেষ হামলায় পর ব্যাপক পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়েছে, যাতে এরইমধ্যে প্রায় ৪০০ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে বলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভাষ্য। সহিংসতায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ১৩ সদস্য মারা পড়েছে।

সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে আক্রমণ করছে এবং বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে বলে রোহিঙ্গা গ্রামবাসী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে।

অন্যদিকে মিয়ানমার সরকার বলছে, তারা আইনসিদ্ধ সন্ত্রাস দমন অভিযান চালাচ্ছে, যেখানে সেনা সদস্যদের বেসরামরিক নাগরিকদের ক্ষতি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ অগাস্ট থেকে এখন পর্যন্ত দেড় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে, যা মানবিক সঙ্কটের ঝুঁকি তৈরি করেছে। মিয়ানমারের ভিতরে ২৬ হাজার ৭৫০ জন অসমুসলিমও বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মিয়্নামারে ১০ লাখের বেশি মুসলিম রোহিঙ্গা থাকে রাখাইন প্রদেশে; ১৪ হাজার বর্গমাইলের এই রাজ্যে তাদের জনসংখ্যার হার ৪২ শতাংশ। রাখাইনের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।

‘এভাবে মানুষ বাঁচে না’

গত মার্চে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আতা উল্লাহ এই সংগঠন গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট হিসেবে ২০১২ সালে রাখাইনে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও মুসলিমদের জাতিগত দাঙ্গার কথা বলেন।  ওই সংঘাতে প্রায় ২০০ মানুষ নিহত এবং এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়।

“আমরা রাতে বাতি নেভাতে পারি না। দিনের বেলায় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারি না,” রোহিঙ্গাদের চলাচলে বিধিনিষেধের বিষয়ে বলেছিলেন আতা উল্লাহ।

“সব জায়গায় তল্লাশি চৌকি: ঢোকার সব পথ ও বেরোনোর সব পথে। এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না।”

এআরএসএ নেতা আতা উল্লাহ

উত্তর রাখাইনের একজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, কয়েক দশকের সামরিক শাসনের পর সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের অন্যান্য অংশের বাসিন্দারা স্বাধীনতা ভোগ করলেও সংখ্যালঘু মুসলিমরা আরও প্রান্তিক হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত বছর সেনা অভিযানের পর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি সমর্থন বেড়েছে।

“নিরাপত্তা বাহিনী যখন আমাদের গ্রামে এল, গ্রামের সবাই মাফ চাইল এবং ঘরে আগুন না দেওয়ার অনুরোধ করল, কিন্তু যারা ওই অনুরোধ করল তাদের গুলি করল তারা।”

“মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারণ তাদের সামনে তাদের ছেলেদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের মেয়ে, বোনদের ধর্ষণ  করা হয়েছে- এগুলো ভুলে তারা কীভাবে বাঁচবে? তাই তারা এর বিরুদ্ধে লড়তে চায়, তাতে তারা মরুক বা বাঁচুক।”

গত বছরের ওই অভিযান নিয়ে দেশটির সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মিন্ট সোয়ের নেতৃত্বে মিয়ানমার সরকারের তদন্ত কমিটি গেল মাসে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে।

বিদ্রোহীদের নেটওয়ার্ক

গ্রামবাসী ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এআরএসএ গত অক্টোবর থেকে অনেক গ্রামে অনুসারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সেখানে স্থানীয় কর্মীরা অন্যদের দলে ভেড়াচ্ছে।

“কমিউনিটির লোকজন অন্যদের সঙ্গে নিজেদের আবেগ-অনুভুতি বিনিময় করেন, তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলেন, অন্যান্য এলাকার বন্ধু বা সহযোগীদের কাছে নিজেদের কথা বলেন-এবং তারপর বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন,” বলেন স্থানীয় এক রোহিঙ্গা নেতা।

উত্তর বুথিডাংয়ের কী হ্নোকে থি গ্রামের মুরুব্বি রোহি মুল্লারাহ বলেন, এআরএসএ’র নেতারা নিয়মিত তাদের অনুসারীদের পাঠানোর পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ ও উইচ্যাটের মতো অ্যাপগুলোর মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য লড়তে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করেন। এতে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতির এলাকাগুলোতে কর্মী সংগ্রহে গিয়ে ধরা পড়ার ঝুঁকি এড়িয়ে লোকজনকে দলে ভেড়ানোর কাজ সারতে পারেন তারা।

“তারা সাধারণত গ্রামবাসীর মোবাইলে বার্তা পাঠায়। তারা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়ায় না।”

গত বছর অক্টোবরে সেনা অভিযানে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় অনেক রোহিঙ্গার বাড়ি-ঘর, এরপর থেকে বিদ্রোহীদের প্রতি তরুণদের সমর্থন বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য

তার গ্রাম এসবের বাইরে দাবি করে রুহি বলেন, গ্রামের সামনে একটি সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে, যাতে কেউ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীতে গ্রামের কাউকে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে গ্রামবাসী হামলা করবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অনেক রোহিঙ্গা নেতাই দশকের পর দশক সহিংসতা পরিহার করে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে অবস্থান জানিয়ে আসছে।

এখন এআরএসএ বেশ প্রভাব বিস্তার (বিশেষত তরুণদের মধ্যে) করলেও নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হননি এবং অনেক রোহিঙ্গা মুরুব্বি ওই গোষ্ঠীর সহিংস পন্থার নিন্দা জানাচ্ছে।

বিদ্রোহীদের সন্ত্রাস

রাখাইনে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারি বাহিনী ও সংস্থাকে তথ্য দাতা এবং অনেক গ্রাম প্রধানকে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য যাওয়া ঠেকাতে বিদ্রোহীরা হত্যার কৌশল নিয়েছে।

এ বিষয়ে রাখাইনের পুলিশ প্রধান সেইন উইন বলেন, “আতঙ্ক ছড়িয়ে এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে তারা সরকারের সঙ্গে স্থানীয়দের যোগাযোগ বন্ধ করেছে।

রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে চলমান অভিযানে সরাসরি অংশগ্রহণকারী একজন সেনা কর্মকর্তাও বলছেন, এআরএসএ’র পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া এখন অনেক বেশি কঠিন।

বিদ্রোহীদের এই কৌশলের কারণে অনেক এলাকায় ‘সরকারি কর্মকর্তারা ভয়ে থাকতে চাচ্ছে না বলে সরকারি কর্মকৌশল আটকে যাচ্ছে’ বলে জানান ওই সেনা কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়ে বুথিডাংয়ের উত্তরাঞ্চলের একজন গ্রাম প্রধান বলেন, বিদ্রোহীরা তাকে বেশ কয়েকবার ফোন করে গ্রামের তরুণদের তাদের প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানোর জন্য চাপ দিয়েছে, তবে তিনি তাদের কথা শোনেননি।

“আমি নিরাপদে থাকার চেষ্টা করছি এবং মাঝে মাঝে আমাকে থানায় ও স্থানীয় প্রশাসকদের ঘরে ঘুমাতে হয়েছে,” বলেন তিনি।

মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চির হাতে ক্ষমতা এলেও রাখাইনের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি, এ হতাশাও বিদ্রোহীদের শক্তিশালী করছে

হামলার আগে ইঙ্গিত পেয়েছিল সেনাবাহিনী

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্রোহীরা তথ্য আসার পথ আটকালেও ২৪ অগাস্টের হামলার আগে একজন ‘ইনফরমারের’ কাছ থেকে ইঙ্গিত পেয়েছিলেন তারা। আর সে কারণেই ওই হামলার মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হওয়া থেকে রক্ষা করা গেছে।

ওই দিন সন্ধ্যায় আতা উল্লাহর অনুসারীরা জঙ্গলে যাত্রা করার প্রায় এক ঘণ্টা পর রোহিঙ্গা ইনফরমারের কাছ থেকে আক্রমণ আসছে বলে সঙ্কেত পায় সেনাবাহিনী।

রাত ৯টার ওই বার্তায় একাধিক হামলা আসন্ন বলা হলেও কোথায় কোথায় হামলা হবে তা বলা হয়নি।

“ওই সতর্ক বার্তাই নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যথেষ্ট ছিল। তার ভিত্তিতে কিছু সৈন্যকে বড় স্টেশনগুলোতে নিয়ে আসা হয় এবং কৌশলগত জায়গাগুলোতে সেনা মোতায়েন করা হয়, যাতে সরকারি পক্ষে অনেক প্রাণ বেঁচেছে,” বলেন ওই সেনা কর্মকর্তা।

বিদ্রোহীরা রাত ১টার দিকে হামলা শুরু করে এবং তা চলে প্রায় সূর্যোদয় পর্যন্ত। অধিকাংশ হামলা হয় মংডু এলাকায়, যেখানে অক্টোবরেও হামলা চালিয়েছিল এই গোষ্ঠী।

এবার যেসব জায়গায় হামলা হয়েছে তার উত্তর ও দক্ষিণের পোস্টের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

“এত বড় এলাকা ধরে তারা হামলা চালানোয় আমরা বিস্মিত হয়েছি-এটা পুরো এলাকা নাড়িয়ে দিয়েছিল,” বলেন ওই সেনা সদস্য।